আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সাইয়েন্স ফিকশন: গ্যালাকটিক টেকর ইউনিয়ন

"নব্য রাজাকার গোষ্ঠির প্রবেশ নিষেধ"
নিও স্পেস স্টেশনের বহির্জাগতিক সিগন্যাল বিশ্লেষক ডঃ ফিবন বিস্ময়কর কিছু খেয়াল করলেন। π ভিত্তিক কোডিং এর অর্থপূর্ণ নিয়ন্ত্রিত সিগন্যাল বয়ে যাচ্ছিল পেগাসাস প্রান্ত থেকে। প্রচন্ড উত্তেজনায় সিগন্যাল ভেরিয়েশন ও এনকোডিংগুলো স্থির দৃষ্টিতে দিখছিলেন ডঃ ফিবন। সিগন্যালগুলোর ড্যাম্পিং হার কমে আসছে ধীরে ধীরে। নিও স্টেশন যেন তলিয়ে যাচ্ছে প্রচন্ড ফোর্সফিল্ডের ভিতর।

এই প্রথম বহির্জাগতিক সভ্যতার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে হোমো সেপিয়েন্স। কন্ট্রোলরুমের বাতিগুলো দ্রুত জ্বলছে নিভছে। ডঃ ফিবন বুঝতে পারলেন নিও স্টেশন এর স্পেস টাইম কোঅর্ডিনেট পাল্টে দেয়া হচ্ছে। স্টেশনের সব ঘড়ি বন্ধ হয়ে আছে। পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ থেমে গেল নিও’র।

হঠাৎ সিগন্যাল বিশ্লেষক যন্ত্রটার পর্দা কেঁপে কেঁপে উঠল। মনিটর এ মেসেজ আকারে ভেসে উঠল কিছু লেখা। নিঃশব্দে ডঃ ফিবন পড়তে শুরু করলেন। '' টেকর মহাজাগতিক সভ্যতার পক্ষ থেকে মানব প্রজাতিকে স্বাগতম। টেকর এনসাইক্লোপিডিয়াতে হোমো সেপিয়েন্স এর নাম যুক্ত করা হলো বুদ্ধিমান সত্তা হিসাবে।

অনেকগুলো সভ্যতার মিলন ক্ষেত্র টেকর। হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন সভ্যতা টেকর এর নামে সভ্যতা জোটের নামকরন করা হয় টেকর ইউনিয়ন। আমরা ছুটে যাচ্ছিলাম মহাবিশ্বের নানা প্রান্তে নতুন সদস্যের খোঁজে। গত ৩০০০ বছরে আমরা চারটা সভ্যতা খুঁজে পেলাম। প্রক্সিমা সেন্টরীর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় আমরা থেমে গেলাম।

মানুষের সভ্যতা আমাদের অভিভূত করে ফেলে। তোমাদের সিগন্যাল ভরা জগতটাকে টেকর পর্যবেক্ষন ইউনিট পর্যবেক্ষন করছে ৫০০ বছর ধরে। আমরা দেখলাম তথ্য জিনিসটা স্থানীয়,একইভাবে মানুষের বিজ্ঞান। কিন্তু বুদ্ধিমান সত্ত্বার লক্ষ্য একটাই "সৃষ্টির রহস্য জানা"। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সৃষ্টির রহস্য 'ইও৭ এর ভিতর ইও৭' ধাঁধার চেয়েও জটিল।

যার সম্পূর্নটা জানা কখনোই সম্ভব না আপনাদেও বিজ্ঞান দিয়ে। টেকরীয়ন ইউনিয়ন ফেলে এসেছে সে সব টাইম ইউনিট। টেকর মহাজাগতিক সভ্যতার রীতি অনুযায়ী হোমো সেপিয়েন্সকে ইউনিয়নে অন্তর্ভূক্তির কথা উঠল। সমস্যা দেখা দিল পৃথিবীর অবস্থান নিয়ে। সোলার সিস্টেম টেকরীয়ন বলয়ে আসবে আরও ১০০০০০ বছর পর।

মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির বাইরের কিনারার পৃথিবীর ইউনিয়নে যোগ দেওয়ার একটাই পথ রইল - স্পেস কোঅর্ডিনেট পরিবর্তন করা,যার ফলাফলে মানুষের পুরো জগতটাই পাল্টে যাবে,পাল্টে যাবে তারা গুলোর অবস্থান। বুদ্ধিমান সত্ত্বা হোমো সেপিয়েন্স এ শর্ত সাপেক্ষে টেকরিয়ন ইউনিয়নে যোগ দেবে কিনা তা সিদ্ধান্ত নেবার জন্য random ফাংশন হিসাবে বেছে নেওয়া হয়েছিল আপনাকে। আপনার জন্মের অনেক আগেই আমরা আপনাকে বেছে নিয়েছি। এই মুহুর্তে আপনিই কেবল টেকর সিগন্যালগুলো বিশ্লেষন করতে পারছেন কারন পরাবাস্তব ভাবে আপনাকে টেকরীয়ন বলয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। আপনার সিদ্ধান্ত বাছাই এর উপর নির্ভর করছে ওয়াটার প্ল্যানেট এর ভবিষ্যত।

আপনার উত্তর হ্যাঁ হলে সোলার সিস্টেম এর স্পেস টাইম এর কোঅর্ডিনেট পাল্টাতে থাকবে। পৃথিবী নিজেকে আবিষ্কার করবে ১০০০০০ বছর পরের সময়ে এবং উত্তর না হলে আপনি নিও এর বেস অর্ডিনেট এ ফিরে যাবেন। স্মৃতি থেকে মুছে যাবে টেকর ইউনিয়ন। " ডঃ ফিবন এর সামনে যেন সব পরিষ্কার হতে শুরু করেছে। টেকরীয়নরা কিভাবে মানুষের জীবনকে নিয়ন্ত্রন করছে।

স্পেস ট্রেনিং এ খারাপ করা সত্ত্বেও কিভাবে তার চাকরী হলো নিও স্টেশনে। ডঃ ফিবন দ্রুত চিন্তা করতে লাগলেন। চোখের সামনে ভেসে উঠল মানুষ,পথিবী,প্রকৃতি। অবচেতন মনে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন ডঃ ফিবন। ট্রান্সমিটার মডিউল এ দ্রুত লিখতে লাগলেন " মানব জাতি এত দুর পর্যন্ত হেঁটে এসেছে একা একা, মানুষ জানে যোগ্যরাই টিকে থাকে।

স্বাধীনতা মানুষের ধর্ম। মানুষ ঠিকই একদিন ভেদ করবে সৃষ্টি রহস্য। আমাদের অবস্থান ও সময় মানুষের ইতিহাসকে বহন করে। মানবজাতি মহাজাগতিক সভ্যতায় নিজেদের ইতিহাস বিসর্জন দিয়ে কখনোই যোগ দেবে না। অন্তহীন পথে আমরা একা একা হাঁটতে চাই।

" একটা আলোর ছটা যেন পুরো নিওকে গ্রাস করে ফেলল। ডঃ ফিবন বুঝতে পারলেন না আলোর ছটার রহস্য।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।