...
''তেলেসমাতি পাথর আছে শাহ কালুর মাজারে, এথা হতে সেথা যায় রাতের অন্ধকারে''।
জনশ্রুতি রয়েছে, শেখ শাহ কালুর মাজারে একটি বড় আকারের পাথর রয়েছে। সে পাথর না কি রাতের বেলায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়াত।
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের চান্দভরাং গ্রামের একেবারে পাশ ঘেঁষেই শাহ কালুর মাজারটি অবস্থিত। এই চান্দভরাং গ্রামটি নানা কারণে ঐতিহ্যের ধারক-বাহক।
পীর-ফকিরের সংস্পর্শের পাশাপাশি অনেক সিদ্ধ সাধু সন্নাসীরও মানব আত্মার পরম প্রাপ্তি অধ্যাত্মিকতার ক্ষেত্রে একে অন্যের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ও নিবির যোগাযোগ সে সময়। এ ছাড়াও গ্রামের বিখ্যাত চৌধুরী পরিবারের অর্জিত সুনাম ও সুখ্যাতি এ অঞ্চলকে শোভিত করেছে বহুলাংশে।
হযতর শেখ শাহ কালুর বংশ পরিচিতি
হযরত শাহ জালাল (রহ.) ইয়ামনীর সফর সঙ্গীঁ ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সঙ্গী ছিলেন হযরত শেখ শাহ কালু, তার পিতা হযরত শাহ চান্দ আরব দেশের কোরাইশ বংশের লোক ছিলেন। তিনি হযরত শাহ জালাল (রহ.)-এর মামা পীর-দরবেশ সৈয়দ আহমদ কবীরের মুরিদ ছিলেন।
হযরত আহমদ কবীরের সান্নিধ্য লাভের পর হযরত শাহ চান্দ ইসলামের দাওয়াত ও ধর্ম প্রচারের উদ্দেশে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন।
জানা যায়, এক সময় হযরত শেখ শাহ কালু পিতার মাধ্যমে আহমদ কবীরের আস্তানায় হযরত শাহ জালালের সঙ্গে পরিচয় ঘটে। সেই থেকে শেখ কালু হযরত শাহ জালালের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন ও ইসলাম প্রচারে হযরত শাহ জালালের সফরসঙ্গী হন। হযরত শাহ জালাল (রহ.) সিলেট পদার্পণের পর তার সফরসঙ্গীঁ শেখ শাহ কালুকে নির্দেশ দিলেন জগন্নাথপুর অভিমুখে যাত্রা করার জন্য। নির্দেশ পেয়ে তিনি জগন্নাথপুরের উদ্দেশে গমন করেন।
তখনকার সময় জগন্নাথপুরের রাজাধিপতি ছিলেন রমানাথ মিশ্র, শেখ শাহ কালু যাত্রাপথে জগন্নাথপুরের কাছে রসুলপুরে রত হন।
এ সময় অত্র অঞ্চলে তার আগমনের সংবাদ পেয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে বিশেষ এক আগ্রহের সৃষ্টি হয়। সঙ্গত কারণেই মানুষ শাহ কালুর প্রতি বিশেষ দুর্বলতা প্রদর্শন করতে থাকে, এমনকি অনেক রোগাক্রান্ত রোগীও তার সংস্পর্শে এসে দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে থাকে। বিষয়টি তখন জগন্নাথপুর রাজ্যের রাজা শাহ কালুর কেরামতির কথা জানতে পান। রাজ ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে দেখা করে মায়ের অসুস্থতার কথা বর্ণনা করেন। এবং বলেন, তার মা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অনেক বৈদ্য-ওঝা-কবিরাজ সবই দেখিয়েছেন।
