কাহিনী: মাসুম মাহবুব
মুল গল্প: ছোট বেলায় রোড এক্সিডেন্টে অহন তার বাবা মা দুজনকে হারায়। পরে ছোট মামা তাকে লন্ডনে নিয়ে যায়। অহনের বাবার বিশাল সম্পতি দেখে শুনা রাখার দায়িত্ব পায় বড় খালা ফাতেমা। নি:সন্তান ফাতেমা কখনো এই সম্পতির প্রতি নুন্যতম লোভ দেখায়নি। অহন বড় হলে ফাতেমার ইচ্ছায় তাকে দেশে আসতে হয়।
কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার হয়ে অহন দেশের নাম কুড়াবে মায়ের এমন ইচ্ছা পুরনে অহন মোটেও কার্পণ্য করেনি। অবশেষে অহন দেশে আসতে প্রস্তত। এদিকে খালা অহনের জন্য মেয়ে দেখতে শুরু করে। ফাতেমা খালার প্রথম পছন্দের তালিকায় স্থান তার প্রতিবেশি বড় ডাক্তার সালাম সাহেবের এক মাত্র মেয়ে অর্পিতাকে। অর্পিতা ছোট বেলা থেকেই বেশ ছটপটে।
বেশ অহংকারী বলা চলে। বাবার আভিজাত্য পুরোটা তার আচরনে প্রকাশ পায়। ঘটনাক্রমে সালাম সাহেবের বাসায় আশ্রয় নেয় গ্রাম থেকে আসা দরিদ্র এক আত্বীয়া মুক্তা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তী হতে ঢাকায় আসে মুক্তা। অর্পিতাদের বাসায় থাকে সে।
অর্পিতার বাবা মা মুক্তাকে খুব পছন্দ করে। সমস্যা অর্পিতাকে নিয়ে, সে কিছুতেই মুক্তাকে পছন্দ করতে পারছেনা।
অর্পিতার প্রিয় কাজের একটি হল মুঠোফোনে সে অনেকের সাথে মজা করে। সেই মজার অনুসঙ্গ করে মুক্তাকে। অর্পিতা অনেক ছেলের সাথে ফোনে প্রেমের সমস্যের ভান করে।
বাস্তবে যখন ছেলে দেখতে চায় তখন পরিহাস করতে নিজের বদলে মুক্তাকে দেখিয়ে দেয়। মুক্তা প্রতিবাদ করতে পারেনা নিরবে বসে কাঁেদ। এর কিছুই জানেনা সালাম সাহেব বা মিসেস ছালাম। ফাতেমা খালা অহনের জন্য প্রস্তাব নিয়ে আসে অর্পিতার বাবা মার কাছে, তারা এক কথায় রাজি হয়।
ফাতেমা খালা অহনকে জানায় প্রতিবেশি অর্পিতার কথা।
খালার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই অহন অর্পিতাকে না দেখেই বিয়েতেই রাজি হয়। অহন লন্ডনে অর্পিতা দেশে দুজনে চলে ফোনালাপ। অহন লন্ডনে বড় হলেও মনে প্রানে খাটি বাঙ্গালী। কথা বলতে বলতে দুজনের মধ্যে বেশ ভাল সু সম্পর্ক্য তৈরী হয়। অর্পিতা অহনের কারনে অনেক পাল্টে যায়।
সারাজীবনের দুষ্টমী ছেলেমানুষী ভুলতে শুরু করে। ভাল বাসার মত বাসতে শুরু করে। অর্পিতা অহনের মাঝে খুজে পায় একজন প্রবাসির মধ্যে সত্যি দেশ প্রেম। দেশে বসে যারা বিদেশী সাজে তারাকি জানে প্রবাসে বসে অনেকই দেশের সংস্কৃতি লালন মনে মনে প্রানে। অর্পিতার মাঝে এই বিষয়টি খুব নারা দেয়।
মুক্তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। খুব মেধাবী বলে সবার কাছে বেশ প্রশংসশিত। বাসার সবাই খুব ভাল বাসলেও অর্পিতা বেশ অপছন্দ করে তাকে। নামাজী ধর্য্য শীল মুক্তা, সব কিছুর ফয়সালা খোজে সৃষ্টি কর্তার কাছে সাহায্যে হাত পেতে।
অহন দেশে আসে চলে বিয়ের প্রস্তুতি।
বিয়ের কার্ড দেয়া নেয়া চলে সবার মাঝে।
এক রাতে অর্পিতাকে ফোনে অহন বলে, আপনাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করছে। অহন জানায় বিয়ের পরেই দেখা হোক। অর্পিতা জানায় বিয়ের আগে অন্ততো একবার দেখা হওয়া উচিত। অহন রাজি হয়।
পরের দিন পাবলিক লাইব্রেরিতে স্থান ঠিক করা হয়। অর্পিতা হাজার কৌতহল নিয়ে অনেক সময় নিয়ে সাজে। হঠাৎ মাথায় আসে পূর্বের সেই ছেলেমানুষী। নিজের সাজ বন্ধ করে চিৎকার করে ডাকে মুক্তাকে। যথারীতি মুক্তা প্রতিবাদহীন অর্পিতার কথা মেনে নেয়।
পাবলিক লাইব্রেরীতে গিয়ে অহনের সামনে উপস্থাপন করা হয় মুক্তাকে। পাশে চেয়ারে বসে অর্পিতা অহনকে দেখে রীতিমত মুগ্ধ। এত সুন্দর হয় নাকী পুরুষ মানুষ ? অহন মুক্ত কে অর্পিতা ভেবে বেশ খোলা মেলো কথা বলে। এক পর্যায় পকেট থেকে হীরের আংটি বের করে পরিয়ে দেয় মুক্তাকে। এবার সত্যি মুক্তা কান্না ধরে রাখতে পারেনা।
মুক্তা ভাবে এই ভালবাসা এই উপহার একসময় অহন খুলে নেবে, যখন জানবে সে অর্পিতা না মুক্তা। অহন মুক্তার কান্না দেখে ধমকে যায়। কিছুই বুঝে ওঠেনা। অহন অনেক সাহস সঞ্চয় করে মুক্তার চোখে ভাসতে থাকা কান্নার জল নিজের হাত দিয়ে মুছে দিতেই মুক্তা চমকে ওঠে। এই প্রথম কোনো পুরুষের স্পর্শ লেগেছে তার গায়ে।
পাশে বসা অর্পিতা এসব দৃশ্য দেখে রাগে বাসায় চলে যায়।
রাতে অহনকে ফোন দিয়ে সব খুলে বলে অর্পিতা। অহন নিজেকে বিশ্বাস করতে পারেনা। বার বার মনে পড়ে মুক্তার চোখের অনবরত কান্নার কথা। এ কান্না অহনকে না পাবার নাকি অর্পিতা কতৃক মুক্তাকে প্রোতারিত করার কান্না ? অহন ডিসিশন নেয় সে মুক্তাকেই বিয়ে করবে,এবং সাফ জানিয়ে দেয় অর্পিতাকে।
অর্পিতার পুরো পৃথিবী কেপে ওঠে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।