বাংলায় এখন বেশ কয়েকটা ফোনেটিক কিবোর্ড লেআউট আছে। ফোনেটিক লেআউটের সুবিধা হল প্রচলিত লেআউটগুলোর চেয়ে ৯০% কম সময় ও কম পরিশ্রমে এই লেআউটগুলোতে দক্ষ হওয়া যায়। ফলে আমার মত যারা অলস, তারা অন্য লেআউটের কথা ভাবতেই পারে না। ফোনেটিক এখন এতটাই জনপ্রিয় যে সব বাংলা সাইটেই একাধিক ফোনেটিক লেআউটে লেখা যায়। সামু তো "যেকোন সাইটে ফোনেটিক" বাটনটার বিজ্ঞাপন ফেসবুকে পর্যন্ত দেয়! সব লিনাক্স ডিস্ট্রোতে প্রভাত ফোনেটিক লেআউট দেয়া থাকে।
কিন্তু কিছুদিন হল মনে একটা খটকা লাগছে। ইংরেজী উচ্চারণ নির্ভর এইসব লেআউটে বাংলা লেখা আসলে কতটা গ্রহনযোগ্য? বাংলাভাষার নিজস্ব বর্ণমালা, শব্দগঠন ও বানানরীতি আছে। ফোনেটিকে আমরা যখন বাংলা লিখি তখন তো আসলে আমরা ইংরেজীতে লিখি, শুধু সেটা বাংলায় কনভার্ট হয়। প্রভাত লেআউট কিছুটা গ্রহনযোগ্য কারণ এতে অন্তত Th এ ঠ, Gh এ ঘ লিখতে হয় না। এটা উচ্চারণ নির্ভর হলেও সব অক্ষর এক কি-স্ট্রোকেই লেখা যায় (Shift ব্যবহার করে)।
আমি যতদূর জানি ফোনেটিক বিজ্ঞানসম্মতও না। কারণ, কিবোর্ডে অক্ষরগুলো সাজানো হয় তাদের ব্যবহারের উপর ভিত্তি করে। যে অক্ষর যত বেশী ব্যবহার হয় সেটা এমন জায়গায় রাখা হয় যেন সেটা তত সহজে চাপা যায়। কিন্তু ফোনেটিক যেহেতু ইংরেজী কিবোর্ড ব্যবহার করে তাই এতে বাংলায় কোন অক্ষর বেশী ব্যবহৃত হয় তা আমলে আনার কোন সুযোগ নেই। তাই ফোনেটিকে টাইপিং বিজয়, ইউনিজয় বা জাতীয় কিবোর্ডের চেয়ে অনেক ধীর গতির।
ফোনেটিকগুলোর মধ্যে প্রভাত অন্যগুলোর চেয়ে দ্রুতগতির। ১৯৭০ সালে তখনকার পাকিস্তান সরকার আরবী হরফে বাংলা লেখার পদ্ধতি চালুর চেষ্টা করেছিল। বাঙ্গালীদের প্রতিবাদের মুখে সেটা বাস্তবায়ন করতে পারে নি তারা। কিন্তু ফোনেটিকের নামে এখন কি আমরা ইংরেজী অক্ষরে বাংলা লিখছি না? আমি নিজেও ফোনেটিক ছাড়া বাংলা লিখতে পারি না। আমার ল্যাপটপে বাংলা কিবোর্ড নেই (থাকার কথাও না)।
কিন্তু খটকাটা যাচ্ছে না। আপনারা কি বলেন?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।