আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নির্বাচনী অভিজ্ঞতা এবং না ভোটকে না বলুন, জামায়াত-শিবিরকে না বলুন

রাজনীতি ও অর্থনীতি এই দুই সাপ পরস্পর পরস্পরকে লেজের দিক থেকে অনবরত খেয়ে যাচ্ছে

১. ছোটবেলায় ভোটের সময় আমার প্রধান আকর্ষন ছিল বিটিভি। ভোট শেষ হতেই টানা ৪৮ বা ৭২ ঘন্টা ধরে টিভি খোলা থাকতো। নানা ধরণের অনুষ্ঠান হতো, আর ফাঁকে ফাঁকে নির্বাচনের ফলাফল। নাটক ও বাংলা সিনেমাই দেখাতো বেশি। মনে আছে আমার মা টিভি রুমে নীচে ঢালাও বিছানা করে দিতো, আমারা সবাই ৪৮ বা ৭২ ঘন্টা কাটিয়ে দিতাম এই বিছানায়।

তখন ফলাফল নিয়ে মাথা ঘামাতাম না, কে জিতলো তাতে খুব মাথাব্যাথা থাকতো না। ২. ৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচন এবং মোহাম্মদ হানিফ যে নির্বাচনে মেয়র হলেন সেই নির্বাচনের সময় সারা রাত ছিলাম নির্বাচন কমিশন অফিসে। সে এক বিরল অভিজ্ঞতা। তখন সারারাত রেজাল্ট নিয়ে তা ফোনে দিতাম অফিসে। ভোর পর্যন্ত রেজাল্ট দেওয়ার পর তারপরই ছুটি।

দুই দলের নেতারাও থাকতো নির্বাচন কমিশন অফিসে। আর ২০০১-এর নির্বাচনী রাদে একুশে টেলিভিশনের একটা আলাদা স্টুডিও ছিল। মনে আছে রাত ৩টার দিকে, যখন ফলাফল স্পষ্ট যে বিএনপি জোট ভালভাবেই জিতে যাচ্ছে তখন আওয়ামী লীগের কাউকে আর তেমন পাওয়া যাচ্ছিলো না। আবার ১৯৯৬ ও মেয়র নির্বাচনের সময় ছিল উল্টা চিত্র। বাবুল আহমেদ নামে একজন জাতীয়তাবাদী টিভি অভিনেতা আছে।

জাসাসের সদস্য সম্ভবত। মনে আছে ঐ রাতে বিএনপি জোট জিতে যাচ্ছে এই খবর পাওয়ার পর তার প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিল-এবার একুশে টেলিভিশনকে দেখে নেবো। ৩. গত দুই নির্বাচনের সময়ই দুটি নির্বাচনী সফরে দিয়েছিলাম শেখ হাসিনার সঙ্গে। সাংবাদিকরা বাধ্য না হলে খুব খুশী মনে বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনী সফরে যেতে চায় না। ব্যবহারের তারতম্যই প্রধান কারণ।

এখন তো অনেক পত্রিকাই নিজেরা গাড়ি ভাড়া করে দিয়ে দেয়। ২০০১ সাল পর্যন্ত তেমনটি ছিল না। ফলে যেতে হতো তাদের ব্যবস্থাপনায়। তখন সবাই লিখতাম হাতে। ফলে রিপোর্ট লিখে তারপর ঢাকায় ফ্যাক্স করতে হতো।

এখন নিজস্ব গাড়ি, সাথে ল্যাপটপ, ইন্টারনেট লাইন। কতো সুবিধা। মনে আছে একবার রাত ১টার সময় নিউজ পাঠিয়ে দিয়ে তারপর আর থাকার জায়গা পাইনি। এক রুমে ২১ জন ছিলাম। আমরা নালিশ করেছিলাম শেখ হাসিনাকে।

তিনি আমাদের পিঠা খাইয়েছিলেন। ২০০১ সালে অবশ্য শেখ হাসিনার কাছে যাওয়া যায়নি এসএসএফের কারণে। এসব সফরে অনেক কষ্ট হয়, কিন্তু যে অভিজ্ঞতা হয় তার মূল্যও কম নয়। ৪. প্রতিবারই নির্বাচনের আগে বলা হয় এবারের নির্বাচন বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এবারও বলা হচ্ছে।

সময়ের প্রোপটে আসলেই প্রতিটা নির্বাচনই গুরুত্বপূর্ণ। এবারেও তাই। বাংলাদেশে কোনো দলই পর পর দুই নির্বাচনে জিততে পারেনি। এতোদিন সবাই বলেছি এটাই ভাল। একটি দলকে স্বৈরাচার হতে দেয় না এই প্রক্রিয়া।

কিন্তু গত বিএনপি জোট কী আগের আওয়ামী লীগ সরকার থেকে কিছু শিখেছিল? বরং তারা আরও বেশি দুর্নীতিতে আশক্ত হয়ে পড়ে। সুতরাং পরিবর্তন করেও লাভ হয়নি আগে। তবে এবারও যদি বিএনপি মতায় আসে তাহলে বাংলাদেশকে উলোট-পালোট করে দেবে সেটা বেশ বুঝতে পারি। দেশের মানুষ কি গত দুই বছরে আগের ৫ বছরের কথা ভুলে গেছে? ৫. যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে এতোটা প্রচার আর কখনো দেখিনি। আশার কথা এটাই।

একবার জামাত মাত্র ২টা সিট পেয়েছিল। মনে হয়েছিল বাংলাদেশে তাদের জায়গা নেই। সম্ভবত তাদের সেরা ফল ১৮টি আসনে জয়ী হওয়া। আশা করছি এবার তারা ধারবাহিকতা রাখতে পারবে না। সবারই উচিৎ জামায়াতকে ভোট না দেওয়ার জন্য ব্যাপক ক্যাম্পেইন করা।

বিশেষ করে নুতন ভোটারদের কাছে। জামায়াত-আলবদর-রাজাকারদের না বলুন। এই জীবনে সব কিছু সহ্য করতে রাজী আছে, জামায়ত-শিবির-রাজাকারদের সাথে এমনকি আমি জান্নাতুল ফেরদাউসেও যেতে রাজী না। সুখের কথা, এই গোষ্ঠীকে বেহেসতের ধারে কাছেও পাওয়ার কথা না। ৬. শুরুতে না ভোট বিষয়টি পছন্দ হয়েছিল।

এখন আর পছন্দ হচ্ছে না। এমন যদি হতো একদিকে নিজামী আরেক দিকে পিন্টু বা হাজারির মতো কেউ দাঁড়িয়েছে তাহলে না ভোট দেওয়াটা সহজ। কিন্তু সর্বত্র পরিস্থিতি এরকম নয়। নতুন ভোটারদের মধ্যে না ভোট দেওয়া একটা ফ্যাশানের মতো মনে হচ্ছে। জনাব জাফর ইকবাল একটা ভাল কথা বলেছেন।

তিনি বলেছেন, না ভোট দেওয়া মানে তো নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ না নেওয়া। নতুন প্রজন্ম কেন শুরুতেই না দিয়ে ভোট জীবন শুরু করবে? সুতরাং না কেও আসুন না বলি। জামাতকে না বলি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.