বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অসহনীয় সময়ের সম্পূর্ণ দায়টা বর্তায় মেরুদন্ডহীন নির্বাচন কমিশনারের উপরে-সাবেক মাননীয় বিচারপতি ও প্রাক্তন প্রধান নির্বাচন কমিশনার পেশাগত নীতিচ্যুত হওয়ার কারণেই এড় বড় একটা সংঘাতের দিকেচলে গিয়েছিলো বাংলাদেশ- সেখান থেকে জলপাই জিপে চড়ে সামরিক বাহিনীর প্রধান বাংলাদেশকে রক্ষা করেন-
আজিজ নির্বাচন কমিশন থেকে লজ্জাস্কর ভাবে বিতাড়িত হওয়ার পর নতুন নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রক দল এসেছে- তবে প্রশ্নটা আবারও সামনে আসছে- আদৌ কি শোভন এবং সচেতন মানুষ দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে নির্বাচন কমিশন, বর্তমানের নির্বাচন কমিশনে যে ৩ জন মানুষ কার্যত নীতিনির্ধারণ করছেন তারা কি শোভনতা, রাজনীতি অসংশ্লিষ্ঠতার দাবি প্রমাণ করতে পেরেছেন?
নির্বাচন কমিশন তাদের ভবিষ্যত কর্মপন্থা প্রকাশ করেছে- তারা ঘোষণা করেছে পর্যায়ক্রমে তারা সারা দেশে ২০০৮ এর প্রথম থেকেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়ে শুরু করে অবশেষে ২০০৮ এর শেষের দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিয়ে তাদের নির্বাচনী কার্যক্রম শেষ করবে- এই সময়ের ভেতরে তারা প্রতিটা আসনের সীমানা পুণঃ নির্ধারণ করবেন এবং প্রয়োজনে নির্বাচনী এলাকাতে সামান্য রদ বদল করবেন- তারা ভোটার তালিকা শুরু করবেন অক্টোবরে- এর আগে তারা টেন্ডার দিয়ে এই ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরির সরঞ্জাম আনাবেন- এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব পুণঃবিন্যস্ত হলে নতুন রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনায় বসবেন
তবে আমার স্পষ্ট অভিমত নির্বাচন কমিশন টাদের দায়িত্ব পালন করছে না, তারা বরং প্রকারান্তরে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব অবহেলা করছেন এবং অহেতুক বিতর্কে সৃষ্টি করছেন। তাদের এই একগুঁয়েমি মনোভাব আসলে আমাদের আরও বেশী অনিশ্চিত অবস্থায় এনে পৌঁছাচ্ছে। এই অহেতুক সময় নষ্ট করবার পেছনে তাদের অযৌক্তিক কর্মকান্ড এবং কর্মপরিধি অহেতুক বৃদ্ধি করাটাই দায়ি- তবে এই কাজে সামরিক নিয়ন্ত্রিত সরকারের ভুমিকা কতটুকু এটা নিয়ে বিতর্ক চলতে পারে।
যদিও নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতার বিষয়ে গত ৬ মাসে অনেক বাক্য ব্যয় হয়েছে তবে এই "স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের" উপরে সরকারের প্রভাব অশোভনীয় পরিমানে বেশী।
৩ মাস পুর্তির পর ফখরুদ্দিন এক ভাষণে বলেছিলেন তারা ২০০৮ এর সালের ডিসেম্রবের দিকে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করবেন- তারা ১৮ মাসের একটা সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছিলেন- এবং ঠিক এর পরপরই প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছিলেন আমাদের ১৮ মাস সময় দেওয়া হয়েছে আমরা আশা করছি এ সময়ের ভেতরেই কাজটা সমাপ্ত করে নির্বাচনের উপযোগি পরিবেশ তৈরি করতে পারবো- যদিও বিষয়টা ছিলো- নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী নীতিমালা পর্যালোচনা করে- একটা মোটামুটি নির্ভরযোগ্য