মানুষ বাচেঁ তার কর্মে!
বি.টি.ভি নিয়মিত দেখি না অনেকদিন হল !
কবে থেকে যে দেখি না তাও সঠিক বলতে পারি না !
তবে এটুকু বলতে পারি, যখন থেকে আকাশ সংস্কৃতির বাতাস এই শরীরে লেগেছে
ঠিক তখন থেকেই বিটিভির এই পচিত-গলিত বাতাস আর ধারে কাছে ঘেঁষে না !
তবে কালে ভদ্রে তার পরিশোধিত কিছু বাতাস এসে গায়ে লাগে-
এই যেমন “ইত্যাদি” অনুষ্ঠানের সময় !
যেদিন “ইত্যাদি” দেখায় সেদিন বিটিভি’র সামনে ঠিকই মন্ত্রমুগ্ধের মত বসে থাকি!
আরেকটা কারণেও মাঝে মাঝে বসে থাকতে হয়
কখন?
হে,হে, যখন ডিশ এর লাইন থাকেনা !
তো সেরকমই একটি দিন ছিল-গতবুধবার
গত কয়েকদিন ধরে ঘূর্ণিঝড়-সাইক্লোন এর যে তাণ্ডব দেশের উপকূলীয় অঞ্চলে
দেখা যাচ্ছে-তারই কিছু প্রভাব শহরেও দেখা গেছে ।
এই যেমন গত দুইদিন ডিশের লাইন ছিল না আমাদের ।
বৃষ্টি আর ঝড়ে ডিশ লাইনের ট্রান্সমিটার জ্বলে-পুড়ে ছারখাক
তবু মাথা নোয়াবার নয়!?
না,না, ডিশ লাইন ঠিকই মাথা থুবড়ে পড়ে আছে রাস্তায় !
তবে আমাদের ডিশ লাইনের লোকেরা খাম্বায় ঝুলে মাথা উচুঁ করে কাজ করছে !
আচ্ছা, যাই হোক এবার বিটিভি’র কথায় আসি-
অনেকক্ষণ ডিশ লাইনের জন্য বসে থেকে শেষমেষ
সাড়ে আটটায় বিটিভি’ই অন করলাম...
কিছুক্ষণ বিজ্ঞাপনের ফুলঝুড়ি ছুটিয়ে
একজন অনুষ্ঠান ঘোষণাকারী এসে বলল-
আপনারা এখন দেখবেন-ধারাবাহিক নাটকঃ
মফিজ-মোখলেস-কুদ্দুস !
আচ্ছা ঠিক আছে দেখা শুরু করলাম-
২ মিনিট পর আবার বিজ্ঞাপন !
আচ্ছা ঠিক আছে-
তারপর আবার নাটক শুরু-
৩ মিনিট দেখালো-এরপর আবার বিজ্ঞাপন !
আইচ্ছা, তাও ঠিক আছে !?
এরপর আবার নাটক ...
এরপর হঠাৎ করে টিভি স্ক্রীণে লেখা আসলো-
ধারাবাহিকটির বাকী অংশ দেখবেন ১০.৪০ মিনিটে !
তখন ঘড়িতে বাজে মাত্র ৯.১০ মিনিট ।
বিটিভি’তে রাত ১০টার আগে আর কোনো খবর-টবর নেই
তাহলে, এখন কী হতে পারে? ভাবতে থাকলাম......
ভাবতে ভাবতে মনে হল, সরকারদলীয় কোনো হোমরা-চোমরাকে
ধরে-বেঁধে হয়ত টকশোতে চালান করে দিবে !
কিন্তু না !
বিটিভি’র জ্ঞানী-গুণী কর্মকর্তারা তাদের কর্মের এমন বাহার দেখালেন যে-
তাহা আমার চর্মচক্ষে বড়ই অবিশ্বাস্য, অভূতপূর্ব ও অকল্পনীয় মনে হইল !
কী দেখিয়া আমার এহেন অবস্থা তাহা আপনাদিগের বলিয়া যাই-
আপনারা আপাতত শ্রবণ করুন...
কিছুক্ষণ বিজ্ঞাপন দেখিয়ে এরপর যখন
ঐ একই ধারাভাষ্যকার থুক্কু! অনুষ্ঠান উপস্থাপনকারী?
আরেকটি ধারাবাহিক নাটকের ঘোষণা দিল তখন নিজের কানকেও বিশ্বাস হচ্ছিল না !
যাহ, বাবা একি শোনলাম? জন্মেও এরকম কাণ্ড দেখিনি!
কোনো চ্যানেলে আজ পর্যন্ত একটি নাটকের ভিতর আরেকটি নাটক চলতে দেখিনি
কিন্তু বিটিভি এইটা কী নজির দেখাল? বুঝতে পারলাম না!
হতে পারে এটা তাদের একধরণের দিন বদলের চেষ্টা !?
এখন তো আবার দিনবদলের সরকার !
মোসাহেবি-তোসাহেবি তো চলছেই, তার সাথে এরকম উদ্ভট কাণ্ডকারখানা যোগ করলে
ফলাফল কী দাঁড়ায় বলুন তো ?
প্রবাদ আছে- নতুন বোতলে পুরনো মদ !
কিন্তু বিটিভি সেটা ও করে না!
তারা পুরনো বোতলে পুরনো মদই ভরে, শুধু বোতলের ক্যাপটা নতুন !
এই ক্যাপটা হচ্ছে ভোল যাহা বিটিভি প্রতি পাঁচ বছর পর পর পালটায় !
সুতরাং আমার মনে হয়, তাদের উচিত এখন এইসব মেক-আপ, গেট-আপ চেঞ্জ বাদ দিয়ে-
নিজেকে নতুনরুপে তৈরি করা, তাহলেই এটা একটা Competitive চ্যানেলে পরিণত হবে ।
এজন্য তাদের প্রথমেই দরকার-স্বায়ত্তশাসন যা প্রতি সরকারের আমলেই
শুভংকরের ফাঁকি হিসেবে থেকে যাচ্ছে...
এর কারণ ও অজানা নয় ।
প্রতিটি সরকারই চায় নিজের কুক্ষিগতে রেখে বিটিভি’কে তাদের ইচ্ছামত ব্যবহার করতে-
যাহাই যুগ যুগ ধরে কাল হয়ে আছে বিটিভি’র জন্য ।
তাই, কোনো সরকার যদি সত্যি সত্যিই দিনবদল চায়
তাদের উচিত হবে বিটিভি’তে নির্দলীয় যোগ্যলোক নিয়োগ করে তা-
সায়ত্তশাসনে ছেড়ে দেয়া
তাতেই বরঞ্চ বিটিভি আবার তার সেই সোনালী দিন ফিরে পাবে
পাবে গণমানুষের ভালোবাসা আর আস্থা...
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।