আমরা যদি না জাগি মা, কেমনে সকাল হবে...
এখন কী অবস্থা, জানি না। আগে হটমেইল একাউন্ট সহজে খোলা গেলেও এমএসএন ডোমেইনের (@msn.com) ইমেইল একাউন্ট সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ছিল না। খুব সম্ভবত এটি শুধু মার্কিন মুল্লুকের জন্যই উন্মুক্ত ছিল। তবে এর বাইরে থেকেও খোলা যেতো। বিশেষ একটি কৌশল অবলম্বন করে এর মতো ইমেইল একাউন্ট বহু খুলেছি একসময়।
শুধু তাই নয়, হটমেইল ও এমএসএনের ইমেইল ঠিকানা ব্যবহার করে কিভাবে কিভাবে যেন বিভিন্ন নামকরা প্রতিষ্ঠানের ডোমেইনের নামেও ইমেইল ঠিকানা খোলা যেতো। সে সময়, প্রায় এক যুগ আগের কথা, একটি আন্ডারগ্রাউন্ড ফোরামে দাবি করা হল যে, এটি হটমেইলের একটি বাগ এবং এই বাগের সুযোগ নিয়ে নিজের ইচ্ছেমতো ইমেইল ঠিকানা নিতে পারেন যে কেউ। কয়েকটি মন্তব্যে দেখলাম, , , ইতিমধ্যে কেউ কেউ নিয়েছেন। লোভনীয় ব্যাপার, সন্দেহ নেই! ওই ফোরামেই এ সংক্রান্ত একটি পূর্ণাঙ্গ টিউটোরিয়াল পেয়ে কাজে নেমে পড়ি অচিরেই। বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান খুঁজতে গিয়ে আমার প্রথমেই মনে এল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নাম।
খালেদা জিয়া তখন বাংলাদেশের সবচেয়ে ক্ষমতাধর লোক। তার কার্যালয় সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি ওয়েবসাইটও তখন চালু হয়েছে- www .pmo. gov .bd
ভাবলাম, খুলবো যখন, নিজের নামে খোলাই ভালো। দ্রুতই হটমেইলের নির্দিষ্ট রেজিস্ট্রেশন ফর্ম পূরণ করে নিচের দিকে কাঙ্খিত ইমেইল ঠিকানা দিয়ে দিলাম- . বারকয়েক ওকে-টোকে দিয়ে মাইক্রোসফটের প্রমোশনালে বাধ্যতামূলক সম্মতি জ্ঞাপন করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করি। উত্তেজনা ছিলই একটা স্বাভাবিকভাবে- প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের নামে ইমেইল ঠিকানা পাওয়া সহজ ব্যাপার না! তবে কয়েক মিনিটের মধ্যেই বুঝলাম, ব্যাপারটা এতো সহজও না।
শেষ ধাপে যে ম্যাসেজটি পাওয়া গেল, তাতে মনের উত্তেজনা মাথায় উঠে গেল। ম্যাসেজে বলা হল, pmo.gov.bd ডোমেইনের কী এক ইমেইল ঠিকানায় আমার প্রাসঙ্গিক তথ্যসহ তারা একটি মেইল পাঠিয়েছে ভেরিফিকেশনের জন্য। বলা হল, যেন দ্রুত ওই মেইল চেক করে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করি। কী আজব কান্ড! কথা তো এইরকম ছিল না! টিউটোরিয়ালেও ভেরিফিকেশনের কোনো উল্লেখ ছিল না। মেজাজ গেল বিগড়ে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ওয়েবমাস্টার নিশ্চয়ই এই ইমেইল পাবেন। তাদের ডোমেইন ব্যবহার করে কেউ একজন ইমেইল একাউন্ট খোলার চেষ্টা করেছে- এটাও তাদের না বোঝার কথা নয়। তাছাড়া মেইলের সঙ্গে আমার আইপি যাওয়াও অসম্ভব কিছু নয়। আর আইপি পাওয়া গেলে আমাকে শনাক্ত করাও তাদের জন্য এমন কোনো ব্যাপার না।
ভয়ে ভয়ে কাটলো কয়েকটি দিন।
জানতাম, চাইলে তারা আমার গর্দভসম কাজটাকে রাষ্ট্রদ্রোহিতার পর্যায়েও নিয়ে যেতে পারে আইনের মারপ্যাঁচে। তবে সৌভাগ্য আমার, দেশটির নাম ছিল বাংলাদেশ। এবং আল্লাহপাকের অসীম রহমতে সেই দেশের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ব্যাপারটি বুঝে উঠতে পারেনি!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।