বিএসএফ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি অত্যন্ত সাপর্শকাতর হওয়ায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য এই রায় বাহিনীর মহাপরিচালকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ওই রায়ে বলা হয়, বিএসএফ ১৮১ নম্বর ব্যাটালিয়নের হাবিলদার অমিয় ঘোষের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ আদালত পায়নি।
বিএসএফের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “মহাপরিচালকের সিদ্ধান্তের পর আমরা রায়ের বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে পারব।
অবশ্য বৃহস্পতিবার ওই রায়ের পর হাবিলদার অমিয় ঘোষকে মুক্তি দেয়া হয়েছে বলে বিএসএফ সূত্রের বরাত দিয়ে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা বিষয়টি শুনেছি।
তবে অফিশিয়ালি আমাদের কিছু জানানো হয়নি। আমার তাদের সঙ্গে কথা বলে জানার চেষ্টা করছি। ”
২০১১ সালের ০৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তে পঞ্চদশী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের এক জওয়ান।
ফেলানীর বাবা নাগেশ্বরী উপজেলার দক্ষিণ রামখানা ইউনিয়নের বানার ভিটা গ্রামের নুরুল ইসলাম নূরু ১০ বছর ধরে দিল্লিতে কাজ করতেন। তার সঙ্গে সেখানেই থাকতো ফেলানী।
দেশে বিয়ে ঠিক হওয়ায় বাবার সঙ্গে ফেরার পথে সীমান্ত পার হওয়ার সময় কাঁটাতারের বেড়ায় কাপড় আটকে যায় ফেলানীর। এতে ভয়ে সে চিৎকার দিলে বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করে এবং পরে লাশ নিয়ে যায়।
কাঁটাতারের বেড়ায় ফেলানীর ঝুলন্ত লাশের ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে বিশ্বজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ সরকার ও মানবিকার সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদ জানানো হয়।
বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির পক্ষ থেকেও বিএসএফের সঙ্গে বিভিন্ন বৈঠকে ফেলানী হত্যার বিচারের জন্য চাপ দেয়া হয়।
এরপর গত ১৩ অগাস্ট ভারতের কোচবিহার জেলায় সোনারি বি এস এফ ছাউনিতে কনস্টেবল অমিয় ঘোষের বিচার শুরু হয়। পাঁচজন বিচারক এই বিচার প্রক্রিয়া পরিচালনা করেন। আর আদালত পরিচালনা করেন বি এস এফের গুয়াহাটি ফ্রন্টিয়ারের ডি আই জি কমিউনিকেশনস সি পি ত্রিবেদী।
অমিয় ঘোষলে বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অনিচ্ছাকৃত খুন এবং বি এস এফ আইনের ১৪৬ ধারায় অভিযোগ আনা হয়।
ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরু ও মামা আব্দুল হানিফ ভারতে গিয়ে এ মামলায় সাক্ষ্য দেন।
মেয়ের হত্যাকারীর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন ফেলানীর বাবা।
কুড়িগ্রাম জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর এস এম আব্রাহাম লিংকন এ মামলায় ফেলানীর পরিবারকে আইনি সহায়তা দেন। তাদের সঙ্গে বিজিবি-৪৫ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিয়াউল হক খালেদও ভারতে যান মামলার কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে।
ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায়ই বিএসএফের গুলিতে নিরস্ত্র বাংলাদেশি নিহতের ঘটনা ঘটলেও কোনো সীমান্তরক্ষীর বিচারের মুখোমুখী হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।