আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাইয়েন্স ফিকশন:পাই-সিগন্যাল

"নব্য রাজাকার গোষ্ঠির প্রবেশ নিষেধ"
৩০৩৪ এডি। পৃথিবীর ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ বছর। এই বছরে পাই-কোডিং এর একটি রহস্যময় সিগন্যাল ধরা পড়েছিল পৃথিবীর এন্টেনা গুলোতে। রেপাস নামে এক সুপার কম্পিউটার পাই-সিগন্যালটি নিয়ে বিশ্লেষণ শুরু করে দেয়। রেপাস ছিল ৩০৩৪ সালের শক্তিশালী সুপার কম্পিউটার।

টানা ২০ বছর বিভিন্ন কম্পিউটারে বিশ্লেষণ শেষে একটি চিত্র দাঁড় করানো গেল পাই-সিগন্যালটির । চিত্রটি ছিল একটা বৃত্তে চারটা ছোপ ছোপ দাগ। অবশ্য বৃত্তটা তেমন নিখুত ছিলনা, অনেকটা উপবৃত্তাকার। মানুষ অনেকটা হতাশ হল। কারনও ছিল হতাশ হওয়ার।

এত বছর বিশ্লেষনের পর বের হল একটা উপবৃত্তের মধ্যে চারটা ছোপ ছোপ দাগ। সবাই মনে করল কোথাও না কোথাও কোন ভুল হয়েছে। ছড়িয়ে পড়ল নানা রূপকথা। একটা ঐশ্বরিক বৃত্তে আটকা পড়া চার দেবতা। মানুষ থেমে থাকেনি, পাই-সিগন্যালটির বিশ্লেষণ শুরু হল নতুন করে।

এই সময় আবার একই ফল- উপবৃত্তের মধ্যে চারটি দাগ। সবাই মুটামুটি ধরে নিল এটা আসলে মানুষের তৈরী কনো সিগন্যাল যার কোন অর্থ নেই। তবুও বিজ্ঞানীদের মনে অসন্তুষ্টি থেকে গেল,কারণ সব এন্টেনাতে সিগন্যালটি একই সময়ে একই এনার্জি লেভেলে ধরা পড়েছিল এবং পাই-সিগন্যালের উৎস সম্পর্কে কোন ধারণা পাওয়া গেল না। এর পর কেটে গেল অনেক দিন। মানুষ মোটামুটি ভুলে গেল পাই-সিগন্যালটির কথা।

মানব সভ্যতা তারুণ্য বয়স ফেলে এখন মধ্য বয়সে। মানুষ এখন আর প্রযুক্তি উন্নয়ন করে না। আরো শক্তিশালী কম্পিউটার বা হিউম্যানাইজ রোবট তৈরীতে মানুষের আর ব্যস্ততা নেই,সে এক অন্য মানব সভ্যতা। মনুষ ব্রেইন ইন্টারফেইসিং করা শিখল। মানুষ অবাক বিস্ময়ে আবিস্কার করল, প্রকৃতি মানুষের ব্রেইনের একটি অঞ্চল ঠিক করে রেখেছে ইন্টার ফেইসিং এর জন্য।

বিবর্তনের সংজ্ঞাতে এটা হ্য়ত বা মানুষের বিবর্তন। জৈব নেটওয়ার্ক তৈরী করে মানুষ এক এক করে প্রকৃতির রহস্য উন্মেচন করা শুরু করল। কোয়ান্টাম মেকানিক্স আর জেনারেল রিলেটিভিটিকে একীভূত করা হল। অচিন্তনীয় ভাবে বাড়তে লাগল মনুষের বিশুদ্ধ জ্ঞান ৪০৩৮এডি। পাই-সিগন্যালটি আবার ধরা পড়ল পৃথিবীর এন্টেনাগুলোতে।