ভোটার তালিকা তৈরি করে যখন বলবে তারা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত তখনই নির্বাচনী তফশীল ঘোষণার সময় হবে- এখানে ফখরুদ্দিন সাহেবের অভিমত গুরুত্বপূর্ণ না- গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন কমিশনের ভুমিকা আর নির্বাচন কমিশন অহেতুক সময় নষ্ট করতে বদ্ধ পরিকর- তাদের যেকোনো উপায়েই সময় নষ্ট করবার একটা তাগিদ তৈরি হয়েছে- কেনো হয়েছে এটা সম্পর্কে অনেক অনুমান করা যায়- তবে এখানে অনুমানের অবকাশ নেই যে নির্বাচন কমিশন সময় নষ্ট করাটাই ব্রত হিসেবে গ্রহন করেছে-
ফখরুদ্দিন সাহেবের বক্তব্য বিষয়ে আমার দৃঢ় সন্দেহ তার ভাষণের অনুলিপি আসে প্রতিরক্ষা দপ্তর থেকে- সামরিক প্রধানেরাই এর ভাষ্য এবং স্বাধীনতা নির্ধারণ করে দেন- তাদের হাতের পুতুল সরকার ফখরুদ্দিন সরকার- পরোক্ষ একটা চাপের অনুমান থাকলেও বর্তমান নির্বাচন কমিশন ঘোষিত কর্মধারা প্রত্যক্ষ চাপের দিকেই আঙ্গুলি নির্দেশ করে- এবং মইন ইউ সাহেবের কথা সত্য বলে মেনে নিলে নির্বাচন কমিশন যথাসাধ্য চেষ্টা করবে এমন ভাবে সময় নষ্ট করতে যেনো নির্বাচন আরও পরে অনুষ্ঠিত হয়- ৩৬ বছরের জঞ্জাল পরিস্কারের জন্য যেহেতু ২ বছর যথেষ্ট সময় নয় তাই তাদের আরও সময় দেওয়ার সুযোগ দিবে নির্বাচন কমিশন- অবস্থা এমনই যেকোনো উপায়েই এই সরকারকে ২ বছরের অধিককাল ক্ষমতায় রাখতে হবে- রাষ্ট্রের সহায়ক সকল যন্ত্রই এ কাজে তাদের মদদ দিবে- একটা গণতান্ত্রিক পরিবেশের কথা বলে যখন নির্বাচন কমিশন বলে প্রয়োজনে জরুরি অবস্থার ভেতরেই স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে তখন আমার ভেতরে শঙ্কা উঁকি দেয় যে আদতেই জরুরি অবস্থা উঠানো হবে- বরং জরুরি অবস্থার ভেতরেই আগামি ২ বছর দেশটা চলবে- এবং সামরিক সমর্থিত সরকার কখনই অনুভব করবে না যে জরুরি অবস্থা তুলে নেওয়ার মতো পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে- আমাদের ছেলে ভুলানো ছড়া না শুনিয়ে যদি এটাই স্পষ্ট করে বলে দিতো তারা তবে বেশ আনন্দিত চিত্তে আমরা আগামি দিনগুলো কাটাতে পারতাম।
গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নতুন একটা রাজনৈতিক দলের প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে সক্রিয় সহযোগিতা করছে এবং যারা সংস্কারপন্থী তাদের উপর এই সামরিক সরকারের বিশেষ অনুগ্রহ বিদ্যমান বলেই ঘরোয়া রাজনীতি নিষিদ্ধ থাকলেও তাদের প্রায় প্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালানোতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
বিভিন্ন সহায়ক সংস্থাগুলোতে প্রাক্তন এবং বর্তমান সামরিক কর্মকর্তাদের সহাবস্থান অবশ্য অন্য রকম ইঙ্গিত দেয়- তারা আলোচনা করছেন এমনটাই আমার আশংকা। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রধানের পদে প্রাক্তন সামরিক কর্মকর্তা, দুদকের প্রধান এবং অন্য আরও সংস্থায় প্রাক্তন সেনাকর্মকর্তাদের নাম জ্বলজ্বল করছে-
