আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনে যাহা করিতে হয় নাই, তাহা করিতে হইল (মুরগী এবং মাছ কাটা) এবং আমি পারিলাম



গত ৫ মাস ধরিয়া আমরা মেসের বন্ধুরা রান্না করিয়া খাইতেছি। বলা বাহুল্য প্রথম প্রথম কাহারোরই উৎসাহের কোন কমতি ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে সকলের উৎসাহ কমিতে লাগিল। আমার অনেক বন্ধুই বলিয়াছিল তোরা বেশি দিন রাঁধিয়া খাইতে পারবি না কারন একটা সময় আসে যখন সবার ই উৎসাহ কমিয়া যায়। কিন্তু কেমন করিয়া জানি আমাদের বেলায় কথাটা সত্য হইল না।

উৎসাহ আমাদের কমিয়া ছিল বটে তবে একদম শেষ হইয়া যায় নাই। তো যাহাই হউক এতদিন আমরা বিভিন্ন জিনিস রান্না করিয়াছি যেই গুলা আগে কখনওই করা হইয়া উঠে নাই তাই কখনো কোনটা খুব ভাল আবার কখনও কোনটা অতিশয় অখাদ্য হইয়া যাইত। তবে এতদিনের অভিজ্ঞতায় আমরা মোটামুটি একপ্রকার রান্না বিশারদ(!) হইয়া গিয়াছি। তো যাহাই হউক, এতদিন আমরা অনেক কিছু রাধিয়াছি কিন্তু কুটা বাছার ভয়ে মুরগী কখনও আনা হইয়া উঠে নাই। মাছ যদিও বা আনা হইয়াছে কিন্তু তাহা কাওরান বাজার হইতে কুটিয়া আনা হইত।

আস্ত মাছ বা মুরগী আমাদের মেসে কখনও পদার্পন করে নাই। গতকল্য সিদ্ধান্ত লইলাম মুরগী আনিব এবং সেই মোতাবেক কাজ করা হইল। আমি কুটিতে গেলাম। প্রথম ধরিয়াই টের পাইলাম কেমন যেন বমি বমি লাগিতেছে। কিন্তু কিছুই করার নাই।

ভাবিলাম কি করিয়া মা এমন বস্তু আমাদিগকে প্রসেস করিয়া খাওয়াইতেন। আর কিছুক্ষন আগে জবাই করা বিধায় মুরগী তখনও গরম গরম লাগিতেছিল সেটা যেন কেমন লাগিতেছিল আমার নিকট। শুরু করিলাম কাটা। উহা যে কেমন অভিজ্ঞতা তাহা ভাষায় প্রকাশ করিতে পারিব না। অনেক কষ্ট হইয়াছে।

আর মাথা, গিলা আরও যেন কি কি অংশ প্রসেস করার ভয়ে ফালাইয়া দিয়াছি। কোটা বাছা শেষ করিয়া রান্না করার পালা শুরু। কাচা মরিচ, পেয়াজ, রসুন, আদা প্রভৃতি কাটিলাম। তাহার পরে রাধিলাম। খাইতে অতিশয় ভাল হইয়াছে (যাহারা খাইয়াছে তাহারা বলিয়াছে) তবে ঝাল কিন্ঞিত বেশি হইয়াছিল।

খাওয়ার সময় সবাই বলিতেছিল “এখন তো মজা করিয়া খাইতেছ, আগামী কল্য প্রতূষ্যে বুঝিবা যখন এই বস্তুর সারাংশ নির্গমন হইবে। ” ইহাই ছিল মুরগী কুটা আর রাধিবার গল্প। অদ্য (শুক্রবার ২৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার সময় বন্ধু আসিয়া বলিল, “চল বন্ধু, কাওরান বাজারে যাই, দেখি মাছ পাই কিনা”। বাজারে গেলাম। ঘরে ইদুরের উৎপাত অনেক বাড়িয়া গিয়াছে তাই ইদুরের কল কিনিব ভাবিলাম।

কিন্তু আর কেনা হয় নাই। সে যাহাই হউক, মাছের বাজারে ঢুকিলাম। খুব বেশি মাছ ছিল না। বিশালাকার রুই মাছ ছিল কয়েকটা। উহা তো আর আমাদের জন্য নহে।

অনেক খুজিয়া মিনি সাইজের ইলিশ মাছ পাওয়া গেল। জোড়া কিনিলাম ১০০ টাকায়। বন্ধু বলিল, “১০০ টাকার মাছ ১০ টাকা দিয়া কোটাইলে লস হইবে”। অতঃপর বলিলাম, “মেসে নিয়া চল, আমিই ইহাদিগকে কুটিব”। নিয়া আসিয়া প্রবল উৎসাহে কুটিতে বসিলাম।

বটির নিচে খবরের কাগজ বিছাইয়া আঁশ ছাড়াইতে লাগিলাম। উহা করিতে গিয়াই আমার অবস্থা বারোটা। আবার মায়ের কথা মনে হইল। সারা হাতে মাছের রক্ত আর মাছের আঁশ লইয়া অবশেষে অতিকষ্টে মাছ কোটা শেষ করিতে পারিলাম। তবে আজ আর মাছ রান্না করিতে গেলাম না।

বন্ধুকে সেই গুরু দায়িত্ব অর্পন করিয়া আমি এম এস ওয়ার্ড এ ব্লগ লিখিতে বসিলাম। হাতে এখন ইলিশ মাছের গন্ধ লইয়া বসিয়া আছি কখন রান্না শেষ হইবে............... For free symbian software, games click http://imbangalee.blogspot.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।