কিন্তু কাক্সিক্ষত ফলাফল পাওয়া যায়নি। শাহ কালু রাজাকে আশ্বস্ত করেন এবং রাজা রমনাথ মিশ্রের মায়ের জন্য আল্লাহপাকের কাছে বিশেষ মোনাজাত করেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে রাজা রমানাথ মিশ্রের মা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। রাজা শাহ কালুর প্রতি অত্যন্ত প্রীতি হন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এদিকে শাহ কালুর পিতা হযরত শাহ চান্দ তার পুত্রের খোঁজে সুদূর ইয়েমেন থেকে একা একা সিলেটে আগমন করেন।
তিনি হযরত শাহ জালালের দরবারে হাজির হয়ে সর্বাগ্রে তার পুত্রের কথা জিজ্ঞেস করেন। তখন হযরত শাহ জালাল (রাহ.) শাহ চান্দকে অবহিত করেন তার পুত্র শাহ কালু জগন্নাথপুরে অবস্থানপূর্বক ইসলাম প্রচারের কাজে নিয়োজিত আছেন। জানতে পেরে পিতা শাহ শাহ চান্দ পুত্রের প্রতি প্রবল অনুরাগের বশবর্তী হয়ে কালবিলম্ব না করে পুত্রের খোঁজে জগন্নাথপুর অঞ্চলের দিকে রওয়ানা দেন। পথিমধ্যে বিশ্বনাথ ও জগন্নাথপুরের মধ্যবর্তী অংশে ভরাং নামক স্থানে দৈব্যক্রমে পিতা-পুত্রের মিলন ঘটে। আর সেই থেকে পিতা-পুত্র মিলে ভরাং নামক স্থানে নতুনভাবে ধর্ম প্রচারকেন্দ্র নির্মাণ করেন।
পরবর্তী সময়ে ভরাং নামক স্থান হযরত শাহ চান্দের নামানুসারে চান্দভরাং গ্রামের নামকরণ করা হয়। সেই থেকে হযরত শাহ চান্দ ও শাহ কালু চান্দভরাং গ্রামে বসবাস করে ধর্ম প্রচার করেন। কালক্রমে ধর্ম প্রচাররত অবস্থায় পিতা-পুত্রের মৃত্যু হলে তাদের চান্দভরাং গ্রামে সমাহিত করা হয়। পিতা-পুত্র উভয়ের মাজার (কবর) পাশাপাশি অল্প বিস্তর দূরে বিদ্যমান রয়েছে। এই চান্দভরাং গ্রামকে ঘিরে আরো নানা কাহিনী লোকমুখে প্রচলিত আছে, তন্মধ্যে চৌধুরী বাড়ির দীঘি নিয়ে কিংবদন্তি রয়েছে।
ওই দীঘি না কি প্রকৃতি প্রদত্ত। আবার দ্বিমতও পোষণ করেন অনেকে, কেউ কেউ বলেন, চান্দভরাং চৌধুরী বাড়ির পূর্বপুরুষরা এলাকায় জলের অভাব দূরীকরণের জন্য এ দীঘি খনন করেন। দীঘিটি হযরত শেখ শাহ কালুর মাজার সংলগ্ন উত্তর পাশে। কথিত আছে, এককালে রত্না নদী চান্দভরাং গ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছিল। কালের বিবর্তন কিংবা প্রবর্তনে নদীটি ভরাট হয়ে যায়।
বর্তমানে যে স্থানে দীঘিটি বিদ্যমান আছে সেই স্থানটি ছিল খুব গভীর। এই গভীরতা থেকে আয়তনের বিশালতায় এ দীঘির উৎপত্তি ঘটে। কথিত আছে আগেকার দিনে এ দীঘিতে না কি সোনার ডেক ও ডেকসি (বাসনপত্র) ভাসমান অবস্থায় দৃশ্যমান হতো। মানুষের প্রয়োজনে বিবাহ কিংবা অন্যান্য অনুষ্ঠানাদিতে এগুলোকে নজরানা দিয়ে লোকজন কাজে লাগাতেন। পরে কোনো এক সময় থেকে এগুলা আর পানির ওপর ভাসতে দেখা যায়নি।
