সমস্যাটা শুরু হয়েছে রোজা আসার পর। রাতের বেলা ঘুমাতে হচ্ছে অনেকটা জোর করে। আমার আবার অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকার অভ্যাস, কিন্তু রোজার সময় যেহেতু সেহরীতে উঠতে হয় তারপর ঘুমাতে ঘুমাতে আরেকটু সময় চলে যায় তো সমস্যাটা হয় সকাল বেলা উঠতে- কারণ একটাই অফিস।
রাত বারোটার দিকে শুয়ে পড়লেও মোটামুটি চেষ্টা করে ঘুমানো যায় কিন্তু সেহরীর পর ঘুমাতে গেলেই শুরু হয় বিপদ। কোনভাবেই ঘুম আসেনা।
এদিকে রাত শেষ হয়ে যাচ্ছে একটু পরেই উঠতে হবে। আর এখন একটু না ঘুমালে অফিসে গিয়ে ঘুমঘুম ভাব চলে আসে। তো ঘুমাতে হবেই যে করেই হোক। কিন্তু ঘুম এমন একটা জিনিস যে এটা জোর করে হয়না। সময় হলে ব্যাটা এমনিতেই আসবে -সেরকম একটা ব্যাপার।
ঘুম নিয়ে কিছু কথা বলতে চাই। আমাদের অনেকের কাছেই ঘুম একটা যন্ত্রনার বিষয়। আমার পরিচিত এক আতœীয় আছেন। তার ঘুমের খুব সমস্যা। সামান্য আলো হলেও তার ঘুম আসেনা।
তার রুম হতে হয় নিছিদ্র অন্ধকার। তার আরেকটা প্রবলেম হচ্ছে ঘুমানোর সময় সামান্য শব্দেও তার ঘুম ভেঙে যায়। আর আশেপাশে তো কন্টিনিউয়াস শব্দ হচ্ছেই। তাই তার ঘুমটাও ঠিকমতো হয়না।
ঘুম খুব পাতলাও ভালো না আবার খুব গাঢ়ও ভালো না।
কিন্তু গাঢ় ঘুমের একটা সুবিধে আছে, সেটা হলো সাউন্ড স্লিপ হলে ব্যাটারী পুরোপুরি চার্জ হয়ে যায়, তাই সারাদিনে আর ঘুম পায়না। আমার ক্ষেত্রে আমি তাই তো দেখি।
ঘুমের কথা বলছিলাম। ঘুম না আসলে কি করবেন?
ঘুম আনা টাফ। তবে মেডিটেশনের মাধ্যমে কিছু উপকার পাওয়া যায় এই ক্ষেত্রে।
কি কি উপকার? প্রথমটা হতে পারে আপনি শান্তিমতো ঘুমাতে পারবেন। যখন দরকার তখনই ঘুমাতে পারবেন। আপনি হয়তো ঘুমাবেন, কিন্তু সময় খুব অল্প, আপনি নিজেকে প্রগ্রাম করে ঘুমালে অল্প সময়ের ঘুমটাই মনে হবে লম্বা সময় ধরে ঘুমিয়েছেন। আর কি হতে পারে? আপনি স্বপ্ন মনে রাখতে পারবেন। স্বপ্নের মাধ্যমে আপনার সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।
অনেক অনেক কিছুই সম্ভব মেডিটেশনের মাধ্যমে।
আমি আজ শুধু ঘুম আনা নিয়ে একটা উপায় বলি, দেখেন আপনাদের উপকারে লাগে কিনা। যে কেউ এটা থেকে উপকার পেতে পারেন।
শুয়ে চোখ বন্ধ করলেন। ঘুম আসছে না।
কল্পনা করেন একটা কালো বোর্ড, আপনার হাতে চক আর ডাস্টার। ব্যাপারটা এমন হতে পারে, ধরুন আপনার অফিস টাইম শেষ, চলে যাবেন এই সময় বস যদি আরেকটা কাজ ধরিয়ে দেয় তাহলে কেমন লাগে? চরম বিরক্তি লাগে। কিন্তু বিরক্তি নিয়েই কাজটা করতে হয়।
সেরকম ভাবেই চিন্তা করুন। খুব বিরক্ত লাগছে আপনার এখন।
একটা সার্কেল আঁকুন। তার মাঝখানে একটা ক্রস দিন। অঙ্ক ভুল হলে স্যার যেটা দেয় সেরকম। তারপর সার্কেলের বাইরে গোটাগোটা করে লিখুন ডিপার, ইংরেজিতে।
এবার ক্রসটা মুছে ফেলুন আস্তে আস্তে, বেটার হচ্ছে ডাস্টারটা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মুছুন।
খুব সাবধান কিন্তু, কোনভাবেই যেন বাইরের সার্কেলে যেন টাচ না লাগে। মুছা হয়ে গেলে, লিখুন ১০০। তারপর যে শব্দটা লিখেছিলেন ডিপার তারউপর আস্তে আস্তে আবার লিখুন ডিপার। লেখা শেষ হলে বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে বলুন, কি জঘন্য কাজ একটা। এর চেয়ে ঘুমিয়ে যাওয়া অনেক অনেক ভালো।
তারপর ১০০ মুছে ফেলুন আস্তে আস্তে লিখুন ৯৯ তারপর আবার ডিপার শব্দের উপর হাত ঘুরান। এভাবে লিখতে থাকুন, আর মুছতে থাকুন আর বিরক্ত হতে থাকুন। একটা সময় দেখবেন, শেষবার কি লিখেছিলেন মনে করতে পারছেন না। আপনার ভাবনাগুলো কেমন যেন এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। মানে হচ্ছে আপনার ঘুম আসছে।
কি লিখেছিলেন শেষবার মনে করতে না পারলেও সমস্যা নেই। কাছাকাছি আরেকটা সংখ্যা ধরে আবার কাউন্ট ডাউন করতে থাকুন। আপনার ঘুম আসতে বাধ্য।
আপনি চেষ্টা করে দেখুন না একবার। আমি তো উপকার পাচ্ছি।
ম্যাক্সিমাম টাইম ৯০ এর ঘর পার হওয়ার আগেই ঘুমিয়ে যাই, আর বেশি টেন্সড থাকলে ৮০ 'র ঘর। কিন্তু আজ পর্যন্ত এমন কোনদিন হয়নি যে আমি ৮০ পার হতে পেরেছি।
সো লেটস ট্রাই...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।