জীবন আসলে চিল্লাপাল্লা ছাড়া কিছুই না। সেটাই করতে চাই, মনের সুখে, ইচ্ছা মতন। প্রাচীন স্টাইলে একটা গল্প বলি, কেমন? এক গ্রামে কয়েকটা কুকুর ছিল। এদের কুত্তা বললাম না কারণ এরা গ্রামের অপরিহার্য অংশ হয়ে পরেছিল। সেই গ্রামের সকল নিরাপত্তার ভার তাদের ঘাড়ে বর্তেছিল।
রাত জেগে গ্রাম পাহারা দিত, চোর আসলে ঘেও ঘেও আওয়াজ ও করত। বিনিময়ে এর তার বারান্দায় পড়ে থাকা খাবার খেয়ে নিত কুকুর গুলো। এতে মানুষজন খুব একটা আওয়াজ করত না। বরং এটি গ্রামের মানুষদের জন্য বিনোদনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। লোকজন দলে দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন কুকুরের পক্ষ নিয়ে নিজ নিজ কুকুরের প্রশস্তি গাইত।
নিজ নিজ কুকুরের সুনাম গাইত, ভালই চলছিল তাদের দিনকাল।
গ্রামের কুকুরগুলোর মধ্যে একটা ছিল পাগলা। সেই কুকুর যখন তখন একে তাকে কামড় দিত। ঘর থেকে খাবার চুরি করে খেত। একসময় সেই পাগলা কুকুর পাশের গ্রামের কুকুরের সাথে পার্টি বেঁধে ঐ গ্রামের কুকুরদের তাড়িয়ে দেয়ার প্লান করে বসলো।
পাগলা কুকুরের তো আর এতো হুঁশ জ্ঞান থাকার কথা না। সে গ্রামের কুকুরদের তাড়িয়ে দেয়ার জন্য “কাকের মাংস কাকে খায় না” প্রবাদের অসাড়তা প্রমাণের মিশনে নেমে গেলে। পাগলা কুকুরটি পাশের গ্রামের কুকুরগুলোর সহায়তায় নিজ গ্রামের কুকুর গুলকে খামচে... খোবলে... আহত করতে লাগলো, এমন কি খেয়ে ফেলতে শুরু করলো। গ্রামে দরবার বসলো, দরবারে সেই পাগলা কুকুরটির ঘেও ঘেও করা আইন করে নিষিদ্ধ করা হল। কিন্তু তাকে গ্রাম থেকে বের করে দেয়ার মত সহজ উপায়টি মোড়ল কোনও এক অজ্ঞাত কারণে একবারও মুখ দিয়ে বের করলো না।
এখন পাগলা কুত্তা যদি গ্রামে থাকতেই পারে তাহলে তার ঘেও ঘেও করার অধিকার কেড়ে নেয়ার মানে কি? কুকুর বেঁচে থাকলে বা গ্রামে ঘুরে বেড়ানোর রাইট থাকলে তো ঘেও ঘেও করবেই। সে কুকুর ঘেও ঘেও করার অধিকার আদায়ের জন্য রাস্তায় নামলো, চিৎকার চ্যাঁচামেচি করা শুরু করলো। মাঝে মাঝে সুযোগ বুঝে অন্য কুকুরদের কামড়ে দিতে লাগলো। গ্রামবাসীর ঘুম এতদিনে শিকেয় উঠেছে কুকুরের চ্যাঁচামেচিতে।
এখন বিবেচনার বিষয় হচ্ছে, কুকুর যদি ঘেও ঘেও করার অধিকার চায় তাহলে সেখানে তো কোনও দুষ দেখি না।
ক্যান ঘেও ঘেও করার অধিকার তাকে দেয়া হবে না? যদি সেই কুকুর পাগলাই হয় তাহলে তাকে মেরে ফেলা বা গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেয়টাই কি উত্তম সিদ্ধান্ত ছিলনা? গ্রামের মোড়লকে তো এখানে একদম নিষ্পাপ বলাটা ঠিক হবে না।
বিঃদ্রঃ ইহা একটি স্বপ্নে পাওয়া কাল্পনিক গল্প। কোনও বাস্তব ঘটনার সাথে মিলে গেলে বা কারো অতি-উর্বর মস্তিষ্কে গল্পটি আঘাত হানলে লেখক দায়ী থাকবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।