এলেমেলো কথাবার্তা tutul@amrabondhu.com
১
ঋতু চক্রে এখন পার হচ্ছে সন্ধিক্ষণ। সবখানেই কি দিনবদলের শ্লোগান? ধীরে ধীরে বিদায় নিচ্ছে শীত। পালা বদলের সুযোগের পুরোটাই নিচ্ছে ঋতুরাজ বসন্ত... জায়গা গ্রহণে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে। ঠিক যেন ছাত্রদলের জায়গায় ছাত্রলীগ ... দলের পুরোনো কর্মীরা তেমন পাত্তা পাচ্ছেনা... নতুনদের জয়গান... পুরোনো পাতা ঝরে গিয়ে কচি পাতায় ভরে উঠছে গাছ। দখিনা বাতাসের আদুরে স্পর্শে মনটা কিরম জানি উদাস লাগে... লাইক বিরোধী দল... সদ্য ক্ষমতা থেকে বিদায় ।
প্রকৃতির এই পালাবদলে নাড়িয়ে দেয় আমাদের। কিরম জানি মোচড় দেয় ভেতরটা... ম্যাজম্যাজে একটা আমেজ কাজ করে নিজের মধ্যে। আর সেই কারণেই হয়তো আমরা শীতের রিক্ততা ঝেড়ে ফেলে মেতে উঠি বর্ণিল উৎসবে। বরণ করি ঋতুরাজকে...
প্রতিটা বছর বিরহের মাঝেই দিনাতিপাত ছিল বসন্তগুলোতে... একা একা মফিজের মত ঘুরে বেড়ানো... বন্ধুরা বলত “আর কতো”? সহকর্মীদের টিপ্পনী... আত্মীয়দের দূরত্বে থাকা... সময় বদ্লায়... বদ্লাতে হয়... কারণ যেখানে আছে বাংলা লিংক সেখানেই থাকবে দিন বদলের ছোঁয়া ... কোন এক চুপিসারে একাকিত্বের নির্বাসন ... একজন সঙ্গী ... গ্রীষ্ম..বর্ষা.. শীত বসন্ত... সময়টা জুড়েই... আমার পাশে ... ভালবাসার সঙ্গী... মনেরি রঙে রাঙাবো... বনেরো ঘুম ভাঙাবো... সেই কিন্নরী কন্ঠে প্রতিটা সকাল আমার ...
সারাদিন বউটারে নিয়ে ঘুরে বেড়ালাম... সেই একাকিত্বের নির্বাসন ... ভাল লাগল অসম্ভব। ভাল লাগায় ছেয়ে থাকা দিনের পুরোটা জুড়েই ... আহা আজি এ বসন্তে ... কত ফুল ফুটে... কত পাখি ডাকে... সত্যিই তাই.. প্রকৃতির সাথে মনের রাঙিয়ে যাওয়া।
২
মেয়েটা তার তিনটা বাসন্তী রঙের শাড়ী নিয়ে বিছানায় বসে আছে মন খারাপ করে..
মেয়ে: বলোনা কোন শাড়ীটা পরবো
মেয়ে: ১টা মিনিট সময় দিলে কি হয়?
ছেলেটা ব্যস্ত ইন্টারনেট নিয়ে... কিছুক্ষণ পর ছেলেটার খেয়াল হলো বউটা বসে আছে... মেয়েটা বার বার জানতে চাচ্ছিল কোন শাড়ীটা পরবে বসন্তের এই দিনে... ক্যাবলা টাইপ পোলাটার পক্ষে শাড়ির এইসব বোঝা যদিও কষ্ট তবুও অপরিপক্ব দৃষ্টিতে জানিয়ে দেয়া.. পরদিন সেই শাড়ির সাজে সারাদিন মেয়েটাকে নিয়ে টইটই করে ঘুরে বেড়ানো...
মেয়েটার হৈচৈ’য়ে প্রচণ্ড অনীহা ... তারপরেও সকালে উঠে ছেলেটাকে নিয়ে বেড়িয়ে পরা... পাব্লিক লাইব্রেরী... চারুকলা... টি.এস.সি... শেষে বই মেলা। হাটায় ক্লন্তি এরে ভর করে... তবুও বিরামহীন পথচলা... যদি ছেলেটা কষ্ট পায়... ছেলেটার সুখেই মেয়েটার আনন্দ ...
অদ্ভুত এক আবেশে মোহান্ধ হয়ে আছি... সর্বক্ষণ ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায়... হৃদয় মন সারা অনুভবে... তোমারই প্রতিচ্ছায়ায় মিশে আছে – কি সে ছায়া আর মোহ, কেবলই মায়া? ভালবাসা... আহা সে এক দারুণ অনুভবের ছুটে চলা... ছেলেটার হৃদয়ের গভীরে কারা নেড়ে যায়... শুধুই ভালবাসা? লুকিয়ে লুকিয়ে বউটাকে দেখতে ভালই লাগে... মায়াবী মুখটায় তার সমস্ত ভালবাসা.. কেমন যেন একটা শিহরীত অনুভব... শুধু একদিন ভালবাসা .. মৃত্যু যে তার পর... তাও যদি হয় .. আমি তাই চাই... চাইনা বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর...
মন ছুঁয়ে ছুঁয়ে যায় যার হাসিতে ... সুর তুলে যায় বাশিতে... সে এক মোহময়তা... মেয়েটির ভুবন ভোলানো মোহনীয় এই হাসিটাই ছেলেটা এলোমেলো করে দেয় ... তীর্থের কাকের মত প্রতিক্ষা ... কখন একটু হাসবে... যেন স্বর্গ হাতে পাওয়া...
৩
মূলতঃ গ্রামে বসন্তের পরিবর্তন লক্ষ করা যায়... ঝরা পাতায় পায়ে হাঁটার পথ ছেয়ে যায়... ঘাসের উপর লাল লাল ফুল পড়ে থাকে... ডালে ডালে শালিকে উৎসব... গাছে গাছে কোকিলের কুহুতান... আর চারিদিকে শন শন বাতাস... মাদকতা... আহা এরকম যদি হতো বছরের প্রতিটি সময়...
চিরকালীন প্রাকৃতিক রীতির পথ ধরে বাঙালির দরজায় আবার কড়া নাড়ছে ঋতুরাজ বসন্ত। পয়লা ফাল্গুনের ভোর থেকেই খোপায় খোপায় শোভা পাবে হলুদ গাতা-চন্দ্রমল্লিকা গোলাপ আচ্ছাদনে ভেসে উঠবে বাসন্তী রঙ। এসো মেতে উঠি নবীন প্রাণে বসন্তে।
ভেসে ভেসে হেমন্তের পর
এসেছে বসন্ত,
রঙে রঙে ভরে যায় আমার স্বদেশ
সবার কন্ঠে ছড়ায় সেই সুরের আবেশ।
পুষ্পের বাগানে চলে বিপুল সমারোহের সাজ;
বাসন্তী দিয়ে গেল ব্যাকুল বসন্তের সুরভী আজ,
কোকিল ছড়িয়ে দিয়ে গেল তার সুরের মুর্ছনার আমেজ।
ছন্দে ছন্দে দোলে মন-নাচে অন্তর,
আনন্দ ছড়িয়ে গেল সারা দেশের পথ-প্রান্তর।
আনন্দের ঝর্ণাধারা বয়ে যাক সবার জীবনে,
বসন্ত নামুক বাসন্তীর সুবাস ভরা মানুষের কল্যাণে।
কবিতার জন্য কৃতজ্ঞতা : Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।