প্রশ্ন : ভালো ছাত্র ও ভালো মানুষ হওয়ার ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থীর করণীয় কী?
উত্তর : একজন ভালো ছাত্রের সব সার্থকতা ভালো মানুষ হওয়ার মধ্যে। ভালো মানুষ হতে না পারলে ভালো ছাত্রের সব অর্জন বৃথা যায়। তাই শিক্ষার্থীদের ভালো মানুষ হতে হলে প্রাধিকার ভিত্তিতে সত্য কথা বলা, হিংসা পরিহার করা, অন্যায়ের প্রতিবাদ করা, আত্দবিশ্বাসী ও পরোপকারী হওয়ার মতো অন্যান্য সব মানবিক গুণগুলো জীবনের শুরুতেই পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে চর্চা করে নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে হবে। মেধার সর্বোত্তম ব্যবহার করে সবার সহযোগিতা নিয়ে ভালো ছাত্র হওয়াটা হচ্ছে জীবনের দ্বিতীয় স্তর।
প্রশ্ন : ভালো ফলের জন্য পড়াশোনার নির্দিষ্ট রুটিনের গুরুত্ব কতটুকু? এ ক্ষেত্রে গৃহশিক্ষক বা কোচিংয়ের প্রয়োজন আছে কী?
উত্তর : ভালো ফলাফলের জন্য পড়াশোনার নির্দিষ্ট রুটিন অবশ্যই বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এটি শিক্ষার্থীর চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে। কম মেধাবী, স্লো লার্নার, অমনোযোগী ও অবহেলাকারী এবং জনাকীর্ণ শ্রেণীকক্ষের শিক্ষার্থীর জন্য গৃহশিক্ষক বা কোচিংয়ের প্রয়োজন আছে।
প্রশ্ন : সহশিক্ষা কার্যক্রম পড়াশোনায় কী ধরনের প্রভাব ফেলে?
উত্তর : সহশিক্ষা কার্যক্রমে চর্চিত গুণাবলী যেমন_সময়ানুবর্তিতা, সহনশীলতা, বাধ্যবাধকতা, শারীরিক যোগ্যতা, দায়িত্ববোধ, একতা, মনোযোগ ইত্যাদি গড়ে ওঠে যা পড়াশোনায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলে। সহশিক্ষায় নেতৃত্বদানের গুণ পরবর্তী জীবনে নেতৃত্বদানের প্রবণতাকে ত্বরান্বিত এবং ফলপ্রসূ করে।
প্রশ্ন : তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষ পড়াশোনার ক্ষেত্রে কিভাবে সহায়ক হতে পারে?
উত্তর : তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষ শিক্ষার্থীর পড়াশোনাকে ঋদ্ধ করে।
অল্প সময়ে পড়াশোনার প্রস্তুতিকে বেগবান করে। দেশ ও বর্হিজগতের সংস্পর্শ শিক্ষার্থীর জ্ঞানার্জন ও এর যথাযথ প্রয়োগ দুটোকেই আরও অর্থবহ করে তোলে।
প্রশ্ন : সৃজনশীল পদ্ধতিতে পাসের হার বেড়েছে। শিক্ষার মান বৃদ্ধি পেয়েছে কী?
উত্তর : আমার পর্যর্বেক্ষণে সৃজনশীল পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের মাঝে স্বতঃস্ফূর্ত গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এ পদ্ধতি শিক্ষার মান ক্রমশ বাড়াবে বলে আমি আশাবাদী।
প্রশ্ন : দেশের শিক্ষার্থীরা সাধারণভাবে ইংরেজিতে দুর্বল। তা কাটাতে করণীয় কী?
উত্তর : ইংরেজি ভাষায় শিক্ষার্থীদের সহজাত ভীতি যাতে শিশুকাল থেকেই তাদের মধ্যে স্থায়ী না হয় তার উদ্যোগ নিতে হবে। এ ব্যাপারে বাবা-মার প্রাথমিক ভূমিকা থাকতে হবে। উনারা নিজেরা ইংরেজি বিষয়ে ততটা পারদর্শী না হলেও নিজগৃহে ইংরেজি বান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। ছোটদের ইংরেজি কার্টুন এবং মুভি দেখা ও শোনা ইত্যাদি বিষয়ে আকৃষ্ট করতে হবে।
বাড়িতে ইংরেজি পত্রিকা রাখা যেতে পারে। পরবর্তীতে স্কুলে ইংরেজি চর্চার ক্ষেত্রে শিক্ষকের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা, ইংরেজি গান শোনা, বিতর্ক করা, প্রতিদিন ৫টি নতুন ইংরেজি শব্দ শেখা, ইংরেজি উচ্চারণের জন্য ইংরেজি খবর শোনা, ইংরেজিতে ডায়েরি লিখার অভ্যাস করা, পঠিত বিষয় বুঝে পড়ে না দেখে লিখা ইত্যাদি উপায়ে ইংরেজি দুর্বলতা কাটানো সম্ভব। মোটকথা পারিপাশ্বর্িকতা ও প্রতিষ্ঠান থেকে ইংরেজি ভাষা নিজের মধ্যে ধীরে ধীরে ধারণ করতে হবে।
প্রশ্ন : শিক্ষার্থীদের বিপথগামিতা থেকে রুখতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের করণীয় কী? এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান কি ভূমিকা রাখতে পারে?
উত্তর : শিক্ষার্থীদের বিপথগামিতা রুখতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের প্রথম করণীয় তাদেরকে নিজেদের সঙ্গে একাত্দ করা। তাদের কথা গুরুত্বের সঙ্গে শোনা; তাদের মধ্যে বিশ্বাস জন্মানো যে 'তোমাদের সঙ্গে তোমাদের অভিভাবক এবং শিক্ষকগণ আছেন।
' শিক্ষার্থীরা অনেক সময়ই অভিভাবকের চাইতে শিক্ষকের কথা বেশি শুনে। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদেরকে পাঠদান ও গল্পের ছলে এবং ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে তাদেরকে অন্ধকার জীবনের হাতছানি থেকে দূরে রাখতে পারেন। এছাড়া সহশিক্ষা কার্যক্রমে সম্পৃক্ততা শিক্ষার্থীদের সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারে।
প্রশ্ন : ভিকারুননি্নসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভালো ফলাফলের পেছনে রহস্য কী?
উত্তর : ভিকারুনি্নসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ অন্তত দুটি দিক দিয়ে যেন একখণ্ড বাংলাদেশ। এখানে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত সব শ্রেণীর শিক্ষার্থী সমান সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে।
সেই সঙ্গে এখানে প্রতিটি শিক্ষার্থী মুক্ত পরিবেশে হেসেখেলে, শিক্ষক ও অভিভাবকের শাসনে ও আদরে এবং সহশিক্ষা কার্যক্রমে নিজেদের নিয়মিত সম্পৃক্ত রাখছে। এটিই প্রতিষ্ঠানটির ভালো ফলাফলের রহস্য।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।