আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোবাইল ফোন নয়, এটি পিস্তল!

বাংলাদেশ আমার দেশ
দেখে মনে হবে 'নিরীহ' মোবাইল ফোন। আসলে এটি মোবাইল ফোন নয়, পিস্তল। মোবাইল ফোনের আদলে তৈরি হয়েছে অত্যাধুনিক ছোট আগ্নেয়াস্ত্র। বিশেষজ্ঞরা এর নাম দিয়েছেন 'মোবাইল ফোন গান'। দেখতে হুবহু মোবাইল সেটের মতো, কিন্তু ওজনে একটু বেশি।

এই সেটের ভেতরে দশমিক ২২ ক্যালিবারের চারটি গুলি একসঙ্গে ব্যবহার করা যায়। একটির পর একটি গুলি বের হয়। মোবাইলের কি-প্যাডই ট্রিগার। এ ধরনের মোবাইল ফোন গান বাজারে আসার পর একটি গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গোচরে আনে। গোয়েন্দা সংস্থাটি ভিআইপিদের নিরাপত্তায় মোবাইল ফোন গানসহ ক্যামেরা ও ভিডিও ক্যামেরাতে লুকানো ছোট আগ্নেয়াস্ত্রকে মারাত্মক হুমকি হিসেবে বিবেচনা করেছে।

এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সতর্কতা ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে। রিপোর্টে এই মোবাইল ফোন গান কোন দেশে তৈরি হয়েছে সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা যায়নি। ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন গুগলের চিত্রে এ ধরনের মোবাইল ফোন গানের ছবি পাওয়া গেলেও প্রস্তুতকারী দেশের নাম এবং কোম্পানি সম্পর্কে কোনো তথ্য নেই। মাঝখান থেকে পৃথক করা এই মোবাইল সেটে একটি অ্যান্টেনাও রয়েছে। মাঝখান দিয়ে ঢোকানোর পর মাথার দিকে থাকা চারটি ছিদ্রের মাধ্যমে গুলি বের হয়।

বাংলাদেশে এ ধরনের মোবাইল ফোন গান এখনও ব্যবহৃত হয়েছে কি-না সে ব্যাপারেও গোয়েন্দা সংস্থা নিশ্চিত নয়। তবে গোয়েন্দা সংস্থাটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে যে প্রতিবেদনটি দিয়েছে তাতে মোবাইল ফোন গানের একটি ছবিও সংযুক্ত করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টটি পাওয়ার পর গত ২০ জুলাই মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক চিঠিতে সব মন্ত্রণালয় ও পুলিশ-র্যাবসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে বিভিন্ন দফতরে আয়োজিত সভা-সমাবেশ, সেমিনার-কর্মশালাসহ যে কোনো ধরনের সমাবেশে এ ধরনের মোবাইল ফোন গান বহন ও ব্যবহারে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ দফতরের একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাওয়ার পর সব গোয়েন্দা সংস্থাই এ মোবাইল ফোন গানের ব্যাপারে সতর্ক রয়েছে।

তবে বাংলাদেশে এ ধরনের মোবাইল ফোন গান এসেছে কি-না তা নিশ্চিত করতে পারেননি ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, মোবাইল ফোন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। সূত্র জানায়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই চিঠির একটি অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি সংস্থাগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। তবে এই চিঠির আলোকে ব্যাংকিং খাতের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সরকারের অন্যান্য সংস্থা এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করবে।

তারা মনে করে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ইতিমধ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা বা কেপিআই হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বাড়ানো হয়েছে। ভিভিআইপি যেমন প্রধানমন্ত্রীসহ অনেক বিদেশি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির অনুষ্ঠানে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ করা যায় না। নিরাপত্তার কারণে তাদের অনুষ্ঠানে প্রবেশ করতে মোবাইল ফোন অন্যত্র রেখে যেতে হয়।

তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ সরকারি-বেসরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশে কোনো বাধা নেই। ব্যাংকিং লেনদেন চলার সময় ব্যাংকের ভেতরে মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হলেও তা অনেক ক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয় না। বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ বিদেশি ও বড় বড় ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পাঁচতারা হোটেল, সরকারি প্রতিষ্ঠান, বিমানবন্দরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে প্রবেশের ক্ষেত্রে আর্চওয়ে দিয়ে প্রবেশ করতে হয়। এতে মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য ধাতব পদার্থ আলাদাভাবে একটি পাত্রে রেখে ঢুকতে হয় আর্চওয়ে গেট দিয়ে। মোবাইলসহ অন্যান্য ধাতব পদার্থ ওই পাত্রের মাধ্যমে আলাদাভাবে নিয়ে পরে গ্রাহকের হাতে দেওয়া হয়।

এই প্রক্রিয়ায় মোবাইল ও অন্যান্য ধাতব পদার্থের ভেতরে কী আছে সেগুলো পরীক্ষা করা হয় না। ফলে মোবাইল ফোন গানের মাধ্যমে খুব সহজেই গুলিসহ বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রবেশ করা সম্ভব।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.