তবে এখনো চৌধুরী বাড়ির দীঘি অতীতকালের স্মৃতি ও ঐতিহ্য বহন করে আসছে। তেলেসমাতি পাথর আছে শাহ কালুর মাজারে, এথা হতে সেথা যায় রাতের অন্ধকারে’
জনশ্রুতি রয়েছে, শেখ শাহ কালুর মাজারে একটি বড় আকারের পাথর রয়েছে। সে পাথর না কি রাতের বেলায় এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে বেড়াত।
সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের চান্দভরাং গ্রামের একেবারে পাশ ঘেঁষেই শাহ কালুর মাজারটি অবস্থিত। এই চান্দভরাং গ্রামটি নানা কারণে ঐতিহ্যের ধারক-বাহক।
পীর-ফকিরের সংস্পর্শের পাশাপাশি অনেক সিদ্ধ সাধু সন্নাসীরও মানব আত্মার পরম প্রাপ্তি অধ্যাত্মিকতার ক্ষেত্রে একে অন্যের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক ও নিবির যোগাযোগ সে সময়। এ ছাড়াও গ্রামের বিখ্যাত চৌধুরী পরিবারের অর্জিত সুনাম ও সুখ্যাতি এ অঞ্চলকে শোভিত করেছে বহুলাংশে।
হযতর শেখ শাহ কালুর বংশ পরিচিতি
হযরত শাহ জালাল (রহ.) ইয়ামনীর সফর সঙ্গীঁ ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সঙ্গী ছিলেন হযরত শেখ শাহ কালু, তার পিতা হযরত শাহ চান্দ আরব দেশের কোরাইশ বংশের লোক ছিলেন। তিনি হযরত শাহ জালাল (রহ.)-এর মামা পীর-দরবেশ সৈয়দ আহমদ কবীরের মুরিদ ছিলেন।
হযরত আহমদ কবীরের সান্নিধ্য লাভের পর হযরত শাহ চান্দ ইসলামের দাওয়াত ও ধর্ম প্রচারের উদ্দেশে নিজেকে আত্মনিয়োগ করেন।
জানা যায়, এক সময় হযরত শেখ শাহ কালু পিতার মাধ্যমে আহমদ কবীরের আস্তানায় হযরত শাহ জালালের সঙ্গে পরিচয় ঘটে। সেই থেকে শেখ কালু হযরত শাহ জালালের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন ও ইসলাম প্রচারে হযরত শাহ জালালের সফরসঙ্গী হন। হযরত শাহ জালাল (রহ.) সিলেট পদার্পণের পর তার সফরসঙ্গীঁ শেখ শাহ কালুকে নির্দেশ দিলেন জগন্নাথপুর অভিমুখে যাত্রা করার জন্য। নির্দেশ পেয়ে তিনি জগন্নাথপুরের উদ্দেশে গমন করেন।
তখনকার সময় জগন্নাথপুরের রাজাধিপতি ছিলেন রমানাথ মিশ্র, শেখ শাহ কালু যাত্রাপথে জগন্নাথপুরের কাছে রসুলপুরে রত হন।
এ সময় অত্র অঞ্চলে তার আগমনের সংবাদ পেয়ে স্থানীয় লোকজনের মধ্যে বিশেষ এক আগ্রহের সৃষ্টি হয়। সঙ্গত কারণেই মানুষ শাহ কালুর প্রতি বিশেষ দুর্বলতা প্রদর্শন করতে থাকে, এমনকি অনেক রোগাক্রান্ত রোগীও তার সংস্পর্শে এসে দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে থাকে। বিষয়টি তখন জগন্নাথপুর রাজ্যের রাজা শাহ কালুর কেরামতির কথা জানতে পান। রাজ ব্যক্তিগতভাবে তার সঙ্গে দেখা করে মায়ের অসুস্থতার কথা বর্ণনা করেন। এবং বলেন, তার মা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অনেক বৈদ্য-ওঝা-কবিরাজ সবই দেখিয়েছেন।
