আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাফে চক্কোত্তির পেতাত্তা (হড়ড়ড়ড়ড় কাহিনী)


নাফে চক্কোত্তি গত হইয়াছেন গেল বিচুদবার। কি জানি এক বিচিত্র ব্লক রোগে আক্রান্ত হইয়া ধরাধাম ত্যাজিয়াছেন তিনি। ডাক্তার বদ্যি কেউ অবশ্য তাহার গৃহের চৌহদ্দিতে পদধুলি দেবার অবকাশ পান নাই। কারণ তিনি তাঁহার গৃহের প্রবেশ মুখও ব্লক করিয়াছিলেন। নিজে পাঁচিল টপকাইয়া যাতায়াত করিতেন।

একদিন সহসা পাঁচিল হইতে পতন ও ...। আমি এক আপিসে চাকুরি করি। প্রায়ই মধ্য রাতে ফিরিতে হয়। আজ কিয়ৎক্ষন পূর্বে তেমনই ফিরিতেছি। আমার বাড়ির পথে সড়কে একখানা বটবৃক্ষ রহিয়াছে।

তাহার নিকটেই শ্মশাণ ঘাট। বটবৃক্ষ হইতে একখানা শাখা পথ অবধি ব্যাপ্ত হইয়াছে। শহরে লোডশেডিংএর কল্যানে তখন পল্লীর আবহ বিরাজ করিতেছিল। তবে আকাশে একফালি চন্দ্র অবস্থান করায় ভৌতিক এক আলো আঁধারি সৃষ্টি হইতেছিল। সহসা দেখি দুইখানা কৃষকায় স্তম্ভ আমার পথ ব্লক করিয়া আছে।

ভাবিলাম, ব্লক মাস্টার তো গত হইয়াছেন, তা হইলে এই নিশুতি রাতে কাহারে ব্লক রোগে আক্রান্ত করিল। স্তম্ভকে পাশ কাটাইয়া আগাইতে উদ্যত হইতেই দেখে স্তম্ভদ্বয় তাহাদের অবস্থান পরিবর্তন করিয়া আবার আমার সম্মুখে হাজির হইল। আমার তো ভয়ে প্রাণ বাহির হইবার জোগাড়!! নিশ্চিৎ ইহা কোন প্রেতের কারবার। হঠাৎ দেখি বটবৃক্ষের শাখায় কে যেন চিকন সুরে ক্রন্দন করিতেছে। অনেকটা শকুণীর ছায়ের মত।

উপরে চাইতেই ভয়ে ঘাড়ের পশ্চাতদেশের চুল সরসর করিয়া দাঁড়াইয়া গেল। আধো আলোতে দেখি নাফে চক্কোত্তি বৃক্ষশাখে পা ছড়াইয়া বসিয়া আছেন। আর যাহাদের স্তম্ভ ভাবিয়া ভ্রম হইতেছিল ইহা তাহারই পদযুগল। আমারে উপর পানে চাহিতে দেখিয়া নাফের ক্রন্দন আরও বাড়িয়া গেল। আমি ভয়ের স্থলে কেমন জানি মায়া অনুভব করিতে লাগিলাম।

তাহারে শুধাইলাম," তুমি না ধরাধাম ত্যাগ করিয়াছ? তাহা হইলে এইখানে কি কর? আর আমার পথই বা আগলাইয়া রাখিয়াছ কেন?" নাফে জানাইল, " ইহকালে আমার ভুতুড়ে স্বভাব ছিল তাহাতো তুমি জানই, এখন মরিয়া বিপদে পড়িয়াছি। এই নয়া জায়গায় আসিয়া আসল ভুতেরা আমাকে তাহাদের সমাজে স্থান দিতে নারাজ। তাহাদিগের এক কথা, তুমি ডুপ্লিকেট ভুত। তোমার আমাদের খাঁটি ভুতের সমাজে স্থান নাই। তুমি যাও, মানুষের কাছে গিয়া সনদ লইয়া আস যে তুমি এখন প্রকৃত ভুত হইয়াছ, ভান করিয়া নাই, তাহা হইলে আমাদের সমাজে তোমার অভিষেক হইতে পারে, নচেৎ নহে।

এই বলিয়া তাহারা আমার পশ্চাদেশে এমন এক ভুতুড়ে লাথি হাঁকিয়াছে যে ব্যাথায় অমন কান্না বাহির হইতেছে। এখন তুমি একমাত্র ভরসা। ইহ ধামে তোমারে অনেক ব্লকাইয়াছি। আমার ব্লগে প্রবেশাধিকার দেই নাই। এহেন আচরণের স্বীকার তুমি একা নহে, সামুর অনেকেই; তাহার পরেও আজ যদি মডুর নিকট হইতে একখানা ছাড়পত্র না লইয়া দিতে পার, তাহা হইলে আমার ভুত জীবন ব্যার্থতায় পর্যবশিত হইবে।

" এই বলিয়া নাফে অঝোর ধারায় মুত্রপাত করিতে লাগিল (আমরা কাঁদিলে লোনা পানি ঝরে, আর ভুতেরা কাঁদিলে...) আমি তাহারে আশ্বস্ত করিলাম, " এখন তুমি আমারে গৃহে ফিরিতে দাও। তাহার পরে আমি অন্য ব্লগারদিগের সহিত আলাপ করিয়া প্রয়োজনে সম্মিলিত ভাবে মডুর শরণাপন্ন হব। ততক্ষন তুমি বট গাছে বসিয়া বটপত্র ছিঁড়িতে ও চিবাইতে থাক। " ---------------------------------------------------- (পরিশিষ্টঃ নাফে চক্কোত্তির পেতাত্তা এখন আপনাদিগের পানে চাহিয়া রহিয়াছেন। তাহার কি করা যায় আপনারাই নির্ধরণ করেন)
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।