গণতন্ত্র হল এমন এক অস্তিত্বহীন মদ, যাতে সবাই মাতাল, কিন্তু কেউ কখনো পান করে নি।
পৃথিবীতে বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার ভাষা রায়েছে। এর মধ্যে অনেক ভাষা বিলুপ্তপ্রায়। আবার অনেক ভষা স্বগৌরবে তার প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়িয়ে চলছে। এই সব প্রভাবশালী ভাষাগুলোকে যায়গা করে দিয়ে আনেক ভাষা বিলুপ্ত হতে চলেছে।
ভাষাবিলুপ্তির এই হার পশু-পাখি বিলুপ্তির হারের চেয়ে বেশি। মানুষের যেমন আত্মীয় স্বজন আছে, থাকে পরিবার, বাবা-মা, ভাই-বন্ধু ইত্যাদী, তেমনি ভাষারও রয়েছে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন, বংশ পরিচয়। ভাষাবিজ্ঞানীরা ভাষার অতীত ইতিহাস পর্যালোচানা করে, তাদের শব্দকোষ ব্যকারণ বিশ্লেষণ করে ভাষাগুলোর কয়েকটি পরিবার চিহ্নিত করেছেন। তবে সব ভাষাবিজ্ঞানী ভাষাপরিবারগুলোর সংখ্যা নির্ণয় করতে গিয়ে একমত হতে পারেন নি। যার কারণে একেক ভাষাবিজ্ঞানীর তালিকায় ভাষা পরিবারের সংখ্যা একেক রকম।
তবু এইসব দ্বিমতের পরও বারটি ভাষা পরিবার সর্বজনসম্মত।
এই তালিকার সবচে বিস্তৃত ভাষা পরিবারটির নাম ইন্দো-ইউরোপীয় (Indo-European) ভাষা পরিবার। এই পরিবারটির বিস্তৃতি দক্ষিণ র্পূর্ব এশিয়া হতে ইউরোপের পশ্চিম প্রান্তে একেবারে আইসল্যান্ড পর্যন্ত। আর ইউরোপীয় বসতকারীদের মুখ ধরে এই ভাষা পরিবার ছড়িয়েছে উত্তর-দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশ, আফৃকা আর প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপসমূহ পর্যন্ত। সহজভাবে সারা বিশ্বেই বাস এই পরিবারের সদস্যদের।
বাংলা, ইংরেজী, আফৃকি, ফার্শী এই পরিবারের অন্যতম সদস্য। সবচে’ বেশি বেশি লোক এই পরিবারের ভাষাগুলোতে কথা বলে। ভাষাভাষী লোকসংখ্যার দিক দিয়ে বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম ভাষা পরিবারটির নাম চীনা-তিব্বতী (Sino-Tibetan)। মান্দারিন (চীনা) এবং থাই এই পরিবারের সদস্য।
সেমিটিক-হেমিটিক (Semitic-Hemitic): এই ভাষা পরিবারের দুটি শাখা সেমিটিক ও হেমিটিক।
অনেক ভাষা বিজ্ঞানী এই শাখা দুটোকে স্বতন্ত্র পরিবার হিসেবে দেখিয়েছেন। আরবী ও হিব্রু এই পরিবারের সদস্য।
দ্রাভিড়ীয় (Dravidian): ভারতের দক্ষিণাঞ্চল ও শ্রীলংকার ভাষা এই পরিবারের সদস্য।
বান্টু (Bantu): পশ্চিম-মধ্য আফ্রিকার প্রায় সব ভাষা এই পরিবারের সদস্য।
তুর্কী-মোঙ্গল ও মাঞ্চু (Turk-Mongol & Manchu): এই ভাষা পরিবারটিকে এক নামে ‘আলটাইক’ (Altaic) ভাষা পরিবার বলা হয়।
এর তিনটি শাখা। অনেক ভাষা বিজ্ঞানী এই তিনটি শাখাকে স্বতন্ত্র ভাষা পরিবার মনে করেন।
ককেশিয়ান (Caucasian): নামেই বলে দিচ্ছে এটি ককেশান অঞ্চলের ভাষা। এই পরিবারের একটি ভাষা আজ টিকে আছে।
ফিনো-উগ্রিক (Finno-Ugric): উত্তর ইউরোপের ভাষা পরিবার।
মধ্য ইউরোপের হাঙ্গেরীয়ান ভাষা এই পরিবারের সদস্য।
অস্টৃক (Austric): এই পরিবারের বিস্তৃতি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল হতে ভারত পর্যন্ত। এর দুটি প্রধান শাখা রয়েছে। আফৃকার মালাগাসী, ইন্দোনেশীয়া ও মালয়শিয়ার ভাষা এই পরিবারের অন্যতম সদস্য।
এস্কিমো (Esquimo): গ্রীনল্যান্ড সহ উত্তর মেরু অঞ্চলের মানুষের ভাষা এই পরিবারের সদস্য।
হাইপারবোরিয়ান (Hyperborean): পূর্ব রাশিয়ার অল্প কয়েকটি ভাষা এই পরিবারের সদস্য।
আদি আমেরিকান (American Indian): উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার আদিবাসীদের প্রায় সব ভাষা আটটি শাখায় বিভক্ত এই পরিবারের সদস্য।
কিন্তু বিভিন্ন কারনে কয়েকটি ভাষা এই পরিবারগুলোতে অন্তর্ভূক্ত করা সম্ভব হয় নি। কোন কোন ভাষা বিশ্লেষণ করে কোন পরিবারে ফেলা যায় নি, কোনটির সমগোত্রীয় সকল ভাষা বিলুপ্ত হওয়ায় সেই ভাষাটিকে তুলনা করে কোন পরিবারভুক্ত করা যায় নি। এমনি একটি বিচ্ছিন ভাষা রয়েছে এশিয়ার উত্তর-পূর্ব প্রান্তে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কয়েকটি দ্বীপে।
এক সময় ভাষাটি বহুল ব্যবহৃত হত। কিন্ত অন্য ভাষার প্রভাবে যে জাতির ভাষা তারা নিজেরাই এই ভাষায় কথা বলা কমিয়ে দিচ্ছে। বর্তমানে এটি একটি বিপন্ন ভাষা। বেশি দিন হয়তো বাকী নেই ভাষাটির ইতিহাসের জাদুঘরে স্থান নেয়ার।
প্রশ্ন ১: উত্তর-পূর্ব এশিয়ার এই বংশ-পরিচয় হীন ভাষাটির নাম কি (বিলুপ্ত হবার আগেই চটপট বলে ফেলুন)?
প্রশ্ন ২: এই ভাষার কথক জাতিটি কোন কোন দেশে বাস করে?
সবাই ধাঁধাঁ দিয়ে নাকাল করছে।
এইবার আমিও মাঠে নামলাম, দেখব কত ধাঁধাঁয় কত উত্তর। মাভেরিক ভায়ের কাছ থেকে ধাঁধাঁ'র এই ধারণাটি ধার করে ধাঁধাঁ'র ধারায় যুক্ত হলাম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।