স্বপ্নবাজ
প্রতিটা দেশেই রাজনৈতিক পট-পরিবর্তন হয়, গণতন্ত্র চর্চার একটা অংশই এটা। আর আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর ক্ষেত্রে এগিয়ে চিন্তা শুধু নয়, অনেকটাই এগিয়ে চিন্তা করা উচিত বর্তমানের প্রতিযোগীতার প্রতিকূল বিশ্বে টিকে থাকতে হলে। সেক্ষেত্রে নতুন চিন্তার নতুন মানুষ আসবে, আরো অগ্রসরধর্মী করবে নিজেদেরকে যেন বর্তমানের পিচ্ছিল সময়ের পিচ্ছিলতায় পা না ভেঙ্গে যায়, এমনটাই প্রত্যাশা ছিল সবার অনেক ঝুটঝামেলা পেরিয়ে ক্ষমতায় আসা বর্তমান দলটার কাছে। তবে আপাতভাবে কিছুটা হলেও ব্যর্থ এ সরকার প্রত্যাশাপূরণে।
ক্ষমতার হাতবদলের কিছুদিন যেতে না যেতেই পিলখানার ঘটনা ঘটলো।
পিলখানার ব্যাপারটা সাধারনের কাছে ধোয়াটেই রেখে দিয়েছে সরকার, ইদানিং তাদের কথাবার্তায় মনে হয়না যে এটা নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যাথা আছে, অনেকটাই শীতল হয়ে গিয়েছে ব্যাপারটা। কিভাবে ঐ অস্ত্রবোঝাই গাড়ী এলো, কারা ছিলো নেতৃত্বে, কিভাবে এন এস আই, ডি জি এফ আই, সবগুলো ইন্টেলিজেন্স এজেন্সী ঘুমিয়ে থাকলো, কারা ছিলো অনেকদিনের প্ল্যানে ঘটানো এই হত্যার পিছনের হন্তারা, বেমালুম চেপে যাচ্ছে সরকার নির্লজ্জের মতো।
বিশাল বিশাল বুলির ব্যাপারটা পুরনোই, ১০ টাকা চাল, ফ্রি সার, এগুলো এখনো পত্রিকার পাতায় জ্বলজ্বল করছে, যদিও এটা সবাই জানে যে ওগুলো বলার জন্যই বলা আমাদের রাজনীতিবীদদের কাছে। বাজারে জিনিসপত্রের দাম দেখলে মনের সব শখ দমকা হাওয়ার মতো উড়ে যায়। দু'দিন আগে বাজারে গিয়েছিলাম ভুল করে বোধহয়, কাঁচা মরিচে ঝাল থাকুক আর না থাকুক, দামে প্রচন্ড ঝাল যে, সেটা টের পেলাম ভালো করেই, মাত্র (!) ১৬০ টাকা কেজি।
সেদিন অন্য আর যা কিছুর দামই জানতে চাইলাম,হোঁচট খেলাম সবগুলোতেই।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দখলের এতো কি প্রয়োজন, সেটা আসলে বোঝাটা খুব কঠিন। আরো বেশী কঠিন এটা বোঝা যে নিজেদের মধ্যে মারামারিটা কেন! প্রায় প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা কিন্তূ এই অস্থিরতা কেন! এখানেও ক্ষমাতার প্রসঙ্গটা চলে আসছে। দীর্ঘদিন ধরে নেতৃত্বের বাইরে থাকা ছাত্রনেতাদের কেন যেন তর সইছে না, ক্যাম্পাসটাকে যেন ইজারা নিয়েছে ওরা ভোটের পরদিনই। বাবা - মায়েরা সারাক্ষন এভাবে টেনশনে থাকলে হাইপারটেনশনের রোগী নির্ঘাত বাড়ছে ক্রমান্বয়ে।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে দেশের, দেশের বাইরের, সব বিষেশজ্ঞ মহলই বলছেন যে এটা হলে আমাদের পরিবেশ, প্রাকৃতিক ভারসাম্য মারাত্বক হুমকির মুখে পড়বে তবে সরকারী মহলের চিন্তায়, কথায় সেটা মনে হচ্ছে না। এমনকি সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে ভারতীয় হাইকমিশনার পিনাক রন্জন চক্রবর্তী স্বয়ং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা: দিপুমনির সামনেই এদেশের বিষেশজ্ঞদেরকে নিয়ে কটুক্তি করেন এবং কি এক অজানা কারনে এখানে নীরব থাকেন মন্ত্রী। আওয়ামী লীগের চিরকালীন ভারতপ্রীতিতেই হয়তো ব্যাপারটাকে মশকরা ভেবে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি!
ক'দিন আগে ভয়াবহ ঘুর্নিঝড় আইলার প্রকোপে তছনছ হয়ে গিয়েছে উপকূলবর্তী বেশকিছু এলাকা। গিয়েছিলাম কিছু এলাকায়, এতো অসহায় জীবনযাপন মানুষের, দূর্বিসহ। সরকার থেকে বতোই বলা হচ্ছে ত্রান গিয়েছে, ওদের হাতে কোন এক অজ্ঞাত কারনে সেগুলো পৌছায়নি!
আমরাই আসলে দোষী সব ব্যাপারেই।
আমরা এখনো মানুষের চেয়ে মার্কার মূল্যায়ন করতেই অভ্যস্ত, আর প্রতিবারই তাদের গলিত কথায় গলে নষ্ট হই, হৈ হৈ করে বসিয়ে দেই মাথার উপর। আর তারাও ইচ্ছেমতো আমাদের মাথার উপর ফুটবল, ভলিবল যা ইচ্ছে খেলেন। আপনারা খেলুন, কোন অভিযোগ নেই তবে মাথাগুলোকে বাঁচিয়ে খেলবেন তো পরবর্তী সময়ের জন্য। পাঁচবছর পর তো আবার দরকার হবে এই মাথাগুলোর।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।