দ্যা ব্লগার অলসো.....
[sb]ম্যালা কিছু পড়ছেন ভালা পাই দিবস লইয়া। এইবার এই রম্যখান পড়েন।
সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরনঃ এই গল্পে ডিজুষ বালক- বালিকাদিগকে অপমান করিবার বিন্দুমাত্র চেষ্টা করা হয়নি। শুধুমাত্র সত্যের উপর আলোকপাত করার চেষ্টা করা হইয়াছে
নিজের চক্ষুদ্বয়কে অবিশ্বাস করিবার যথেষ্ঠ ইচ্ছা থাকা সত্বেও পারিলোনা আক্কাস। যাহা দেখিলো, তাহাতে উহার চক্ষু চড়কগাছে পরিণত হইলো।
দুই যুবক-যুবতী দিনে-দুপুরে রাস্তার মধ্যিখানে জড়াজড়ি করিয়া গভীর চুম্বনে রত!! আবার যেন-তেন চুম্বন নয়; একেবারে হলিউড স্টাইলে কিসিং!!
বাবা ভ্যালেনটাইন এর উপর দারুন ক্রোধে অন্তরটা ফাটিয়া যাইতে চাহিলো আক্কাসের। ভালোবাসার জন্য আবার আলাদা দিবসের প্রয়োজনীয়তাটুকু বুঝিতে পারিনা আক্কাস। পরক্ষনেই আবার রাগটা তুলিয়া লইলো। কারন, ভ্যালেনটাইন তো আর জানিতোনা, উহাকে লইয়া এই দিবসের পয়দা হইবেক।
মোড় ঘুরিয়া রাগটা যাইয়া পড়িলো শফিক বাবাজির উপর।
তিনিই তো সকল নষ্টের গোড়া। বুড়ো ভাম, পড়ন্ত বয়সে এখনো ভালোবাসা বিলি করিয়া বেড়ায়। তাহার হাত ধরিয়াই পিরিতি দিবসের জোয়ার বঙ্গদেশে জোড়েসোড়ে প্রবাহিত হইতে থাকে। ফলাফল- ভালোবাসা দিবসে দিনে-দুপুরে জনসম্মুখে লদকালদকি!!
রাগ প্রশমিত হইতেই কাজের কথা মনে পড়িলো আক্কাসের। জুলি তাহাকে ওয়াটার পার্কে যাইতে বলিয়াছিলো আজ।
অনেকদিন যাবৎ উহার পিছনে লাট্টুর মতো ঘুরিতেছিলো আক্কাস। কিন্তু জুলি নামের বালিকাটি সর্পের চাইতেও পিছলা। ঠিকই বুঝিতে পারে, আক্কাস কি বলিতে চায় উহাকে। কিন্তু বুঝেও না বোঝার ভান ধরিয়া থাকে। ইনিয়ে বিনিয়ে যতোবারই মনের কথা জানাইতে চায়, অতি চতুরতার সহিত এড়াইয়া যায় জুলি।
প্রতিবার ডেটিং এর সময় পকেট ভর্তি টাকা লইয়া আসে আক্কাস। কিন্তু যাইবার কালে; সাহারা মরুভূমি!! বলাই বাহুল্য; হৃদয়টারও একই অবস্থা। এক বিন্দু ভালোবাসাও বুকে লইয়া যাইতে পারেনা আক্কাস।
কাল রাত বারোটা পাঁচ মিনিটে ফোন আসে জুলির। না, ফোন নহে, মিসকল আসে।
হিসাব কষিয়া দেখিয়াছে আক্কাস। এ পর্যন্ত পাঁচশ একুশ বার জুলিকে ফোন করিয়াছে সে; প্রতিউত্তরে একহাজার তেত্রিশটা মিসকল পাইয়াছে সে
ফোনে জুলি যাহা বলে, শুনিয়া বিগত দিনের সকল রাগ, দুঃখ কর্পূরের মতো উবে যায় আক্কাসের। ''তোমাকে অনেক ঘুরিয়েছি, আর না। কাল ওয়াটার পার্কে এসো। ওখানেই কথা হবে।
''
শুনিয়া বুকের রক্ত ছলাৎ করিয়া উঠে আক্কাসের। বালিকার বোধোদয় হইয়াছে! চিড়ে ভিজিতে চলিতেছে!! ভালোবাসার তরী ভিড়িতে চলিতেছে!!!
বহুকাল ধরিয়া নিখাদ ভালোবাসার জন্য লালায়িত আক্কাস। ক্লাস নাইনে পড়ার সময়ই একজনকে মনে ধরিয়াছিলো। উহার বইয়ের ভাঁজে চিঠি গুঁজিয়া দিয়াছিলো সে। নাদান বালিকা সোজা হেডস্যারের হাতে চিঠিখানা দিয়া আসে।
মাস্টারমশাই আক্কাসের জন্য যে শাস্তিখানা বরাদ্দ করেন, তাহা পৃথিবীর কোনো বিদ্যালয়ে, কোনো ছাত্রের কপালে ইতিপূর্বে ঘটেনি। একথা নিশ্চয় করিয়া বলা যায়। বিদ্যালয়ে ভালো হাতের লেখার জন্য সুনাম ছিলো আক্কাসের। তাহাকে দিয়াই বিশাল কাগজে লিখা হয় -''আমি বিশ্বপ্রেমিক'' সুতো দিয়া ওই কাগজ তাহার গলায় ঝুলায়ইয়া পুরো বিদ্যালয় প্রদক্ষিন করানো হয়।
সবশেষে সমবেত বিদ্যাথীদের উদ্দেশে মাস্টারমশাই ছোটোখাটো ভাষন প্রদান করেন।
যাহার সারমম ছিলো- এ শাস্তির পরে আক্কাসের হৃদয় হইতে ভালোবাসা নামের ভূতটা চিরদিনের জন্য ভাগিয়া যাইবে। যাহাদের বিদ্যাপীঠকে প্রেমকুঞ্জ মনে হয়, তাহারা ইহা হইতে শিক্ষা লউক।
আগামী পর্বে সমাপ্য
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।