এবার মানুষের বিশ্লেষন করতে সময় লাগল না। একই চিত্র, একটি উপবৃত্তের মধ্যে চারটি ছোপ ছোপ দাগ। তবে দাগ গুলোর অবস্হা পরিবর্তিত ছিল ৩০৩৪ সালে পাওয়া উপবৃত্তের দাগুলো থেকে। মানুষ এবার ও সত্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছিল যদি না ইয়ার্দ নামের এক তরুণ মিল্কিওয়ের পোস্টারটি না কিনত। ইয়ার্দ জৈব নেটওয়ার্ক থেকে রহস্যময় সিগন্যালটির কথা জেনেছে, একটি উপবৃত্তের মধ্যে চারটি ছোপ ছোপ দাগ।

সে কিছু দুর চিন্তা করে দেখল, উপবৃত্ত মানে জ্যামিতিক প্যার্টান। দাগ গুলো হয়তবা কোন কিছুর কো-অর্ডিনেট প্রকাশ করছে। কিন্তু কিসের কো-অর্ডিনেট? না, আর চিন্তাকরে লাভ নাই। ইয়ার্দ ঘুমানোর ক্যাপসুলে শুয়ে পড়ল। ইয়ার্দ অনেকটা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ল,ঘুমানোর সময় জৈব নেটওয়ার্কের হাজারো চিন্তা খেলা করে মাথার মধ্যে।

কারন ঘুমানোর সময় ও ব্রেইনের একটা অংশ ব্যবহার করে জৈব নেটওয়ার্ক,তবে খুব কম পরিমানে। সে হটাৎ তাকাল মিল্কিওয়ের পোস্টারের দিকে, তারা গুলো জ্বল জ্বল করেছে । মহাবিশ্ব কত না রহস্যময়। গ্যালাক্সির বাইরের দিকে সূর্যটাকে চিনতে পারল সে। পোস্টারে একটু বেশী উজ্বল করে দেখানো হয়েছে সূর্যকে।

উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সির মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে সূর্য়। এক সময় সূর্য প্রবেশ করবে এস্ট্রয়েড বেল্টে,পৃথিবীতে এস্ট্রয়েড আসা বেড়ে যাবে। হয়ত বা কোন এক এস্ট্রয়েডের ধাক্কায় ধ্বংস হবে পৃথিবী, সেটা অবশ্য সুদূর ভবিস্যতে। মানব জাতি কি ঠিকে থাকবে তত দিন? এরই মাঝে কত ধরনের ট্রেজেডি অপেক্ষা করছে মানুষের জন্য। ইয়ার্দের মনে কেমন যেন করে উঠল।

কোথায় যেন সে মিল খুঁজে পেয়েছে। কো-অর্ডিনেট.........কিসের যেন কো-অর্ডিনেট?? ঘুমানোর ক্যাপসুল থেকে উঠে এল সে। মাথায় প্রচন্ড যন্ত্রনা হচ্ছে। পানি খেল ইয়ার্দ... কো-অর্ডিনেট নিয়ে কোন একটা মিল খুঁজে পেয়েছে অবচেতন মন, কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পারছে না ইয়ার্দ। সুর্যের কো-অর্ডিনেট? ব্যাপারটা পরিস্কার হতে শুরু করে ইয়ার্দের....সিগন্যালটির উপবৃত্তের অর্থ হচ্ছে মিল্কি্ওয়ে গ্যালাক্সি আর ছোপ ছোপ দাগুলোর একটি হচ্ছে আমাদের অতি পরিচিত সূর্য।

তথ্যটা বিশ্লেষনের জন্য জৈব নেটওয়ার্কের উপর ছেড়ে দিল সে। জৈব নেটওয়ার্ক বের করে আনে আসল কাহিনী। আমাদের মিল্কিওয়েতে চারটা নক্ষত্রের ছায়ায় জন্ম হয় প্রান ধারণ সক্ষম চারটা গ্রহের যার একটিতে আমরা আছি। আন্য গ্রহ গুলোতে হয়তবা বিকশিত হয়েছে বুদ্ধিমান সত্তা। তারা এগিয়ে আসছে।

কে নিবে গ্যালাক্সির নি্যন্ত্রন? এর উত্তর মানুষের জানা, যোগ্যরাই টিকে থাকবে। পারবে কি মানুষ টিকে থাকতে? ©আজম অন্যান্য সাইয়েন্স ফিকশন Click This Link
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।