ধর্ম যার যার , বাংলাদেশ সবার রহমান মাসুদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
ঢাকা: সাভারের রানা প্লাজা ধসের খলনায়ক স্থানীয় যুবলীগ নেতা সোহেল রানার নানা অজানা অধ্যায় বের হতে শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলানিউজের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে রানা প্লাজার আন্ডারগ্রাউন্ডে রানার নেতৃত্বে চলছিল হরতালবিরোধী মিছিলের প্রস্তুতি। এ সময়ই ভেঙে পড়ে নয়তলা ভবন। এতে সামান্য আহত হন রানা।
সংবাদমাধ্যমে ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় উঠে আসে ঘটনাটি। কিন্তু এরপরই দ্রুত রানাকে উদ্ধার করে এলাকার বাইরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ধসে পড়া ভবনের নিচ থেকে রানাকে প্রথম উদ্ধার করেন পুলিশের দায়ের করা প্রথম মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কায়সার মাতুব্বর।
এরপর রানাকে দ্রুত পালাতে সহায়তা করেন সাভার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কবির হোসেন সরকার। স্থানীয় সংসদ সদস্য তালুকদার তৌহিদ মুরাদ জংয়ের গাড়িতে করে রানাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় মিরপুরের বাড়িতে।
বাড়িটি মুরাদ জংয়েরই।
রানা প্লাজার দোতলার এক দোকান মালিক বলেন, “ভবন ধসের কথা শুনে আমি দ্রুত ঘটনাস্থালে আসি। এ সময় দেখতে পাই, ইউএনও ও ওসির সঙ্গে এমপির গাড়ির দিকে যাচ্ছেন রানা। তার কাছে কোথায় যাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি আমাকে জানান, ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিতে যাই। ”
তিনি বলেন, “কিছুক্ষণ পর এমপি মুরাদ জং ঘটনাস্থলে থাকলেও তার গাড়িতে করে চলে যান রানা।
”
তিনি আরো বলেন, “রানা চলে যাওয়ার পর সবার মধ্যে গুঞ্জন ওঠে তাকে নিয়ে। এ সময় এমপির ঘনিষ্ঠজনরা মার্কেটের ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদারদের জানান, রানার মাথা ফেটে যাওয়ায় হাসপাতালে গেছে। সে পালাবে কেন? যার কোটি কোটি টাকার ভবন ভাঙছে সে পালাবে কেন?”
এমপি মুরাদ জং-ও প্রথমে ঘটনাকে গুরুত্ব না দিয়ে এটাকে নিছক দুর্ঘটনা হিসেবে চালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু ঘটনার ভয়াবহতা ও মিডিয়ার উপস্থিতিতে পরে তিনি রানাকে চেনেন না বলে বক্তব্য দেন। একাধিক ক্ষতিগ্রস্ত দোকান মালিকের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বাংলানিউজকে বলেন, ‘নাটের গুরু ইউএনও কবির হোসেন সরকার ও ওসি আসাদুজ্জামন। এরা দুজনই রানার জমির ব্যবসার পার্টনার। এই তিনজনে মিলে সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই, সিঙ্গাইর (মানিকগঞ্জ) এলাকায় একটি জমির দালালের সিন্ডিকেট পরিচালনা করেন। ’
মুরাদ জংয়ের গাড়িতে তোলার সময় রানার মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে দেন ইউএনও কবির হোসেন সরকার। গাড়ি যাওয়ার জন্য রাস্তা পরিষ্কার করেন ওসি আসাদুজ্জামান।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ইউএনও কবির কেবল জমির দালালিই করেন না, সাভারে আছে তার পাওয়ার প্লাজা নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন তার বড় ভাই। প্রতিষ্ঠানটি রানার সহায়তায় সাভারের শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাছে জোরপূর্বক জেনারেটর বিক্রি করে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ ইউএনও কবির হোসেন এবং ওসি আসাদুজ্জামানের কাছে আছে রানার আরো অনেক তথ্য।
গত ২৪ এপ্রিল ভবন ধসের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৩৮৬টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ধ্বংসাবশেষ থেকে।
আহত হয়েছে আরো বহু মানুষ। এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে অনেক মৃতদেহ আছে বলে উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন।
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।