নির্বাচন কমিশনের অহেতুক সময় নষ্ট করবার পেছনে সাম্ভাব্য কারণের কতটুকু সামরিক? দুর্নীতি দমন কমিশন মূলত রাজনৈতিক শোধনে ব্যস্ত- যে সকল ব্যবসায়ী রাজনৈতিক দলের আনুগত্য লাভ করে কিছুটা লাভবান হয়েছেন তাদেরও ধরা হচ্ছে- তারাও এই রাজনৈতিক শোধনের ভিকটিম- তবে সামরিক দুর্নীতির অভিযোগের কোনো তদন্ত আগামী ২ বছরে কিংবা সম্ভবত আগামী ৫ বছরে হবে না- মশহুদ চৌধুরীর বক্তব্য বছরে অন্তত ১০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা করে তাদের শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়- তাদের গঠিত বিশেষ আদালতের সক্ষমতা এরকমই- তাই বছরে ১০০ জন রাজনৈতিক দুবৃত্বকে শায়েস্তা করা হবে- বর্তমানের দুবৃত্বদের তালিকায় ৪২০ জনের নাম আছে- এবং আগামী ১ বছরে আরও অন্তত ৮০ জন যুক্ত হবে এই তালিকায় তখন এই ৫০০ দুবৃত্বকে বিচার করে শাস্তি দিয়ে একটা সহনীয় অবস্থায় আসতে আসতে আরও ৫ বছর অতিক্রম করে যাবে- সংস্কারপন্থী এবং সংস্কার বিরোধী ৫০০ জন রাজনৈতিক, ব্যবসায়ী ও আমলার বিচার শেষ হতে যেহেতু ৫ বছর লাগবে সুতরাং আগামি ৫ বছরে কোনো সামরিক দুর্নীতিট তদন্ত শুরু হবে না
সামরিক চক্র কোনো দুধে ধোঁয়া তুলসি পাতা বা অমৃতের সন্টান নয়- তাবে শক্তিশালী একটা যুদ্ধবাজ বাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে তারা অনেকটা ধরাছোঁয়ার বাইরের মানুষ- স্বচ্ছতার প্রমাণ দিতে চাইলে দুদককে এসব সামরিক দুবৃত্বের বিচার করতে হবে- অথবা এমনও হতে পারে বর্তমানে যারা এসব শোধন প্রক্রিয়ার সক্রিয় অংশ তাদের সবার হাতেই ময়লা লেগে আছে এবং এইসব সামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগে রাজনৈতিকদের জামায় হাতের ময়লা মুছতে চাইছে-
নির্বাচন কমিশনের উপর প্রধান অর্পিত দায়িত্ব ছিলো একটা নির্ভুল ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা- তবে গত ৬ মাসে একটা ভুলে ভরা পাইলট প্রকল্প ছাড়া এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয় নি- এবং এই পাইলট প্রকল্পে ভোটার তথ্য সংগ্রহের উদ্দ্যেশ্যে সরবরাহকৃত ফর্মের বিষয়ে অশোভনতার অভিযোগো এসেছে- অভিযোগটা মূলত প্রতিবন্ধিদের সম্বোধন বিষয়ে০ আমি অনেক আগেই বলেছি যে বাংলাদেশে প্রতিবন্ধিদের সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করবার একটা প্রবনতা আছে- তাদের হৃদবিদারক উপহাসের শিকার হতে হয়-তাদের কৌতুককর ভাবে উপস্থাপনের একটা রীতিও আছে- তবে রাষ্ট্রীর পর্যায়ে একটা শোভনতার খোলস ছিলো- তারা একটা শোভন সম্বোধন করতো প্রতিবন্ধিদের- তাই কানা বা অন্ধ না বলে তাদের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী বলা হতো- ল্যাংরা বা খোঁড়া না বলে তাদের শাররীক প্রতিবন্ধি বলা হতো- এবং মানসিক প্রতিবন্ধত্বকে পাগল অভিহিত করা হতো না- তবে শোভন নির্বাচন কমিশন সরবরাহকৃত এই ভোটার তথ্য ফর্মে অন্ধ- খোঁড়া- পাগল এত্যাদি অবজ্ঞা ও হীনতাসুচক বিশেষণের উপস্থিতি রয়েছে- রাষ্ট্রের সংবিধানসম্মত কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে এমন হীনতা কাম্য নয়- যারা এই তথ্যসংগ্রহ ফর্মটি নির্মাণ করেছেন এবং যারা এ কাজের তদারকি করেছেন তাদের শাস্তির একটা ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
অনেক বিজ্ঞাপন দিয়ে শুরু হওয়া এই প্রকল্প শতভাগ নির্ভুল হয় নি- ভ্রান্তির অবকাশ আছে- টবে সবচেয়ে বড় ভয় টালিকা থেকে বিতাড়িত হওয়ার- নির্বাচন কমিশন সংবিধানের বিধিমোতাক প্রতিটা ঘরে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ এবং তথ্য যাচাইয়ের কাজ করবে না- প্রথমেই তাদের এই অসাংবিধানিক অবস্থানকে প্রতিষ্ঠিত করবার চেষ্টার বিরোধিতা করা প্রয়োজন-
