আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজধানীর সূত্রাপুরে জমির দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ কর্মীরা একটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর করে (:যা দেখাচ্ছে ডিজিটাল ছেলেরা.......নাকি শত্রুর হাতে ইস্যু তুলে দেয়ার পায়তারা!!!)



রাজধানীর সূত্রাপুরে জমির দখলকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ কর্মীরা একটি মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর করে : নয়া দিগন্ত রাজধানীর সূত্রাপুরে অর্ধশত বছরের পুরনো শিবমন্দিরটি ভেঙে ফেলেছে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা। এ সময় মন্দিরের আশপাশের লোকজনকে বেধড়ক মারধর করে ওই এলাকা থেকে তাদের উচ্ছেদের চেষ্টা চালায় তারা। থানার পেছনেই এ ঘটনা ঘটলেও পুলিশ ছিল নির্বিকার। থানার সেকেন্ড অফিসার ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসীদের মদদ দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল সšধ্যায় সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘কোনো মন্দির ভাঙার ঘটনা ঘটেনি।

ওখানে কোনো মন্দির ছিল না, মাত্র কয়েকটি মূর্তি ছিল’। গতকাল রাত সোয়া ৮টা পর্যন্ত এ ঘটনায় থানা কোনো মামলা গ্রহণ করেনি। এর আগেও এই সন্ত্রাসী বাহিনী গত ৩০ মার্চ ওই এলাকা থেকে ১৩টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে। সূত্রাপুর থানার পেছনে মাত্র ২০ গজ দূরে গতকাল সকালে এই শিবমন্দির ভাঙার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র জানায়, এখানে ৩২ কাঠা স¤পত্তি রয়েছে।

যেখানে হিন্দু-মুসলমান মিলে মোট ৬৮টি পরিবারের বসবাস। এই স¤পত্তির ওপর দীর্ঘদিনের কুনজর ছিল ওই এলাকার বাসিন্দা মাহবুবুর রহমানের। মাহবুবুর রহমান মারা যাওয়ার পরও তার ভাই সালেহ এবং দুই ছেলে দিপু ও আসাদ ওই স¤পত্তি দখলের চেষ্টা চালায়। দীর্ঘদিন পর তারা গত ৩০ মার্চ সেখান থেকে ১৩টি হিন্দু পরিবার উচ্ছেদ করে তাদের স¤পত্তি দখল করে নেয়। সেখানে তারা ৮৮, ৯৬ এবং ৯৭ দাগের স¤পত্তি দখল করে।

গতকাল তারা ৯৫ নম্বর দাগের স¤পত্তি দখলের জন্য সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের নিয়ে জড়ো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এই বাড়ির পাশেই ছিল দু’টি সরকারি গাছ। শত বছরের পুরনো ওই গাছ দু’টি তারা কাটা শুরু করলে স্থানীয় লোকজন বাধা দেন। এ সময় ওই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল এবং সালাম দূরে দাঁড়িয়েছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। সূত্র জানায়, বেলা ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন ওই গাছ কাটা বাধা দেয়ায় তারা লোকজনকে মারধর করে।

এতে আলী আকবর, লালচান, আলম চান, নাদিম এবং রাহেলাসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে পাঁচজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা জানান, সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলার পাশাপাশি ওই বাড়ির পাশের শিবমন্দিরে হামলা করে মন্দিরটি ভেঙে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়। স্থানীয় সূত্র জানায়, আর এম দাশ রোডের এই শিবমন্দিরটি অর্ধ শতাধিক বছরের পুরনো। ১৯৭১ সালে মন্দিরটি ভেঙে ফেলে পাক বাহিনী।

এর পর থেকে ছোট্ট জায়গায় প্রতিমা সাজিয়ে সেখানেই পূজা-অর্চনা করে আসছিলেন স্থানীয় হিন্দু স¤প্রদায়ের লোকজন। কিন্ত– গতকাল সেটি পুরোপুরি মাটির সাথে মিশিয়ে দেয় সরকার সমর্থক দখলবাজরা। দখলবাজরা শিব, কালী এবং সর¯¦তীর প্রতিমা ভেঙে ফেলে। প্রায় তিন ঘন্টা ধরে সন্ত্রাসীরা নিজেদের আওয়ামী লীগ সমর্থক পরিচয় দিয়ে এই তাণ্ডব চালায়। স্থানীয় লোকজন এই তাণ্ডবলীলা প্রত্যক্ষ করলেও সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পাননি।

স্থানীয় লোকজন জানান, ঘটনার সময় থানার সেকেন্ড অফিসার ঘটনাস্থলেই উপস্থিত ছিলেন। তার ইšধনেই সন্ত্রাসীরা এই তাণ্ডব চালায়। সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন থেকে ওই চক্রটি এই স¤পত্তি দখলের চেষ্টা করে এলেও তারা ¯¦ার্থক হয়নি। স¤প্রতি সরকারি দলের ছত্রছায়ায় তারা আবারো চেষ্টা শুরু করে। গত ৩০ মার্চ ওই এলাকা থেকে এই চক্রটি মোট ১৩টি হিন্দু পরিবারকে উচ্ছেদ করে।

ওই পরিবারগুলো এখন কোথায় আছে সে হদিসও নেই। ১৩টি পরিবারের উচ্ছেদের ব্যাপারে পুলিশও কিছু জানে না। ঘটনার দিন ওই পরিবারগুলোর মালামাল লুট করে নিয়ে যায় দখলবাজরা। এ দিকে গতকালের ঘটনার পরই আহতরা থানায় যান মামলা করার জন্য। একই সাথে মন্দির কমিটির লোকজনও থানায় যান।

কিন্ত– থানা পুলিশ মামলা গ্রহণে গড়িমসি করে। রাত সোয়া ৮টায় থানার ডিউটি অফিসার জাহাঙ্গীরের সাথে ফোনে কথা বললে তিনি জানান, ‘একজন মামলা করতে এসেছেন, তবে এখনো মামলা হয়নি’। রাত ৮টার দিকে যোগাযোগ করা হয়েছিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফাজ্জল হোসেনের সাথে। তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, ওখানে কোনো মন্দির ছিল না। কোনো মন্দির ভাঙার ঘটনা ঘটেনি।

তিনি বলেন, ওখানে ছিল কয়েকটি প্রতিমা। প্রতিমা ভাঙা বৈধ কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, ‘আমি তো মামলা দায়েরের জন্য বলেছি’। যারা মন্দির ভেঙেছে তাদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় আছে কি না এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘তাদের পলিটিক্যাল আইডেন্টিটি নেই’। ঘটনাস্থলটি থানা থেকে কত দূরে এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পেছনেই’।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।