মার্কিন সেনারা সচেষ্ট রয়েছে বহুকাল 'লাদেন' নামক এক ব্যক্তিকে ধরার জন্য । কিন্তু তারা শুধু এখন পর্যন্ত অসফলই না ব্যর্থও বটে । ফলে হত্যাযজ্ঞের কোনো বিরাম নেই । আর এর ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় পৃথিবীতে অনিহতদের জন্য দুঃস্বপ্নের দরজাটি খুলে দেয়া হয়েছে । 'নরক' নামক অতিকল্পনাটি তাই আর অদৃশ্য নয় ।
চোখ খুললেই ঘন ঘন নরকের ছবি আর খবর আমাদের জন্য অপেক্ষা করে থাকে ।
কিন্তু লাদেনতো এখন আর কোনো ব্যক্তির নাম নয় ---'লাদেন' একটি ধারণার নাম ।
এই ধারণাই তার একটি মাত্র জিনিষ দিয়ে পৃথিবীর শতকোটি জিনিষের নিয়তি নির্দ্দিষ্ট করে দিয়েছে । পৃথিবী কোনোদিন কোনো পরমাণু দুর্ঘটনা বা যুদ্ধে নিশ্চিহ্ণ না হলে আরো বহুদূর কাল অবধি পৃথিবীর ভবিষ্যৎ 'লাদেন' নামক ধারণাটির হাতে বন্দি থেকে যাবে ।
ধারণা একসময় মতবাদে পরিণত হয় ।
হয়তো কিছুদিনের মধ্যে এই ধারণা মতবাদে পরিণত হয়ে নাম নেবে "লাদেনবাদ'। এর অনুসারীদের বলা হবে "লাদেনবাদী'। তৃতীয় বিশ্বে হয়তো গড়ে উঠবে এদের রাজনৈতিক দল । নাম হবে "নিধন পার্টি'(লাদেনবাদী)
এখন এই ধারণা বস্তুতঃ পরীক্ষানিরিক্ষার পর্যায়ে থাকলেও এর প্রভাব স্থানীয় রাজনীতিতে যথেষ্ট লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আমাদের চেনা বিশ্বে এর প্রধান লক্ষণ "লাশ রাজনীতি'।
উদ্দেশ্য পূরণের জন্য দরকার লাশ । লাদেনবাদও মূলতঃ লাশ নির্ভর । তবে একটু তফাৎ এই যে স্থানীয় রাজনীতি লাশ টপকে ক্ষমতার চেয়ারে বসতে তৎপর । আর লাদেনবাদ ঠিক তা নয় । তার লক্ষ্য অনেক দূরের ।
সে চায় লাশের পাহাড়, লাশের নদী, লাশের সমুদ্র । কেননা পৃথিবীকে অবিশ্বাসী কাফের শূন্য করে পৃথিবীকেও স্বর্গ করে তোলার প্রথম ধাপ হিসেবে এটাই সর্বোত্তম পথ । কেননা স্বর্গ নামক জায়গাটা চিরকালই তাদের দখলে ।
প্রাথমিক এই পর্যায়ের কাজটা নিঃসন্দেহে কঠিন এবং দীর্ঘস্থায়ী । আপাততঃ তাই যোদ্ধাদের জন্য উৎসাহ-পুরস্কার রাখা আছে লাশের সংখ্যা বিচারে ।
এক্ষেত্রেও স্থানীয়দের সঙ্গে লাদেনবাদের পার্থক্য রয়েছে । স্থানীয়রা লাশের শ্রেণী বিভাগ করে থাকেন । দামও সেই ভাবে ঠিক করা হয় । যেমন সবচেয়ে কম দাম বৃদ্ধলাশ । আর ধরা যাক তা যদি হয় একটাকা,তবে শিশু-কিশোর-যুবকের লাশ পাঁচ থেকে পনের টাকা অবধি।
তবে সবচেয়ে দামী লাশ যুবতী লাশ । দাম কুড়ি টাকা ।
লাদেনবাদীরা এই প্রসঙ্গে বলে থাকেন যে "হারামীর বাচ্চারা লাশ নিয়ে কচলাকচলি করতে ভালোবাসে । এরা লোভী শকুন । এদেরও ব্যবস্থা লাদেনবাদের দ্বিতীয় পর্যায়ে আছে ।
আপাততঃ ছাড় । লাশের আবার বাছাবাছি কী--লাশ লাশ । কত কোটি জিন্দা ছিল কতকোটি লাশ হল--ব্যস ।
এ ক্ষেত্রে বলে নেয়া ভালো যে 'লাশ' আর 'শহীদ' এর মধ্যে লাদেনবাদে পার্থক্য আছে । শহীদ নির্বাচিত হয় ।
লাশ অনির্বাচিত । লাদেনবাদীরা বলেন এখন আর শহীদের দরকার নেই । এখন দরকার লাশের । লাশের সংস্কতি নেই । শহীদের সংস্কৃতি আছে ।
ওটা কাফেরের সংস্কৃতি । লাদেনবাদে সংস্কৃতি বলে কিছু হয়না । সংস্কৃতি দিয়ে মানুষ স্মৃতি-ধারা নির্মাণ করে । যুক্তি তৈরী করে । তা দিয়ে বিচার করে সবকিছু ।
প্রশ্ন করে । প্রশ্ন করা কাফেরদের স্বভাব । কাফেররা শহীদ নিয়ে কাব্য করে, গান গায়, ছবি আঁকে, স্মৃতি স্থম্ভ বানায়----এসব লাদেনবাদে হারাম । ---------(চলবে)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।