কুড়াই প্রহরব্যেপে স্মৃতিলগ্ন ধূলি
১.
চল সখি নিধুবনে আজ পূর্ণিমা--
জোছনার ননী মেখে রাঙাই তনিমা।
২.
কোষের কণিকাজুড়ে প্রণয়ের চাষ
বিরহ কুসুম ফোটে অনুবারোমাস।
৩.
বনে বনে ঘুরি ফিরি মনেতে বিষাদ
হরিণী হারিয়ে কাঁদি বিফল নিষাদ।
৪.
বানিয়ার বেশ ধরে আনাড়ি কানাই
সারাদিন রাধিকার প্রতিমা বানাই।
৫.
অগোচরে ঘরে আসে উতলা ফাগুন
তলে তলে জ্বেলে যায় তরল আগুন।
৬.
গোধূলি নেমেছে পাটে ধূপছায়া জাগে
আকাশ মেতেছে আজ কার অনুরাগে?
৭.
উতরোল কান্নার বোবা কলরোল
গিলে খায় কিশলয় কিন্নর বোল।
৮.
ডুবে যায় পূর্ণিমা ভেসে ওঠে ছায়া
গায়ে তার লেগে আছে জোছনার মায়া।
৯.
নীরবে সরব হলো কাল নিরবতা
বিরহের কাছে প্রেম যাচে অমরতা।
১০.
অবিনাশী বাসনার মিছে অভিলাষ
বিরহে বিনাশ হয়ে হবে ইতিহাস।
১১.
তুমি যে গিয়েছো ভুলে ভুলে যাই ভুলে
আনমনে বিলি কাটি আমাজন চুলে।
১২.
মাতাল মহুয়া বনে পরাগ মিথুন
বুনেছে হৃদয় মাঠে বিষাদ প্রসূন।
১৩.
বিরান মাঠের বুকে রুয়ে যাই আশা
চারা মেলে ডাল-পালা ফোটে ভালবাসা।
১৪.
কালের করাল কোলে কালঘুমে রাই
ভাঙা বাঁশি ফুঁকে চলে অবোধ কানাই।
১৫.
জলে জলে জ্বলে জ্বলে তরণী ভাসাই
ছেঁড়া পাল ভাঙা হাল পথ জানা নাই।
১৬.
অভাগা কুমোর আমি দুই হাতে কাদা
চাকায় যাহাই গড়ি হয়ে যায় রাধা।
১৭.
আঙুলে ঘুরাই যতো তসবিরর দানা
জবান শিরির নামে হতে চায় ফানা।
১৮.
আকাশে জমেছে মেঘ নামবে বাদল
জলরং ক্যানভাসে কার সে আদল?
১৯.
ফুলেল বোধের ঘোরে সেজেছি সবিতা
অকালবোধন সে কি ভাবো পুষ্পিতা?
২০.
বিরহের বারোমাসী শাখাময় গাছে
পাতার সুবজ ঘিরে বাসনারা নাচে।
২১.
জড়িয়ে নিয়েছি গায়ে বিরহ চাদর
শীতের শরণ যাচে শাওন-ভাদর।
২২.
গেরুয়া বসন গায়ে মুখে হরি হরি
একতারা কেঁদে চলে ভেলুয়াসুন্দরী।
২৩.
আকাশে দিয়েছি একে বেদনার নীল
আমার বেদনা ভারে ব্যথিত নিখিল।
২৪.
পলে পলে ফাঁদ পাতে প্রণয়ের জাল
কাঙাল বাসনা কাঁদে ভুলে কালাকাল।
২৫.
তর্জনী তুলে খাড়া কালের খড়গ
সুখের সড়কজুড়ে স্মৃতির মড়ক।
২৬.
বিরহ জ্বেলেছি বুকে আহুতি হৃদয়
অপবাদ দেয় লোকে কালিয়া নিদয়।
২৭.
কুড়াই প্রহরব্যেপে স্মৃতিলগ্ন ধূলি
সাজাই পূজার ঝাঁপি করোটির খুলি।
২৮.
মনে ও মননে আছো আছো নিউরনে
মাংসে-মজ্জায় আছো আছো হরমোনে।
২৯.
অপেক্ষা- সাম্পান, উপেক্ষা- ঢেউ
কাপ্তান ভাবে আহা এলো বুঝি কেউ।
৩০.
জিনোমেরর মানচিত্রে যার নাম লেখা
ঘুমাও প্রহর গুণে, হে কাজলরেখা।
৩১.
সৃজনের তোড়ে ভাসে প্রেম-রতি-কাম
সৃজনে জড়িয়ে থাকে সেই রাধা নাম।
৩২.
ঠিকানা বিরানা হলো বিজয় বিলয়
বিরহের হাত ধরে হাসে বরাভয়।
৩৩.
মথুরা মথিত করে ছুটি বৃন্দাবন
প্রদীপের আশে বৃথা যমুনা মন্থন।
৩৪.
আক্ষেপে বিক্ষেপে সংক্ষেপ হয়ে
প্রমত্তা তৃষ্ণার স্বেদ ফেলি ক্ষয়ে।
৩৫.
যে নামে এখনো ফোটে কদমের ফুল
কালিন্দীর ধারা হয়ে বহে তার চুল।
৩৬.
বিলোল বিহার মাগে বিরহী আঙুল
নাবিকের চোখে জাগে ভুল মাস্তুল।
৩৭.
ভুলেছে যে নামসুধা ভুলে গেছে সুর
সে না চেনে মথুরা না হস্তিনাপুর।
৩৮.
বিন্দে দূতি গয়া গেছে বিশাখাও নাই
কোথা তার দেখা পাই কাহারে শুধাই?
৩৯.
হতভাগী বেহুলার অপয়া লখাই
নিয়তি ছোবল হানে যেখানেই যাই।
৪০.
প্রণয় বিহনে নই বেদনা বিধূর
পরশ বুলায় প্রাণে বিরহ বিদুর।
৪১.
বেশ আছি হাসি-খুশি খাই নাচি গাই
পাড়ার লোকেতে তবু ডাকে যে দুখাই।
৪২.
উদাসী বাতাসে বাজে লাউবৎ বুক
দুপুরের ঘুঘু আমি নিশিতে ডাহুক।
৪৩.
আসঙ্গ-আশ্লেষে আহ্লাদ ঢেলে
অনঙ্গ-বহ্নির শিখা গেলে জ্বেলে।
৪৪.
মাছের কান্না ভবে বোঝে না তো কেউ
বোঝে শুধু জল আর অবিচল ঢেউ।
৪৫.
কামরূপকামাখ্যা গিয়ে আনি জাদুটোনা
মাদুলি-কবজে দেখি বাড়ে জ্বালা দোনা।
৪৬.
কোকিলের কুহুতান দোয়েলের শিস
বল বানু কানে কেন হানে হেন বিষ?
৪৭.
বাতাসে দিয়েছি ফুঁকে বিরহ আমার
তাই তার বুকে বাজে এতো হাহাকার।
৪৮.
যে আগুন পোড়ে শুধু করে নাকো ছাই
কী মূলে ডরাই তারে যতো পুড়ে যাই?
৪৯.
ভারায় হৃদয় তুলে কষেছি করাত
লোহিত সাগর হলো বেরং ফোরাত।
৫০.
বৈদ্যের চরণে ঢালি নৈবেদ্য ডালি-
ওঁয়ার পরাণে দাও হামারি কৈছালি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।