হামাসের সাথে সপ্তাহব্যাপী রক্তক্ষয়ী সংঘাতের পরিণতিতে ইসমাইল হানিয়ার নেতৃত্বাধীন ফাতাহ-হামাস কোয়ালিশনের সরকারকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। এছাড়া আব্বাস জরুরী অবস্থা জারী করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। সপ্তাহ-ব্যাপী ফাতাহ-হামাস সংঘাতের পর বৃহস্পপতিবার দিনের শেষের দিকে সরকার বরখাস্তের ঘোষণা দেন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। সংবাদ মাধ্যম সূত্রে প্রকাশ, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত একটি আপৎকালীন অস্থায়ী সরকার দায়িত্ব পরিচালনা করবে। বৃহসপতিবার দিনব্যাপী সংঘর্ষের পরিণতিতে গাজা সিটির দখল হামাসের হাতে চলে যাবার কারণে ধারণা করা হচ্ছিলো যে, আব্বাসের পক্ষ থেকে যে-কোন মুহূর্তে সরকার বরখাস্তের ঘোষণা দেয়া হতে পারে।
সরকার বরখাস্তের ব্যাপারে হামাসের কোন প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
উল্লেখ্য সপ্তাহব্যাপী সংঘাতের জের ধরে বৃহস্পপতিবার গাজা সিটিতে ফাতাহ'র প্রিভেনটিভ সিকিউরিটি ফোর্সেস ও মিলিটারী ইন্টিলিজেন্সের দফতর দু'টি দখল করে নেয় হামাস। বিশ্লেষকদের ধারণা ছিলো, পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে গাজার নিয়ন্ত্রণ সহসাই হামাসের হাতে চলে যাবে। খবরে প্রকাশ দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফার নিয়ন্ত্রণ বৃহস্পতিবার নাগাদ হমাসের হাতে চলে আসে।
হামাসের আধিপত্যের পরিণতিতে গত কয়েক দিন থেকে কোয়ালিশন সরকার থেকে ফাতাহ'র সমর্থন তুলে নেয়ার জন্য সমর্থক ও মিত্ররা প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসকে সমর্থন দিচ্ছিলেন।
এছাড়াও জরুরী অবস্থা জারী করার জন্য আব্বাসকে চাপ দেয়া হচ্ছিলো। বৃহস্পতিবারের দিনের বেলার ঘটনার পর সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ-আলোচনার জন্য রামাল্লায় ফাতাহ নেতাদের সাথে বৈঠক করেন আব্বাস।
পর্যবেক্ষকরা মনে করেন প্রিভেনটিভ সিকিউরিটি ফোর্সেসের দফতর দখল হয়ে যাবার ফলে গাজা সিটিতে ফাতাহ ও হামাসের সামরিক সক্ষমতার ভারসাম্য টলে যাবে। এ-দফতরটিকে ফাতাহের শক্তির ভরকেন্দ্র মনে করা হয়। হামাস যদি শেষ পর্যন্ত সত্যি-সত্যি গাজার দখল নিয়ে নেয়, তাহলে ফিলিস্তিন ভূমির উপকূলীয় অঞ্চলের দখল চলে যাবে সংগঠটির নিয়ন্ত্রণে।
পক্ষান্তরে পশ্চিম তীরের নিয়ন্ত্রণ থাকবে ফাতাহ'র হাতে। তবে সরকার বরখাস্ত হয়ে যাবার পর পূর্বের সকল সমীকরণ উল্টে গেছে। জানা গেছে যে, বৃহস্পতিবার দফতরটি দখল করার পর ব্যাপক তান্ডব চালায় হামাস। এ-সময় বেশ ক'জন ফাতাহ-কর্মীকে হত্যা করা হয়। সরকার বরখাস্তের আগে পর্যন্ত গাজায় হামাসের একচ্ছত্র আধ্যিপত প্রতিষ্ঠার মুখে ইসরাইল-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলো।
ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, হামাস নেতৃত্ব সংগঠনটিকে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহের আদলে গড়ে তুলতে চায়। এদিকে হামাস জানিয়েছে, হামাসের উপরে সংঘাত চাপিয়ে দিয়েছে ফাতাহ। বরখাস্তের আগে একজন হামাস মুখপাত্র বৃহস্পতিবার বলেন, ফাতাহের ভেতরে যারা সরকারের বিরুদ্ধে একটি ক্যু চালাতে চাইছে তাদের প্রতিরোধ করতে চাইছে হামাস। ফাতাহ যেসব কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে হামাস সেগুলো করতে চায়। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আলোচনায় বসার আহবান জানিয়েছিলো হামাস ।
উল্লেখ্য, হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন হিসাবে চিহ্নিত করে তাদের সাথে সব ধরণের সম্পর্ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছে বুশ প্রশাসন। এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব ব্যান কি মুন জানিয়েছেন, গাজায় বহুজাতিক বাহিনী নামানোর ব্যাপারে বেশ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বুধবার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।