আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সিপিএম এর বিপর্যয়রে বাম বিপর্যয় কওনের চেষ্টাটা সন্দেহজনক...

কখনো চাই নাই দূরে থাকি...তবু দূরগুলো বারে বারে আসে...

একসময় ভারতের নির্বাচন বিষয়ে উৎসাহ ছিলো ষোলআনা। তখনো ইন্টামিডিয়েট পড়ি...এরমধ্যেই ৯১'এ সোভিয়েত ইউনিয়নে বিপর্যয়...আমাগো দেশে যারা ছাতা ধরনের রাজনীতি করতো তারা দিশেহারা। এমন সময়ে আবেগী সমাজতান্ত্রিক আমার সম্বল ছিলো পশ্চিমবঙ্গের সিপিএম...যেনো দুনিয়াতে ধিকি ধিকি জ্বলে একমাত্র প্রদীপ...সেই সময়টাতে চিত্তে রাজনীতি ছিলো...অন্তরে ছিলো প্রতিবাদের বিচ্ছুরণ...মাত্র এরশাদ সরকার হটানের পর আমরা নিবেদিত শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ডাকে গণ আদালত সংঘটনে... এই সময়টায় পৃথিবীর যেকোনখানে সমাজতান্ত্রিক বিনির্মাণের অবশেষ দেখলে তারেই ভালোবাসতাম...এই আবেগে অনৈতিকতা নাই। এই আবেগে অনিশ্চয়তা আছে...আর তাই দিশাহারা হইতে হয় খানিক। এমন একটা সময়ে আমার দিশাহারা প্রানে দিশা ফিরা পাইলাম একজন আঞ্চলিক মার্ক্সিস্টের নিজস্ব ইন্টারপ্রিটেশন পড়নের পর। শিবদাস ঘোষ নামের একজন ভারতীয় পার্টি নেতার ৬৮ সালে লেখা একটা রচনা পাইলাম এক বন্ধু মারফত...চেকোস্লোভাকিয়ায় সোভিয়েত আগ্রাসন নিয়া সেই সময়ের একটা মূল্যায়ন। একজন বামপন্থী বিশ্লেষক ৬৮'র সোভিয়েত অগ্রসরতারে আগ্রাসন কইতেছেন দেইখা আমার এমনিতেই আগ্রহ তৈরী হইয়া গেছিলো...তার লগে ছিলো আমার নিজস্ব কুন্ডেরা ভক্তি! সোভিয়েত পার্টির অবক্ষয়ী চরিত্র...শ্রেণী সংগ্রাম থেইকা সইরা আসার সম্ভাবনার কথা পড়তে গিয়া সেই ৯২তেও খানিকটা তব্ধা খাইছিলাম...বন্ধু মারফতেই যোগাযোগ হইলো বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের নেতাগো লগে...তাগো লগে দীর্ঘ বাতচিতের ফলস্বরূপ হতাশার নোঙর থেইকা আবার পরিপূর্ণ ডাঙায় বসতির চিন্তা...ভারতের যেই পার্টির নেতা ছিলেন শিবদাস ঘোষ, সেই পার্টি সম্পর্কে কিছু জানা বুঝা আমার ভারতীয় কমিউনিস্ট আন্দোলন সম্পর্ক ধারনা পাল্টাইয়া দিলো পুরা...গর্ভধারিণী পর্ব থেই আমি চললাম অগ্নিবলাকায়... সিপিএম সম্পর্কীত আবেগগুলি ক্রমশঃ অগ্নিবলাকার আগুনে পুড়তে লাগলো...ভারতে সিপিএম বাম তরীকা নিয়া যেই খেলা করতেছিলো তার জন্মলগ্ন থেইকা, সেইসবরে কি আসলেই কেবল বামাবেগে ইগনোর করন যায়? ৯১'এর নির্বোধ কিশোর তা পারলেও ইতিহাস কি তা পারে? ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সিপিএম আসলে কি ধরনের পার্টি সেইটা কোলকাতার বা পশ্চিমবঙ্গের বন্ধুরা আমার চাইতে অনেক ভালো কইরা কইতে পারবো...কিন্তু তার চরিত্রে যেই বামপন্থা ছিলো সেইসব আজ বালখিল্যতায় বিলীন হইছে, এইটা বুঝতে অনেক দূর যাইতে হয় না। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামেই তা সম্ভব..৭০'এ হয়তো লাইনের লড়াই বইলা চালাইতে পারছে তারা নকশালবাড়ি বিদ্রোহরে...কিন্তু নন্দীগ্রাম কিম্বা সিঙ্গুরে কোন কথিত মাওবাদী আশ্রয় না নেওয়াতে তারা পড়ছে বিপদে...সিপিএমের বামধারার আর বাম্পার প্রকাশ ঘটেনা এই ধরায়...মানুষের প্রতিরোধের মূল্য যারা দ্যায় না, তারা কতোটা পাতি বুর্জোয়া সেই বিবেচনায় বড়জোর যাওয়া যাইতে পারে...তাগো বামত্ব নিয়া কথা কওয়াটা কেবলই বাতুলতা... এই ব্লগপোস্ট লিখনের মর্তবা আসে পত্রিকার পাতায় পাতায় বাম গেলো-বাম গেলো বইলা আনন্দ কিম্বা হুতাশনের নমূনা দেইখা...সিপিএমের বিপর্যয়রে বাম বিপর্যয় হিসাবে দেখনের কোন বারন তারা অবশিষ্ট রাখে নাই তারা বহুকাল ধইরাই...কিন্তু যারা সুবিধা নেওনের তাগো হুঙ্কার খুব সন্দেহজনক...

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।