আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'ভবনটি যে ধসে পড়বে তা আমি আগেই বুঝেছিলাম: রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা

রাজনীতি বুঝিনা। বাঁকা পথে চলিনা । গন্তব্য ওই তো কিছুদূর সামনেই রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা বলেন 'ভবনটি যে ধসে পড়বে তা আমি আগেই বুঝেছিলাম। কারণ ডোবার উপর নির্মাণ করা হয়েছে ভবনটি। তারপর গার্মেন্টস মালিকরা যেভাবে ভারি মেশিন আর জেনারেটর উপরে তুলেছেন তাতে ধসে না পড়ে উপায় ছিল না।

তাই আমি নিজেও খুব বেশি সময় ভবনের নিচে থাকতাম না। আর ভবনটি যখন ধসে পড়ল তখন কিন্তু আমি ভবনের নিচেই ছিলাম। আল্লাহ'র অশেষ রহমতে বেঁচে গেছি। ' র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর ইত্তেফাকের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এমন কথাই বললেন সাভারের আলোচিত রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা। র্যাবের ব্রিফিং শেষে র্যাব সদর দফতরে একজন কর্মকর্তার রুমে রানার সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের।

রানা দাবি করেন, সাভারের স্থানীয় সংসদ সদস্য তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদের সঙ্গে তার সখ্যতা অনেক দিনের। দলীয় কারণেই সখ্যতা বেশি। কপালে চুমু খাওয়ার ছবি প্রসঙ্গে রানা বলেন, 'ভাইয়া (এমপি) কোন খবরে খুশি হলে এভাবে কপালে চুমু খেতেন। ' শুধু তাকে নয়, অনেককেই তিনি এখাবে চুমু খেয়েছেন বলে দাবি রানার। প্রতিটি হরতালের দিন রানা প্লাজার সামনে থেকে হরতাল বিরোধী মিছিল করা হয়।

এই মিছিলের আয়োজন নিজে করার দাবি করে রানা বলেন, এমপি এসে মিছিলে যোগ দিতেন। তিনি যুবলীগের নেতা কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে রানা বলেন, প্রায় ১৪ বছর তিনি সাভার পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপরই তাকে যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক করা হয়। পুরো বিষয়টিই ভাইয়া (এমপি) করেছেন বলেও দাবি রানার। এক পর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে রানা বলেন, 'আমি যদি যুবলীগ না করি, তাহলে সাভারে আওয়ামী লীগ করা লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না।

বিপদে পড়লে অনেকেই অনেক কথা বলেন। ' রানা প্লাজার ১০ তলার অনুমোদন আছে উল্লেখ করে রানা বলেন, ইঞ্জিনিয়াররা যে পাইলিং করতে বলেছিল তার চেয়েও ৬ ফুট বেশি পাইলিং করা হয়েছে। কিন্তু উপরে গার্মেন্টসগুলোর জেনারেটর ও বড় বড় মেশিন তোলার কারণেই ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ফাটল দেখার আগেই তিনি বুঝেছিলেন ভবনটি আর ধরে রাখা যাবে না। কিন্তু এত বড় বিপর্যয় ঘটবে তা তিনি কল্পনাও করেননি।

ঘটনার আগের দিন ফাটল দেখার পর সবাই যখন ভবন থেকে চলে গেল তখনই ভবনটি পরিত্যক্ত করা হয়। কিন্তু গার্মেন্টস মালিকরা তাকে অনুরোধ করেন এখন অফিসে কাজ না করা গেলে তাদের বিরাট ক্ষতি হয়ে যাবে। শিপমেন্ট বাতিল হবে। এতে তাদের পথে বসতে হবে। তাই কয়েকটা দিন যেন ভবনটি চালু রাখা হয় সেই অনুরোধ ছিল গার্মেন্টস মালিকদের।

তাদের অনুরোধেই পরদিন ভবন খোলা হয়। আর এখন তারা উল্টো কথা বলছেন বলে দাবি করেন রানা। তবে র্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের পরিচালক লে. কর্নেল জিয়াউল আহসান ইত্তেফাককে বলেন, নিজে বাঁচার জন্য অনেক বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে রানা। তার সব কথা বিশ্বাস করা যাবে না। এর আগে গ্রেফতার হওয়া গার্মেন্টস মালিকরা বলেছেন, রানার কাছে জিম্মি ছিলেন তারা।

শ্রমিকদের টিফিনের টাকা তিনি মেরে খেতেন। ঝুট ব্যবসাও ছিল তার। আর মাঝে মধ্যে চাঁদা তো নিতেনই। হরতালে গার্মেন্টস খোলা রাখতে হবে এমন চাপ দিয়েই শ্রমিকদের বাড়ি থেকে আনতে বাধ্য করেন সোহেল রানা। এখন নিজে বাঁচার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছেন।

নিজের উদ্ধার প্রসঙ্গে রানা বলেন, তিনিসহ ৫/৬ জন ভবনের নিচে এককোনায় আটকা পড়েন। ভবনটি ধসে পড়ার পর ধুলোয় তিনি কিছুই দেখছিলেন না। কিছুক্ষণ পর দেয়ালের ফাটা দিয়ে বাইরে কিছু লোকজনকে চিত্কার করে ডাকেন। তারা এসেই তাকে উদ্ধার করে। মুরাদ জং উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে নিয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'না ভাইয়া আমাকে হাসপাতালে নেয়নি।

স্থানীয় লোকজনই উদ্ধার করে আশুলিয়ার কলমার ইনসাফ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে দুই ঘন্টা থাকার পর পালিয়ে মোহাম্মদপুরে চলে যাই। ইত্তেফাক Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.