আমি ভাবছিলাম জনগণের এই অভাবনীয় রায় নিয়ে। অভাবনীয় বলছি একারণে যে বাঙালী ইতিহাসে কয়েকবার মাত্র এরকম রায় দিয়েছে। যখনই বাঙালীর দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, আর সব বিকল্প রুদ্ধ হয়েছে তখনই ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
এ-রায় অবশ্য আয়য়ামী লীগের বিজয় ঘোষণা করে না। জনগণ আওয়ামী লীগকে ভালোবেসে ভোট দেয়নি।
ভোট দিয়েছে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে, ভোট দিয়েছে মোল্লাতন্ত্রের বিরুদ্ধে, একইসাথে সামরিকতন্ত্রের বিরুদ্ধেও। সামরিকতন্ত্রের সাথে যে বিএনপি ও মোল্লাদের নিবিড় সম্পর্ক তা জনগণ জেনে গেছে- সামরিকতন্ত্রকে পরিছন্ন করারও সময় হয়ে এলো।
জনগণ এই রায় দিচ্ছে একটা স্বচ্ছল-সাবলীল জীবনের জন্য, গণতান্ত্রিক অধিকারের জন্য। আর আমার মনে হয়, জনগণের নিজস্ব এই এজেন্ডা বাজার ব্যবস্থার ক্ষমতাধর কর্পোরেশনগুলোর এজেন্ডার সাথেও মিলে গেছে। একটা অবাধ বাণিজ্যব্যবস্থার জন্য স্বচ্ছল মার্কেট দরকার।
কিছুদিন আগে থেকে চলমান বাণিজ্য-ব্যবস্থায় ধ্বস সেকথা প্রমাণ করেছে। বাংলাদেশ সেই মার্কেট হবে। বিএনপি-জামায়াত সেপথে অন্তরায় হয়ে ছিল।
তবে তারা সহজে হাল ছাড়বে না- সামনে একটা রক্তাক্ত লড়াই অপেক্ষা করছে বলে মনে হয়।
বলছিলাম জনগণ আওয়ামী লীগকে ভালোবেসে ভোট দেয়নি।
জনগণের ভালোবাসা পেতে হলে আওয়ামী লীগকে এবার জনগণের কাজ করে দেখাতে হবে। বাংলার চাষী-তাঁতী-জেলের মুখে হাঁসি ফোটাতে হবে।
এ-কাজ সহজ হবে না।
আর যারা এদেশের ভালো চান, তাদের নিয়মিত কর্তব্য হবে আওয়ামী লীগকে নজরদারীতে রাখা, তাদের স্বৈরতান্ত্রিক হওয়া থেকে বিরত রাখা। এবং সুনির্দিষ্ট কিছু এজেন্ডা বাস্তবায়নে বাধ্য করা- যেমন বলছিলাম, সামরিকতন্ত্রকে সাফসুতরো করা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা, শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো, প্রবল হয়ে ওঠা মোল্লাতন্ত্রের বিরুদ্ধে সাংস্কৃতিক লড়াই শুরু করা...সাংস্কৃতিক ও মানবিকভাবে গর্বিত মানুষ হিসেবে বাঁচার সম্ভাবনা তৈরি করা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।