আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইয়াজউদ্দিন, ইয়েস উদ্দিন এবং অন্যান্যঃ যে জরায়ুতে ৩ উদ্দিনের জন্ম

ফেসবুক আইডি:নাই

জাতীয় সংসদে ভাষন শেষে সাংসদদের গৎ বাধা ধন্যবাদ হতেও বঞ্চিত হতে যাচ্ছিলেন বিদায়ী প্রসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহমেদ। এ যাত্রায় উদ্বার করতে এগিয়ে এল এক কালের চরম শত্রু আওয়ামী লীগ, শাসনতন্ত্রের ধারাবাহিকতা রক্ষার নামে আওয়ামী লীগ ইয়াজউদ্দিনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বিদায় দিল প্রেসিডেন্ট পদ হতে। শুধু সাংসদ কেন, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, সমাজবিদ, সাংবাদিক সহ সমাজের সর্ব স্তর হতে বিদায়ী প্রেসিডেন্টকে আক্রমনের সাড়াষীতে আবদ্ব করে ধরাশায়ী করা হল বিনা প্রতিরোধে। এই আক্রমনে মূল সেনাপতির ভূমিকায় নেমেছিল খালেদা জিয়ার নেত্রীত্বে বিএনপি। এই সেই খালেদা জিয়া এবং বিএনপি, যারা শাসনতন্ত্র সংশোধন করে বিচারপতির বয়স হেরফের করে নিজ ঘরনার বিচারপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বানাতে চেয়েছিল।

লগি বৈঠার তান্ডবে মানব জীবনকে পশুর জীবনে বানিয়ে আওয়ামী লীগ ঠেকিয়েছিল সে ষড়যন্ত্র। ক্ষমতা দখলে বিএনপির প্লান ’বি’ বাস্তবায়নের মহাপরিকল্পনা নিয়ে সামনে আসেন তাদেরই গৃহপালিত রাষ্ট্রপতি প্রফেসর ইয়াজউদ্দিন। তিনিই প্রেসিডেন্ট এবং তিনিই সরকার প্রধান, একই অংগে এত রূপ! বিএনপি এবং তার বাঘা বাঘা উকিল, মোক্তার, ব্যারিষ্টারের দল এ ধরনের নিয়োগের পক্ষে সাফাই গাইতে শত শত পৃষ্ঠার আইনী এবং মানবিক কাগজে ভাসিয়ে দেন দেশবাসীকে। আওয়ামী লীগও তার ভান্ডার হতে ছেড়ে দেয় তাদের নিজস্ব প্লান ’বি’, নির্বাচন বয়কট! সশ্রস্ত্র এবং বিপদজনক দুই প্রতিপক্ষ একে অপরের প্লান ’বি’ ঠেকাতে পানিপথের যুদ্বের মত মুখোমুখি হয়ে যায় বাংলাদেশের পথে প্রান্তে। বার বার অনেকবারের মত সেনানিবাসের লৌহ ফটক খুলে সামনে এসে দাড়ায় উর্দি পরা সেনাবাহিনীর দল।

হাতে বন্দুক আর পিছনে ট্যাংক কামানের বহর থামিয়ে জেনারেলের দল লাথি মেরে খুলে ফেলে বংগভবনের প্রধান ফটক। অসূস্থ ইয়াজউদ্দিনকে ঘন্টা নয়, মিনিট বেধে দেয়া হয় সরকার প্রধান হতে পদত্যাগের জন্যে। ফায়ারিং লাইনের মধ্য নিশানায় দাড়িয়ে বিএনপির হাতের পুতুল ইয়াজউদ্দিন ছেড়ে দে মা কেন্দে বাচি কায়দায় বিদায় নেন সরকার প্রধান হতে। ক্ষমতা চলে যায় সেনা নিয়ন্ত্রিত ফখরুদ্দিন সরকারের হাতে। পাঠক, যেহেতু আলজাইমার রোগে এখনো আক্রান্ত হইনি তাই স্মরণ শক্তির সবটুকু সৎ ব্যবহার করে উপরের ঘটনাগুলো মনে করার চেষ্টা করেছি, কোথাও আমার ভূল হয়ে থাকলে দয়া করে শুধরে দেবেন।

