জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই। চাটগাঁইয়া মেজ্জাইন্না খন, খাইলে বুঝিবা ন খাইলে ফস্তাইবা (অর্থাৎ চট্টগ্রামের মেজবানের খাবার খেলে স্বাদ বোঝা যায়, না খেলে আফসোস করতে হয়) এ উক্তিটি চট্টগ্রামে সর্বত্র প্রচলিত। যুগ যুগ ধরে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান দেশব্যাপী আলোচিত হয়ে আসছে। ইদানীং বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এমনকি টকশোতেও চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী এ মেজবান নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা এমনকি মেজবানের ইতিবৃত্ত নিয়েও আলোচকরা মেতেছেন।
۩۞۩ বন্ধূর বাড়ীতে মেজবান খাওয়া ۩۞۩
গত এপ্রিল মাসে আমার বন্ধু সাদেক তার গ্রামের বাড়ীতে ১০০ মন মাংসের বিশালাকারের মেজবানের আয়োজন করে।
কয়েকটি গ্রামের মানুষ এই মেজবান খাওয়ার জন্য সন্ধ্যার পর থেকেই তাদের বাড়ীতে জমায়েত হতে থাকে। বিশাল পেন্ডেলের নীচে একসাথে কয়েকশ মানুষ খেতে পারে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাইকিং করে সবাইকে সুষ্ট ও সুন্দর পরিবেশে খাওয়ার জন্য আহবান করে। এই মেজবান অনুষ্টানে স্থানীয় রাজনীতিবিদ, গনমান্য ব্যক্তি থেকে প্রশাসনের কর্মকর্তারা পর্যন্ত অংশ গ্রহন করে। প্রতি বছর নাকি এই মেজবান হয়ে আসছে।
সুন্দর এই আয়োজন দেখে খুব ভাল লেগেছে।
۩۞۩ আমাদের বাড়ীতে মেজবানের আয়োজন ۩۞۩
৯০ দশকের আগে ছোট ভাইয়ের খতনা উপলক্ষে আমাদের গ্রামের বাড়ীতে মেজবানের আয়োজন করা হয়েছিল। মেজবানের একদিন আগে ডাকাতদল আমাদের ঘরে হানা দিয়ে সবকিছু নিয়ে যায়। তারপরেও মেজবানের আয়োজন থেমে থাকেনি। এখনো কোন অনুষ্টানে ছোট পরিসরে মেজবানের আয়োজন করা হয়।
ঐতিহ্য বলে কথা--
۩۞۩ চট্টগ্রামের মেজবানে কি কি আইটেম থাকে? ۩۞۩
সাদা ভাতের সঙ্গে গরু/মহিসের মাংস, চনার ডালে হাড্ডিসহ মাংস ও সে সঙ্গে গরম নলার ঝোল। আহ! টাইপ করতে গিয়ে জিবে পানি চলে আসছে।
۩۞۩ কি কি উপলক্ষে চট্টগ্রামে মেজবানের আয়োজন করা হয়? ۩۞۩
۞ কারো সন্তান হলে মেজবানের আয়োজন করা হয়।
۞ কেউ মারা গেলে মেজবানের আয়োজন করা হয়।
۞ মৃত্য ব্যক্তির জন্য প্রতি বছর মেজবানের আয়োজন করা হয়।
۞ বিয়ের আগের দিন ও পরের দিন মেজবানের আয়োজন করা হয়।
۞ বার্ষরিক ওরস উপলক্ষে মেজবানের আয়োজন করা হয়।
۞ ইলেকশনে জিততে মেজবানের আয়োজন করা হয়।
۞ ইদানিং বড় বড় অনুষ্টানে ও মেজবানের আয়োজন করা হয়।
۞ দুর প্রবাসে ও চট্টগ্রামবাসীরা বিভিন্ন অনুষ্টানে মেজবানের আয়োজন করে থাকে।
চট্টগ্রামবাসির মতে, মেজ্জাইন্না খন, খাইলে বুঝিবা ন খাইলে ফসত্মাইবা (অর্থাৎ মেজবানের খেলে স্বাদ বুঝা যায়, না খাইলে আফসোস করতে হয়) এ উক্তিটি প্রায় শোনা যায় চট্টগ্রামে বিভিন্ন অঞ্চলে। এক সময় মেজবানের বিষয়টি শুধুমাত্র চট্টগ্রামের গ্রামাঞ্চলে ছোটখাট আয়োজনে পরিবেশন ছিল। কিন্তু তা এখন ছড়িয়ে শহরমুখী যেমন হয়েছে তেমনি বিশালতাও চলে এসেছে। বিশেষ করে বিত্তশালী ও ধনাঢ্য পরিবারের পৰ থেকে চট্টগ্রামের বিশাল আয়তন কমিউনিটি সেন্টারগুলো ভাড়া নেয়া হয় এ উপলক্ষে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।