সংবিধান অবজ্ঞা করে বা সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোনো স্বাধীনতা তাদের নেই- তারা যদি এমন কোনো ভোটার তালিকা তৈরি করেও সেটা আইনগত বিবেচনায় বৈধ হবে না- যেহেতু সংবিধান দেশের সর্বোচ্চ আইন তাই এই আইন ভঙ্গকারী কোনো ভোটার তালিকা দিয়ে আইনসঙ্গত কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারবে না- যদি এই সংবিধানকে পাশ কারিয়ে তৈরি করা ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচন হয় তবে সেটা অবৈধ নির্বাচন হবে০
বিষয়টা নীতি এবং আইননিষ্ঠতার- তারা নিজস্ব সুবিধা মতো আইন তৈরি করতে পারবেন না, বা তারা নিজেদের পছন্দমতো আইনের ব্যাখ্যা হাজির করতে পারবেন না- তাদের নিয়ন্ত্রনের জন্য কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠান প্রয়োজন, তবে েই বর্তমান পরিস্থিতিতে বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধবে কে?
তাদের নৈতিকতার জায়গাটাতে একটা নীতিগত অশুদ্ধতা বিদ্যমান- তবে প্রকল্প বিষয়েও যে তারা খুব দক্ষ একটা পরিকল্পনা নিয়েছে এমনও না, বরং তাদের গৃহীত পরিকল্পনায় সময় নষ্ট হওয়া এবং অর্থের অপচয় হওয়ার সম্ভবনাই বেশী- আর্থিক অপচয়ের বিষয়টা বেশী পীড়া দিচ্ছে আমাকে- যদিও নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকার সাথে জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আঙ্গুলের ছাপ গ্রহনের পরিকল্পনা করছে, তাদের ভাষ্যমতে এতে অর্থের সাশ্রয় হবে তবে এটা প্রমাণ করা সম্ভব যে এতে অর্থের এবং সময়ের অপচয় ছাড়া অন্য কিছু হবে না-
আঙ্গুলের ছাপ গ্রহন ও তা সংরক্ষণের জন্য যে কম্পিউটার ব্যবস্থা প্রয়োজন এবং যেটা আসলে বহনের সমস্যা আছে- এবং এই একটা কারণেই তারা বাড়ী বাড়ী গিয়ে ভোটার তালিকা তৈরি পরিকল্পনা বাদ দিয়েছে- সেই কম্পিউটার ব্যবস্থার ইউনিট প্রতি মূল্য প্রায় ১৫০ হাজার টাকা- এই পরিমান টাকা দিয়ে আরও ৩০টা ডিজিটাল ক্যামেরা কেনা সম্ভব ,যা দিয়ে ছবি তুলে সরাসরি ভোটার তালিকায় স্থাপন করা সম্ভব-
আঙ্গুলের ছাপ যা কোনো ভাবেই ভোটার তালিকায় সংযুক্ত হবে না- এবং এটা ভোটার তালিকা সংশ্লিষ্ঠ কোনো কাজ না- এটা বস্তুত নির্বাচন কমিশনের সীমান বহির্ভুত কাজ- তবে এই তাদের নির্ধারিত কর্মপরিসরের বাইরের একটা অহেতুক কাজ করবার জন্য তারা অর্থ এবং সময়ের অপচয় করতে বদ্ধ পরিকর- এটাই আশ্চর্যজনক-
প্রথমিক পর্যায়ে ১২০০০ ইউনিট কেনা হবে- তবে যদি আঙ্গুলের ছাপ প্রকল্প বাদ দেওয়া হয় তবে ৫০০০০ টাকার ভেতরেই ভোটার তালিকার জন্য প্রয়োজনীয় কম্পউটারের ব্যবস্থা করা সম্ভব- অর্থ্যাৎ ইউনিট প্রতি ১ লক্ষ টাকা আমরা অপচয় থেকে রোধ করতে পারি যদি শুধুমাত্র নির্বাচন কমিশন তাদের নিজস্ব কাজে মনোযোগী হয়- এবং এই আঙ্গুলের ছাপ প্রকল্পের জন্য যদি ইউনিট প্রতি ১ লক্ষ টাকা অপচয়ের তালিকায় রাখি- তবে সরঞ্জাম বাবদ প্রথমেই ১২০ কোটি টাকা অপচয় হবে- এই অপচয় টুকু বাদ দিলে অতিরিক্ত যে ১২ থেকে ১৪ মাস সময় লাগবে এটাকে কিভাবে গ্রহনযোগ্য মনে করা যায়?