কিন্তু কাক্সিক্ষত ফলাফল পাওয়া যায়নি। শাহ কালু রাজাকে আশ্বস্ত করেন এবং রাজা রমনাথ মিশ্রের মায়ের জন্য আল্লাহপাকের কাছে বিশেষ মোনাজাত করেন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে রাজা রমানাথ মিশ্রের মা সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠেন। রাজা শাহ কালুর প্রতি অত্যন্ত প্রীতি হন ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। এদিকে শাহ কালুর পিতা হযরত শাহ চান্দ তার পুত্রের খোঁজে সুদূর ইয়েমেন থেকে একা একা সিলেটে আগমন করেন।
তিনি হযরত শাহ জালালের দরবারে হাজির হয়ে সর্বাগ্রে তার পুত্রের কথা জিজ্ঞেস করেন। তখন হযরত শাহ জালাল (রাহ.) শাহ চান্দকে অবহিত করেন তার পুত্র শাহ কালু জগন্নাথপুরে অবস্থানপূর্বক ইসলাম প্রচারের কাজে নিয়োজিত আছেন। জানতে পেরে পিতা শাহ শাহ চান্দ পুত্রের প্রতি প্রবল অনুরাগের বশবর্তী হয়ে কালবিলম্ব না করে পুত্রের খোঁজে জগন্নাথপুর অঞ্চলের দিকে রওয়ানা দেন। পথিমধ্যে বিশ্বনাথ ও জগন্নাথপুরের মধ্যবর্তী অংশে ভরাং নামক স্থানে দৈব্যক্রমে পিতা-পুত্রের মিলন ঘটে। আর সেই থেকে পিতা-পুত্র মিলে ভরাং নামক স্থানে নতুনভাবে ধর্ম প্রচারকেন্দ্র নির্মাণ করেন।
পরবর্তী সময়ে ভরাং নামক স্থান হযরত শাহ চান্দের নামানুসারে চান্দভরাং গ্রামের নামকরণ করা হয়। সেই থেকে হযরত শাহ চান্দ ও শাহ কালু চান্দভরাং গ্রামে বসবাস করে ধর্ম প্রচার করেন। কালক্রমে ধর্ম প্রচাররত অবস্থায় পিতা-পুত্রের মৃত্যু হলে তাদের চান্দভরাং গ্রামে সমাহিত করা হয়। পিতা-পুত্র উভয়ের মাজার (কবর) পাশাপাশি অল্প বিস্তর দূরে বিদ্যমান রয়েছে। এই চান্দভরাং গ্রামকে ঘিরে আরো নানা কাহিনী লোকমুখে প্রচলিত আছে, তন্মধ্যে চৌধুরী বাড়ির দীঘি নিয়ে কিংবদন্তি রয়েছে।
ওই দীঘি না কি প্রকৃতি প্রদত্ত। আবার দ্বিমতও পোষণ করেন অনেকে, কেউ কেউ বলেন, চান্দভরাং চৌধুরী বাড়ির পূর্বপুরুষরা এলাকায় জলের অভাব দূরীকরণের জন্য এ দীঘি খনন করেন। দীঘিটি হযরত শেখ শাহ কালুর মাজার সংলগ্ন উত্তর পাশে। কথিত আছে, এককালে রত্না নদী চান্দভরাং গ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ছিল। কালের বিবর্তন কিংবা প্রবর্তনে নদীটি ভরাট হয়ে যায়।
বর্তমানে যে স্থানে দীঘিটি বিদ্যমান আছে সেই স্থানটি ছিল খুব গভীর। এই গভীরতা থেকে আয়তনের বিশালতায় এ দীঘির উৎপত্তি ঘটে। কথিত আছে আগেকার দিনে এ দীঘিতে না কি সোনার ডেক ও ডেকসি (বাসনপত্র) ভাসমান অবস্থায় দৃশ্যমান হতো। মানুষের প্রয়োজনে বিবাহ কিংবা অন্যান্য অনুষ্ঠানাদিতে এগুলোকে নজরানা দিয়ে লোকজন কাজে লাগাতেন। পরে কোনো এক সময় থেকে এগুলা আর পানির ওপর ভাসতে দেখা যায়নি।
তবে এখনো চৌধুরী বাড়ির দীঘি অতীতকালের স্মৃতি ও ঐতিহ্য বহন করে আসছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।