আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রানা প্লাজার হাজারো প্রাণহানি কি বৃথা যাবে???? (((((রানা)))))

C:\Users\Saif\Desktop

প্রথম আলো লিংক বিশ্বের ইতিহাসে বৃহত্তম প্রাণঘাতী শিল্প-দুর্ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা জামিনে বেরিয়ে যাচ্ছেন। মূল আসামি রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে করা মামলাও এতই ঠুনকো যে, দোষী প্রমাণিত হলেও তাঁদের দুই থেকে ছয় বছরের বেশি কারাদণ্ড হবে না। সোহেল রানা বানিয়েছিলেন এমন এক মৃত্যুকূপ, যাতে এক হাজার ১৩৪ জন শ্রমিকের অকল্পনীয় নির্মম মৃত্যু হয়েছিল, আহত হয়েছিলেন দুই হাজার শ্রমিক—এঁদের অনেকেই আজীবন পঙ্গুত্বে ধুঁকবেন। কিন্তু এ ঘটনার বিচারে যাঁরা অকল্পনীয় গাফিলতি করে যাচ্ছেন, তাঁরাও কি নিষ্ঠুরতা করছেন না? অভূতপূর্ব ক্রোধ, হাহাকার আর যন্ত্রণার জন্ম দিয়েছিল রানা প্লাজার হাজারো মৃত্যু। সমগ্র জাতি শোক বুকে নিয়ে উদ্ধার, সহায়তা, প্রতিবাদে বিভিন্নভাবে শামিল হয়েছিল।

বিশ্বের গণমাধ্যমেও দেখা গিয়েছিল বিশ্ববাসীর একই রকম শোক, ক্ষোভ আর সহযোগিতা। কিন্তু সকলই গরল ভেল। রাজউক, পুলিশসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ভবনধসের মামলাগুলো এমনভাবে করেছে, যাতে দোষীদের বেশি শাস্তি না হয়। মূল অপরাধ যেখানে বিপজ্জনক ভবন নির্মাণ এবং জেনেশুনে প্রাণহানির আশঙ্কার মুখে শ্রমিকদের ভবনে প্রবেশে বাধ্য করা, সে ব্যাপারে সরকারের কোনো সংস্থাই মামলা করার প্রয়োজন বোধ করেনি। সোহেল রানার বিরুদ্ধে একমাত্র হত্যা মামলাটি করেছেন একজন নিহত শ্রমিকের স্ত্রী।

তদুপরি এই মামলার তদন্তে অগ্রগতি নেই বলে জানিয়েছে শনিবারের প্রথম আলো। লঘু অভিযোগের দুর্বল দুটি মামলা নিয়েই ব্যতিব্যস্ত রয়েছে পুলিশ। অথচ সিআইডির তদন্তে যে তথ্য এসেছে, তাতে সোহেল রানা ও তাঁর বাবাসহ সংশ্লিষ্টরা সর্বোচ্চ শাস্তিযোগ্য অপরাধই করেছেন। রানা প্লাজা মামলার ৩০ আসামির মধ্যে গ্রেপ্তার ছিলেন ২১ জন। এঁদের আটজনই জামিনে বেরিয়ে গেছেন।

রানাকে পালানোয় সাহায্যকারী আসামিদের মধ্যে সাভারের সাংসদ মুরাদ জংয়ের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। সরকারি দলভুক্ত হওয়ার এতই গুরুত্ব যে হাজারো মৃত্যু, হাজারো অঙ্গহানি সেখানে তুচ্ছ? সোহেল রানা ও তাঁর দোসররা যদি এভাবে ছাড়া পান, তাহলে দেশে আইন-আদালতের ভূমিকা নিয়ে জনমনে গভীর অনাস্থা দেখা দেবে। সোহেল রানারা বাংলাদেশের দুই পরাশক্তির প্রতিনিধি: সরকারি দল ও পোশাকশিল্প মালিকশ্রেণী। মানুষের জীবন, শ্রমিকের শ্রমের মূল্যকে তারা বারেবারেই ধ্বংসযোগ্য বলে দেখিয়েছে। রানা প্লাজায় গণমৃত্যুর জন্য দায়ী হয়েও তারা রেহাই পেতে যাচ্ছে।

ঘটনাটির পর বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের বাস্তবতা, শ্রমিকের অধিকার, আইনের প্রয়োগ ইত্যাদি বিষয় কেবল দেশবাসী নয়, বিশ্ববাসীরও মনোযোগ পেয়েছে। সোহেল রানাদের লঘুদণ্ড হলে কেবল মানবতার প্রতি চরম অবিচারই করা হবে না, বিশ্বের গণমাধ্যম ও মানবাধিকার মহলেও তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হবে। সরকার কি স্বদলের লোকের জন্য, প্রভাবশালী শিল্পপতি মহলকে খুশি রাখার জন্য হাজারো প্রাণের প্রতি এমন কাণ্ড করবে? বিশ্বকে জানিয়ে দেবে যে বাংলাদেশে শ্রমিকের শ্রমের মতো জীবনও অতি তুচ্ছ? এটা কোনোভাবেই মানা সম্ভব নয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.