ঘূর্ণিঝড় আইলার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থ প্রায় ৫ হাজার পরিবার বসবাস করছে খোলা আকাশের নিচে অথবা অন্যের আশ্রয়ে। দু’একটি জায়গা ছাড়া কোথাও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের কাছে ত্রাণসামগ্রী পৌঁছেনি। কোন সরকারি কর্মকর্তাকেও দেখেনি চরের মানুষ। নিখোঁজ স্বজনদের সন্ধানে পরিবারগুলো ছুটছে চরের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্ত। পানি নামার সাথে সাথে চরের বুকে ফটে উঠছে ধ্বংসের চিহ্ণ।
বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ নষ্ট হয়ে গেছে জোয়ারে লবণাক্ত পানি প্রবেশ করে। তবে তিনদিন বন্ধ থাকার পর হাতিয়ার সাথে বুধবার সকাল থেকে নৌ-যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, জোয়ারের পানিতে উপজেলার নলেরচর, কেরিংচর, চরবাশার, নঙ্গলিয়ারচর, নিঝুম দ্বীপসহ আশপাশের চরগুলোতে ৪ হাজার ৩৭২টি ঘর সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৭ হাজার ৪৭০টি। লবণাক্ত পানিতে ডুবে আউশসহ ৪ হাজার ৪২০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
এ পর্যন্ত ৩০ মেঃটন চাউল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। তন্মধ্যে বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল হাসেম নিঝুম দ্বীপে ৩’শ পরিবারের মাঝে চাউল বিতরণ করেন। এছাড়া নৌবাহিনীর ত্রাণবাহী জাহাজ থেকে তমরুদ্দি ও সুখচরে নৌবাহিনীর কমান্ডার সাব্বির হোসেন শুকনো খাবার বিতরণ করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাতিয়ার কেরিংচরে চারদিকে শুধু ধ্বংস স্তুপ। ঘর ভেসে শূন্য ভিটি পড়ে আছে অনেক জায়গায়।
তবে কেউ কেউ নিজ উদ্যোগে যতটুকু পারছেন আবার ঘর তোলার চেষ্টা করছে। ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়া মানুষগুলো এদিক ওদিক ছুটছে একটু আর্থিক সাহয্যের আশায়। কিন্তু বিকাল ৫টা পর্যন্তও এই চরে অবস্থান নিয়ে সরকারি ত্রাণ নিয়ে আসতে দেখা যায়নি। স্বজন হারানো এবং নিখোঁজদের আর্তনাদে বাতাস ভারী হয়ে উঠছে। এ চরে ৬০ জনেরও বেশি এখনও নিখোঁজ রয়েছে বলে জানা গেছে।
দপুরে সরেজমিনে ক্ষয়ক্ষতি দেখতে হাতিয়ার সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ আলী কেরিং চরের মুজিব বাজার এবং বাতানখালী বাজারে গেলে ত্রাণ দেয়া হবে এইভেবে শত শত মানুষের ভীড় জমে যায়। একপর্যায়ে তিনি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে আর্থিক সহায়তা দেন।
ক্ষতিগ্রস্থ পাতার চরের মমিন উল্যা জানান, জলোচ্ছ্বাসের তিন দিন পেরিয়ে গেলেও এই চরের প্রশাসক তহশিলদার ফারুককে কেউ একবারের জন্যও দেখেনি।
এসব বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে হাতিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, প্রাপ্ত সরকারি সহায্য অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে। ইতোমধ্যে তা শুরু হয়েছে।
তিনি সর্বশেষ ২৪ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। নিখোঁদের সম্পর্কে কেউ রিপোর্ট করেনি বলে তিনি জানান।
#
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।