সেনা সমর্থিত ফখুরুদ্দিন সরকার ১৮ মাস ধরে রাজনীতিবিদদের পাজামা, লুংগি, আন্ডারওয়্যার ধরে টানাটানি করতে থাকে, যার ফলশ্রুতিতে জাতির সামনে নেংটা হয়ে যায় অনেক রাজনীতিবিদের গোপনাংঙ্গ। হরিন আর ময়না পাখী সম্বলিত হারেম শরিফ, সাথে লাল, নীল, সবুজ সহ হরেক রংগের নোটের পাহাড়ে লজ্জা নিবারন করার চেষ্টা করেও পাপের গোপনাংঙ্গ সামলাতে পারেননি আমাদের গর্বিত রাজনীতিবিদগনও। সময়ের চাকায় চড়ে রাজনীতির আমানিশা পাড়ি জমায় কালের ইতিহাসে। যে ক্ষমতার জন্যে এত লড়াই সে লড়াই ফয়সালা হয় ব্যলটের মাঠে। পুতুল সরকার প্রধান, পুতুল নির্বাচন কমিশনার এবং পোষ্য প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতায় বসিয়েও বিএনপি শেষ হাসি হাসতে পারেনি, ৩২ দাত বের করে ক্ষমতার মসনদে আরোহন করেন ১৪ চাঁদাবাজি মামলার অন্যতম আসামী শেখ হাসিনা।

হাওয়া এবং সূধার লড়াই শেষ হয় হাওয়ার পরাজয়ের মধ্য দিয়ে। নেত্রী এবং রাজনীতিবিদ খালেদা জিয়াকে একটা প্রশ্ন করলে বোধহয় অন্যায় হবেনাঃ জনাবা খালেদা জিয়া, বৃদ্ব এবং অসূস্থ একজন শিক্ষাবিদকে ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে প্রেসিডেন্ট বানিয়েছিলেন, কথা ছিল আপনি এবং আপনার ছেলেদ্বয় যা চাইবে তাই করতে হবে। শিক্ষার মান সন্মানকে ভূলুণ্ঠিত করে আপনার অশিক্ষিত এবং চোরাই পরিবারের দাসত্ব করে একজন ইয়াজউদ্দিন যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেলেন তা শিক্ষিত সমাজের কলংক হয়ে যুগে যুগে বেচে থাকবে। সংবিধান লংঘনের দায়ে আপনারই সেবাদাসকে আজ আপনি অভিযুক্ত করছেন, কিন্তূ ক্ষমতা চীরস্থায়ী করার নীল নক্সা বাস্তবায়নের জন্যে আপনি যা যা করেছেন তাকে আমরা কি বলব, গণতন্ত্রের রথযাত্রা? পাশাপাশি আওয়ামী নেত্রীত্ব যারা ইয়াজউদ্দিনকে বিএপির কায়দায় সংবিধান লংঘনকারী হিসাবে আখ্যায়িত করছেন, তাদের বলতে চাইছিঃ জনাববৃন্দ, এই কি সেই ইয়াজউদ্দিন নন যার হাত ধরে আপনারা ক্ষমতার সিড়ি মাড়িয়েছিলেন? ব্যক্তি ইয়াজউদ্দিন প্রসিডেন্ট হিসাবে কতটুকু ক্ষমতা ভোগ করেছিলেন তা জানতে আপনাদের ভাগ্যদেবতা জেনারেল মঈনকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। ইয়াজউদ্দিনকে ইয়েস উদ্দিন বানিয়ে ঠাট্টা করেছিলেন আবার সেই ইয়েস উদ্দিনের কাছেই শপথ নিয়ে ক্ষমতার চাবি অধিগ্রহন করেছিলেন।

আজ আবার উনার প্রতি বিদ্বেষ কেন? আপনাদের জেল হাজতের উৎস কোথায় ছিল সে গান কি নতুন করে গাইতে হবে? সাহস থাকলে সেনাবাহিনীকে অভিযুক্ত করুন সংবিধান লংঘনের দায়ে। উপসংহারঃ অনেক হিন্দী সিনেমায় দেখেছি ক্রাইম সীনে নায়ক এবং ভিলেন একে অপরকে জড়িয়ে বন্ধু হয়ে যায় পুলিশের আগমন টের পেয়ে। আমাদের রাজনীতিবিদ্‌দের জন্যে এমন দৃশ্য একটা শিক্ষা হয়ে বিশেষ কাজে আসতে পারে। ক্ষমতা দখলের মারামারিতে সেনাবাহিনীর আগমন টের পেলে দয়া করে একে অপরের ইয়ার হয়ে যাবেন, তা হলেই সংবিধান লংঘন করার জন্যে নতুন কোন ইয়াজউদ্দিনের জন্ম হবেনা। আপনারা রাস্তাঘাটে পশু শক্তির প্রদর্শন করলে শূধু ইয়াজউদ্দিন নন, মঈন উদ্দিন এবং ফকরুদ্দিনদেরও আগমন ঘটবে, আর তাদের পেছনে এই নগন্য আমার মত অনেক সাধারণ মানুষের সমর্থন থাকবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.