রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন
আনন্দ যে যেভাবে পায়, তাকে সেপথেই তা পেতে দেয়া উচিত; যদি তাতে অন্য কারো ক্ষতি না হয়। কিন্তু যে আনন্দ সাময়িক, যা বর্তমানের সময়গুলো কেড়ে নেয়; জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যায় অন্ধকারের দিকে; সে আনন্দ আর যাই হোক, তাতে মোহগ্রস্থ হওয়া উচিত নয়। বিশেষতঃ আমরা যারা মধ্যবিত্ত, যাদের জীবন প্রতিটি মুহুর্তে ঘাত আর প্রতিঘাতের মধ্যদিয়ে এগিয়ে যায়, তাদের তা এড়িয়ে চলাই উচিত। কথাগুলো একসময় প্রায়ই বলতাম। বিশেষতঃ ক্রিকেট খেলা প্রসঙ্গে।
সারাদিন ধরে যে খেলা চলে, যা দেখতে ক্লাস ফাঁকি দিতে হয়, জরুরি কাজ বাতিল করতে হয়, যার জন্য একটি দিন চলে যায়; সে খেলা আমাদের জন্য নয়। বিশেষতঃ আমাদের, যাদের টিকে থাকতে হলে প্রতিটি মুহুর্তের সদ্বব্যবহার করতে হয় সতর্কভাবে। তাই যতটা সম্ভব, ক্রিকেট খেলা দেখা হতে বিরত থাকার চেষ্টা করি, যদি সেটা দিনে হয়, তবে তাতো অবশ্যই। কিন্তু ওয়েষ্ট ইন্ডিসের সাথে বাংলাদেশের যে টেস্ট সিরিজ হলো, তার প্রতিটি খেলা দেখলাম রাত জেগে। তারপর ওয়ানডে সিরিজের দুটি খেলা।
সেটাও দেখা হলো রাত জেগে। গতকাল যখন বাংলাদেশ জিতল, তখন কেন যেন অন্যরকম খুশি লাগতে শুরু করলো। জয়ের বিষয়টা ভোরে নিশ্চিত হওয়ায় বন্ধু-বান্ধব কাউকে ফোন করে সেই খুশি ভাগ করতে পারলাম না। ফেজবুকে কিছু লিখব কিনা, ভাবছি। নাহ্, লেখা যাবে না।
কারন অনেকেই ক্রিকেট খেলা দেখে সময় নষ্ট করতে নিষেধ করেছি। খুশির সংবাদটা তাই লিখে আনন্দটা ভাগাভাগি করতে পারলাম না। সামহোয়্যারে দেখলাম, অনেকে একের পর এক বাংলাদেশের জয়ের সংবাদ দিচ্ছে। কমেন্টগুলো পড়লাম। ভাল লাগতে লাগতে একটি কমেন্ট পড়ে খারাপ লাগল।
একজন বলেছেন, দুই নম্বরি দলের সাথে জিতে এতো আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই। উনি মনেহয় খেলাটা দেখেনি। শুধু সংবাদটা জেনেছেন। খেলাটা দেখলে এমন কথা চরম শত্রু হলেও বলতে পারতেন না।
প্রত্যাশার পরিমান অনেক বেশি হলে পরাজয়ে অনেকসময় ক্ষোভ এভাবে বেড়িয়ে আসে।
খেলায় জয়-পরাজয় থাকবে। এটাই সত্য। কিন্তু পরাজয়কে আমরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না। পরাজিত হলে চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার, জয়ী হলে মাথায় তুলে রাখা। এটাই আমাদের সংস্কৃতি।
আশরাফুলকে নিয়ে অনেক বেশি সমালোচনা। সমালোচনাটা অনেকসময় বেদনাদায়ক পর্যায়েও চলে যায়। মনেহয়, যত বেশি খারাপ কথা আছে, তা সব আশরাফুলের জন্য। তখন আমরা ভুলে যাই, এই আশরাফুলও একদিন ভাল খেলেছিল, তখন তাকে এই আমরাই মাথায় তুলে নিয়েছিলাম। গতকাল যদিও আশরাফুল সেঞ্চুরি করতে পারতো, কিন্তু তা হয়নি।
যে রান করেছে, তা এগিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে নিঃসন্দেহে। যাক, আমাদের প্রত্যাশার যে বহিঃপ্রকাশ, তা আমরা কোন সময় কিভাবে প্রকাশ করি, তাই লিখছিলাম।
শুধুমাত্র খেলার ক্ষেত্রে নয়। জীবনের সবক্ষেত্রে আমরা একই কাজ করি বিভিন্নভাবে। এভাবে বেড়ে যায় দুরত্ব, নষ্ট হয় ঐক্যবদ্ধতা; যা আমাদের জন্য খুবই জরুরি।
মতামতের ভিন্নতা থাকবে, কিন্তু অন্যকে সম্মান দিয়ে যতটা সম্ভব শালীনভাবে তার সমালোচনা করা যেতে পারে। কিন্তু কোনভাবেই সমালোচনার নামে দুর্নাম রচিত না হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।