আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেড়ানোর গল্প( কুইবেক এর ছোট্ট পাহাড়ী শহর মন্টত্রম্বল্য)এক



এ বছরেই জুলাই এর ২৭ তারিখে মন্টত্রম্বল্য(Mont Tremblant) গেছিলাম। কুইবেক এর একটা শহর। মন্ট্রিয়েল আর অটোয়ার মাঝামাঝি। বড় ভাই দেশ থেকে এসেছে। উনাকে নিয়ে এবার ঘোরাঘুরি।

আসার পর প্রতি উইকএন্ডে কোথাও না কোথাও যাওয়া হচ্ছে.... সকালবেলা আবহাওয়া চ্যানেল দেখে মনটা একটু খারাপ হলো। বৃষ্টির সম্ভাবনা যেখানে যাচ্ছি সেখানে। এতো সুন্দর মন কাড়া একটা শহর....বৃষ্টি দিনে যেতে হবে! যাই হোক সকাল সকাল উঠে মুরগীর বিরিয়ানী বানালাম। আর ডিম সিদ্ধ। বানী,মনির ওয়াসীরা তিনজন আর আমরা পাঁচজন বড় ভাই সহ ।

পথে কোথায় কোন পিকনিক স্পটে থেমে খাওয়া হবে। তেমনই ইচ্ছা। আল্লাহর নাম নিয়ে বের হলাম। অটোয়ার বাইরে যেতে না যেতেই আকাশ কালো করা মেঘেদের উড়াউড়ি। পাহাড়ী পথ দিয়ে যখন যাচ্ছিলাম.....একদম রাংগামাটি যাবার অনুভূতি।

পাহাড়ের পাশ দিয়ে পথ। গান বাজছিলো দেশ থেকে বন্ধু অমিত এর পাঠানো বাংলা গানের সিডিতে.....সুবীর নন্দী,সৈয়দ আবদুল হাদী,বারী সিদ্দিকী। এত ঝমঝম করে বৃষ্টি নামলো ,পাহাড়িয়া পথে গাড়ী চালাতে বেশ কষ্ট হচ্ছিল ওর। পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে দেখি কোথায় কোন মেঘ থেকে নেমে আসছে সে কি ঝমঝম বৃষ্টি। মনটা খারাপ লাগতে লাগলো......।

বৃষ্টি শেষ হতে না হতেই আমারা শহরে ঢুকে গেলাম......অবাক কান্ড এখানে কোন বৃষ্টি হয় নি। মনটা এত ভালো লাগলো। বেড়ানোর জন্য একটা সুন্দর সোনালী দিন। এখানে রাস্তাগুলো খুব আঁকাবাকা। একটা পিকনিক স্পটে গাড়ী থামানো হলো।

রাস্তার পাশেই। পাশাপাশি ২ টা বেঞ্চে বসে খাওয়া হলো.....এত সুন্দর একটা দৃশ্য.. নদীর পাড়ে। বানীদেরও এই প্রথম আসা। আমরা গত বছর এসেছিলাম......এবার ইচ্ছে ছিলো একদিন এসে একরাত থেকে ঘুরবার.....। কিন্তু বেশ ক'দিন আগে থেকে বুকিং না দিলে হোটেল পাওয়ার প্রশ্নই আসে না সামারে।

খাওয়ার পর্ব শেষ করে আমরা লেকের পাড়ে রওনা দিলাম..ভাগ্য ক্রমে গাড়ী পার্কিং এর খুব ভালো জায়গা পেলাম লেকের পাশেই। তাও আবার ফ্রী পার্কিং। এত সুন্দর জায়গায় ফ্রী পার্কিং দেখে আমরা তো রীতিমত অবাক। পানির শব্দ আসছিলো পাশে কোথাও থেকে। ঝর্নার পানির মত শব্দ.....।

একটু হেঁটে এগিয়ে দেখি খুব সুন্দর একটা বাঁধানো বাঁধের উপর থেকে পানি নামছে ঝর্নারই মত। জায়গাটা এত সুন্দর। সবুজ গাছের পাতাদের ছায়া পানির উপর। মনে হচ্ছিল অনেক সময় বসে থাকি কাঠের ঘরটায়। ছবি তুললাম অনেক।

এরপর হেঁটে হেঁটে লেকের দিকে। এই সেই লেকের পাশের দারুণ জায়গাটা যা আমাকে দারুণ ভাবায়। মন খারাপ থাকলে আমি এই সুন্দর জায়গাটার কথা ভাবি। পাহাড়ের পাশে বয়ে যাওয়া এই লেকটা মনটাকে কেমন উন্মনা করে দেয়। বড় ভাই খুব পছন্দ করলেন জায়গাটা....।

অনেক্ষন বসা হলো। এখান থেকে সবাই রিভার ক্রুজে যায়.......পাহাড়ের উপর বাড়ীঘর গুলো এখান থেকে ছোট্ট মনে হয়। পানির পাশে বসে থাকার আনন্দই আলাদা। ভিলেজ এড় প্রথমেই একটা ঘড়ি। নীচের অংশে বেশিররভাগ দোকান পাট।

রেষ্টুরেন্টও আছে। ইট বিছানো পথ....। যেখানে হাঁটলে নিজেকে কেমন যেনো অন্য রকম লাগে। নিজের মধ্যেকার ভালোগুলো আলো হয়ে যায়। মানুষের ভীরে নিজেদের খুঁজে ফেরা।

এখানে কেউ একা এলে আমি নিশ্চিত তার মনে হবে পাশে কেউ থাকলে ভালো হতো। ছায়ার মত পাশে পাশে হাঁটবে পাশাপাশি। কথা বলবে। শহরের এই জায়গাটা খুব পছন্দ আমাদের দুজনের ও..... pedestrian village বলে ওটাকে....। ওখানে শুধু পায়ে হাঁটা পথ।

চলবে......................................

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।