আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই এলাহী চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৫টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ



প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই এলাহী চৌধুরীর বিরুদ্ধে ৫টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগঃ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরীর অপসারণ দাবি করেছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বন্দর-বিদ্যুৎ রক্ষা জাতীয় কমিটি এবং 'মাগুরছড়ার গ্যাস সম্পদ ও পরিবেশ ধ্বংসের ক্ষতিপূরণ আদায় জাতীয় কমিটি'। গত মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সাবেক সচিব তৌফিক চৌধুরীর বিরুদ্ধে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ উল্লেখ করে অবিলম্বে তাঁর অপসারণ দাবি করা হয়। একই সঙ্গে বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসা সরকারের প্রতি জাতীয় সম্পদ ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার আহ্বান জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- ১. দেশের তিনটি গ্যাস ক্ষেত্র প্রান্তিক দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর কাছে তুলে দেওয়ায় মুখ্য ভূমিকা ছিল তাঁর। এ ক্ষেত্রে তিনি দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে নাইকোকে লাভবান হতে সহায়তা করেছেন।

২. ফুলবাড়ী কয়লাখনি উন্নয়নের জন্য এশিয়া এনার্জির সঙ্গে সরকারের যে চুক্তি হয়েছে বলে এশিয়া এনার্জি দাবি করে, সেই রাষ্ট্রবিরোধী চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রেও তৌফিক-ই-ইলাহী জড়িত ছিলেন। ৩. মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্রে বিস্কোরণের জন্য দায়ী অক্সিডেন্টালকে তিনি বিচারের ঊর্ধ্বে রাখেন এবং দেশত্যাগে সহায়তা করেন। ১৯৯৮ সালে অক্সিডেন্টালের সঙ্গে সম্পূরক চুক্তি সম্পাদনের সময় মাত্র পাঁচ শতাংশ অতিরিক্ত গ্যাস বিস্কোরণের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেখানোর প্রস্তাব অনুমোদনের ক্ষেত্রে তিনি ভূমিকা পালন করেন। ৪. তিনি বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থে একাধিক অসম উৎপাদন অংশীদারি চুক্তি (পিএসসি) সম্পাদন করেন, যা সংসদীয় কমিটিকেও দেখতে না দেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি প্রভাব খাটিয়েছেন। ৫. ড. তৌফিক-ই-ইলাহী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিয়ে বিদেশে বহুজাতিক কোম্পানির কার্যালয় উদ্বোধন করিয়েছেন।

আলোচনা সভার সভাপতি প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ লিখিত বক্তব্যে বলেন, জনগণ এই নিয়োগ মানবে না। তাই ড. ইলাহী স্বীয় বিবেচনায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করুন। অথবা সরকার তাঁকে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নিক। অন্যথায় আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। কলাম লেখক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, শেখ হাসিনা দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কাউকে মন্ত্রিসভায় না নিয়ে প্রশংসিত হয়েছেন।

তিনি কেন তৌফিক-ই-ইলাহীর মতো একজনকে উপদেষ্টা করলেন সেটা এক রহস্যই। অধ্যাপক এস এম শামসুল আলম তৌফিক-ই-ইলাহীকে 'জ্বালানি যুদ্ধাপরাধী' হিসেবে অভিহিত করে বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারীদের মতো তাঁদেরও বিচারের সম্মুখীন করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. হোসেন মনসুর নিজেকে আওয়ামী লীগের একজন কর্মী উল্লেখ করে জাতীয় কমিটিকে একটু সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা আওয়ামী লীগের মাধ্যমেই পূরণ হবে। আপনারা যে আন্দোলন করেন তাও আওয়ামী লীগ জানে।

তবে কোন কর্মকর্তা কী করেছেন, সে বিষয়ে আমি কিছু বলতে চাই না। গত সাত বছরে বিদ্যুৎ খাতে কোনো প্রবৃদ্ধি হয়নি। গ্যাস খাতে যেটুকু হয়েছে তা বিদেশি কোম্পানির জন্যই হয়েছে। উল্লেখ্য, ড. মনসুরের এই বক্তব্য জাতীয় কমিটির অন্যান্য সভা-সমাবেশে দেওয়া তাঁর বক্তব্যের প্রায় সম্পূর্ণ বিপরীত। বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়বিষয়ক যে সেল তৈরির কথা, ড. মনসুরকে সেই কমিটির অন্যতম সদস্য করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলে আলোচনা আছে।

আলোচনা সভায় এ ছাড়া বক্তব্য দেন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, সাংবাদিক কামাল লোহানী, অধ্যাপক কে এম সা'দউদ্দীন, নূর মোহাম্মদ প্রমুখ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.