প্রিয়ংবদা
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি হামলা চলছে চলবে। লক্ষণ যা, তাতে ফিলিস্তিনের বাকি মানুষগুলো (এরা কি আসলেই মানুষ) শেষ হওয়ার আগে এ হামলা বন্ধে হবে বলে মনে হয় না। সহিংসতা বন্ধে বিশ্বের বাঘা বাঘা নেতারা রীতিমতো গলদঘর্ম! সমাধান নেই তাদের কাছে। ইসরাইলি প্রভুকে অখুশি করতে চান না তারা। তাদের মন্তব্যেও তাই অতি সতর্কতা! যুদ্ধ বন্ধে উভয়পক্ষকেই ‘সংযম’ প্রদর্শনের আহ্বান জানান! ভাবখানা এমন যে, বিবাদমান উভয়পক্ষের কাছেই এফ-১৮ জঙ্গিবিমান, মারকাভা ট্যাঙ্ক ও ফিল্ড আর্টিলারি রয়েছে! অথচ এতদিনের যুদ্ধের পরিসংখ্যান বলছে, নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি হামাসের রকেট হামলা দীর্ঘ আট বছরে ২৫ থেকে বড়জোর ২৭ জন ইসরাইলিকে হত্যা করেছে।
অপরদিকে কেবল গত ১১/১২ দিনের হামলাতেই ইতোমধ্যে ইসরাইলিরা বধ করেছে কমপক্ষে ৬৬০ জন ফিলিস্তিনি!
ফিলিস্তিনে পাখির মতো মানুষ বধ করে ইসরাইল। সভ্যতার দাবিদার পশ্চিমারা আর মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম অলস দেশগুলো রক্তের এই হোলিখেলা দেখে একটু আধটু উহ আহ করে। এই যা!
অন্যদিকে নিপীড়িত দেশগুলোর শেষ আশ্রয় বলে কুখ্যাত জাতিসঙ্ঘ এবং আন্তর্জাতিক রেডক্রস ইসরাইলিদের হামলায় বধ হওয়া ফিলিস্তিনিদের যন্ত্রণায় কিছু খাদ্য আর চিকিৎসা সাহায্য নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে দায়িত্ববান হিসেবে জাহির করে নিজেদের। ব্যাস, অতটুকুই তাদের কাজ! ইসরাইল পাখি মারার মতো মানুষ মারে আর ওই সংস্থাগুলো দৌঁড়ে এসে একটু সমবেদনা জানিয়ে যায়!
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক এই সাহায্য সংস্থাগুলোর এমন আচরণ দেখে মনে হয় ইসরাইল আর এই সংস্থাগুলো নতুন এক আঁতাতের খেলা আবিষ্কার করেছে। রক্তের খেলা! ইসরাইল মারবে আর এই সংস্থাগুলো একটু ত্রাণ, একটু সাহায্য নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়াবে।
এভাবেই চলবে যুগের পর যুগ। কী মজার খেলা!
খেলাটা যেন নিচের এই আঁতাতের মতোই!
পাড়ার বখাটে ছেলে পিয়াল তার প্রতিবেশী আরেক ছেলে স্বপনের সাথে একদিন পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করল। তবে যুক্তি না থাকায় হেরে গেল পিয়াল।
কিন্তু ব্যাপারটা সহজভাবে নিতে পারল ন পিয়াল। ক্ষোভে অপমানে সে শরণাপন্ন হলো পাড়ার বখাটে ছেলেদের বস বুলেটের কাছে।
তাকে বলল, যে করেই হোক স্বপনকে একটা ছ্যাঁচা দিতে হবে। সব শুনে বুলেট তাকে আশ্বাস দিল এর একটা বিহিত করার। এরই মাঝে দু’জনে কী যেন গোপন শলা-পরামর্শও করে নিল।
সেদিন সন্ধ্যায় সদলবলে স্বপনদের বাড়িতে হাজির বুলেট। তবে পিয়াল সাথে নেই।
স্বপনকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে পাশের একটা অন্ধকার জায়গায় নিয়ে আসা হলো। বুলেট কড়া করে ঝারি মারল, তুই নাকি আমার গ্র“পের পিয়ালের সাথে বেআদবি করছস?
সবার উগ্র ভাব দেখে হতবাক হয়ে যায় স্বপন! এ কি শুনছে সে? প্রতিবাদ করার সময়টুকু পায় না সে। এরই মাঝে অসংখ্য কিল ঘুষি পড়ে তার শরীরে। যন্ত্রণায় চিৎকার দিয়ে ওঠে স্বপন। হঠাৎই আগমন ঘটে পিয়ালের।
বুলেটের হাতে ধরে সে জোর আবদার করে, বুলেট ভাই, অরে আর মাইরেন না। হাজার হোক আমার প্রতিবেশী!
হাত উঁচিয়ে সবাইকে থামিয়ে দেয় বুলেট। স্বপনকে উদ্দেশ্য করে বলে, পিয়ালের সুপারিশে ছাইড়া দিলাম আজ তরে। তাড়াতাড়ি অর হাত ধইরা মাফ চা!
হায়েনাদের হাত থেকে বাঁচার তাগিদে স্বপন এগিয়ে যায় পিয়ালের হাত ধরে মাফ চাইতে। সে দৃশ্য দেখে বুলেটের মুখে ক্রূরতামাখা হাসি ফোটে।
পিয়ালের মুখেও যে ফোটে না তা নয়; তবে হাসিটা সে চেপে রাখে অতি কষ্টে। যদিও তা স্বপনের চোখকে ফাঁকি দিতে পারে না!
ইসরাইল আর তথাকথিত এই সাহায্যকারী সংস্থাগুলোর আচরণ কি গল্পের এই বুলেট পিয়ালের মতোই নয়?
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।