কবে যাবো পাহাড়ে... কবে শাল মহুয়া কণকচাঁপার মালা দেব তাহারে....
ভারত সরকারের কাছে বাংলাদেশের অনেক দায়ঠেকা আছে, কথা সত্য। তবে ভারত সরকারেরও বাংলাদেশের কাছে দায়ঠেকার অভাব নেই। ভারত এই অঞ্চলের অন্যতম পরাশক্তি। পাকিস্তানের সাথে তাদের খুনসুটি লেগে থাকলেও ওদের একমাত্র প্রতিদ্বন্দী চীন। এবং ক্ষমতার ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রথমত ভারত এবং বাংলাদেশের মিলিত ভূখন্ড এবং সমুদ্রসীমায় ওদের আধিপত্য বজায়ে রাখা জরুরী।
ম্যাপ দেখলেই বোঝা যায়- বাংলাদেশ সরকারের কিছুমাত্র অসহযোগিতায় ভারত চীনের কাছে অরুনাচল প্রদেশ হারাতে পারে। তার সাথে এক লহমায় বিচ্ছিন্ন হতে পারে পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সাথে কেন্দ্রের যোগাযোগ। এছাড়া ভারতের বিভিন্ন সীমান্তে যেসব বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি তৎপর আছে, তাদের বাংলাদেশে কোনো স্থান নেই। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ওরা যাতে অস্ত্র পাচার করতে না পারে, কিংবা ভারতে অপরাধ করে বাংলাদেশে লুকাতে না পারে- সেটা নিশ্চিত করতে বিজিবি অত্যন্ত তৎপর। বিজিবি যেন সবসময় এতটাই তৎপর থাকে- সেটাও ভারতের একান্ত কাম্য।
ভারত থেকে বিনা শুল্কে যে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাড়ীসহ অন্যান্য পোশাক, কসমেটিকস, যন্ত্রাংশ, মাদকদ্রব্য এমনকি গরু-ছাগল বাংলাদেশে প্রবেশ করে- সেগুলো সম্পূর্ণভাবে রুখে দিলে আমাদের দেশীয় শিল্পই বিকশিত হবে। দেশের টাকা দেশেই থাকবে। এবং ভারতীয় অর্থনীতি ১৬ কোটি কাস্টমার হারাবে।
বাংলাদেশ ছোট্ট দেশ, কিন্তু বাংলাদেশের সেনাবাহিনী যথেষ্টই শক্তিশালী। সীমান্তরক্ষায় তাদেরকে ব্যবহার করা হয় না দেখে তারা জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে আফ্রিকায় গিয়ে যুদ্ধ করে।
শান্তিরক্ষা বাহিনীর প্রায় অর্ধেকই বাংলাদেশী সেনা দিয়ে গঠিত। ভারতও চায়না যে বাংলাদেশ সীমান্তে সেনা মোতায়েন করা হোক। চীন এবং পাকিস্তান সীমান্ত রক্ষায় তাহলে তাদের যথেষ্টই অসুবিধায় পড়তে হবে। বিএসএফ দিয়ে তো আর কাশমীরের অপারেশন চালানো সম্ভব না।
মোদ্দা কথা হলো: ভারত এবং বাংলাদেশের পারস্পরিক সহযোগিতা না থাকলে এই দুটি দেশেরই অনেক অবাঞ্ছিত অসুবিধায় পড়তে হবে।
বিগত চল্লিশ বছর ধরে আমরা ভারতকে দিয়েই গেছি। ট্রানসিট, শুল্কমুক্ত রপ্তানী, সীমান্তে অস্ত্র চোরাচালান এবং সন্ত্রাস দমনে সহায়তা, ইত্যাদি ইত্যাদি। সবচেয়ে বড় কথা- আমরা কখনোই চীনের প্রতি খোলাখুলি বন্ধুতার হাত বাড়াইনি ভারতের সংবেদনশীলতার কারণে। এর বিনিময়ে ভারত আমাদের দেশের অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের ‘শুট এট সাইট’ না করে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে বিচার করবে- এতটুকু আমরা প্রত্যাশা করতেই পারি। আমাদের ফরেন পলিসি যদি কিছুটাও শোধরানো যায়, আমাদের রাজনৈতিক নেতাদেরকে যদি একটুও সোজা করা যায়- তাহলে অনেক কিছুই বদলাতে পারে চোখের নিমেষেই।
১৪২ নম্বর রোডের ‘ফেলানী সড়ক’ নামকরণের মধ্য দিয়েই যাত্রা শুরু হোক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।