অর্থ্যাৎ নির্বাচন কমিশন একটা কর্মে নিজেদের নিযুক্ত করতে চাইছেন যেটা তাদের কর্মপরিধির বাইরে এবং এই অহেতুক কাজটা করতে গিয়ে তারা নির্বাচনের নির্ধারিত সময় আরও ১ বছর পিছিয়ে দিচ্ছে এবং এ জন্য তারা প্রয়োজনে ১২০ কোটি টাকার অপচয় করতেও প্রস্তুত- এই একগুঁয়েমি আসলেই পীড়াদায়ক-
এবার আসল অসাড়তার কথা বলি- মূলত ১৮ বছরের উপরের বয়েসের মানুষদএর কথাই এবং তথ্যই এখানে বিবেচনা করা হবে- এবং ভোটার তালিকার সাথে যেহেতু এটাও সংগৃহীত হবে সুতরাং যাদের বয়েস ১৮এর কম তাদের আঙ্গুলের ছাপ গ্রহন করবার জন্য আবার সরকার নিযুক্ত কর্মীদের নতুন করে ফর্ম নিয়ে এসব বাসায় বাসায় যেতে হবে- যদি আবারও বাসায় বাসায় কর্মী পাঠাতে হয় তবে তাদের প্রশিক্ষণ এবং মজুরি বাবদ প্রদত্ত অর্থ আবারও খরচ করতে হবে- সুতরাং অর্থ বা সময় সাশ্রয়ের কোনো সুযোগ আসলে নেই- এই জাতীয় পরিচয় পত্রের কাজটা জাতীয় পরিচয় পত্র নির্মাণে নিযুক্ত সরকারী সংস্থাই সমাধা করুক- নির্বাচন কমিশন কেনো অহেতুক পয়সা খরচ করে পয়সার এবং সময়ের অপচয় করে এই কাজ করতে চাইছে- সময় নষ্ট করবার তাগিদ ছাড়া অন্য কিছু এখানে নেই
যদিও এ কাজে তেমন কোনো অর্থ সাশ্রয় হবে না তবে এই গোয়ার্তুমিতে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে বাড়তি ১টা বছর লাগবে- এবং এই ১ বছর নির্বাচন প্রক্রিয়া পিছিয়ে যাওয়ার ফলে অগণতান্ত্রিক এবং সম্ভবত সামরিক সরকার আরও বাড়তি ১ বছর ক্ষমতায় থাকবে-
তবে হাস্যকর বিষয় হলো নির্বাচন বিধিমালা কিংবা রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন ভোটার তালিকা তৈরির কাজের সাথে কোনো ভাবেই সংশ্লিষ্ট নয় তবুও এসব অহেতুক কাজ সমাধা না করে অক্টোবরের আগে তারা ভোটার তালিকা তৈরির কাজ শুরু করবেন না- নির্বাচন বিধিমালা প্রণয়নের আগে ভোটার তালিকা তৈরির কাজে অনাগ্রহী নির্বাচন কমিশন কি চাইছে-
এক আজিজের গোয়ার্তুমিতে আমাদের যথেষ্ঠ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে এখন নির্বাচন কমিশনে ৩জন আজিজ একসাথে বসে আছে- এই ৩ জনের জন্য কতটুকু ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের এটা সময়ই নির্ধারণ করবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।