গত ১২ ই নভেম্বর, ২০০৮ সকাল ১০:৪৫, ব্লগার বর্ণ ডট (বর্ণ.) একটা পোস্ট দিয়েছিলেন, ইসলাম বিরোধিতাই কি স্বাধীনতার 'স্বপক্ষ শক্তির' আদর্শ? তাতে এক জায়গায় লিখেছিলেন, “"ইসলাম জামায়াতে ইসলামীর একার কোন সম্পত্তি না। ” তাতে আমার কমেন্ট এবং বর্ণ ডটের জবাব ছিল নিম্নরূপঃ
[[রাস্তার ছেলে বলেছেন:
"ইসলাম জামায়াতে ইসলামীর একার কোন সম্পত্তি না। "
বিভিন্ন সভা সমাবেশে বেহেশতের টিকেটের নিঃশ্চয়তা দেবার সময় কথাটা মনে রাখলেই হয়!
লেখক বলেছেন: আপনাকে কে বেহেশতের টিকিট দিয়েছিল?
রাস্তার ছেলে বলেছেন: আমাকে বেহেশতের টিকিট কোন মাউলানার দেয়ার ক্ষমতা নেই। কারণ আমি নাস্তিক! আপনাদেরকে এটা সরাসরি হাই অফিসিয়ালথেকে রিলিজ করে আনতে হবে!
লেখক বলেছেন: কথা পরিষ্কার করেন- আপনি যদি জামায়াতকে ইঙ্গিত করেন, তবে জামায়াতের কোন সভা সমাবেশে শুধু জামায়াত কর্মীরাই বেহেশতে যাবে এমন সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে?
রাস্তার ছেলে বলেছেন: আপনাদের নিজামিই তো পল্টনে সমাবেশে এসব বলেছিল মনে নাই? শুধু পল্টন শুধু নিজামিই অবশ্য শেষ বা শুরু নয়! আপনার জন্য কোন লিংক খুঁজে পাওয়া যায় কিনা দেখি। তবে ২০০১ এর নির্বাচনের আগের নির্বাচনী প্রচারণায় এসব কথা ছিল বলেই আমার মনে পড়ে।
আমার জানা মতে ২০০৪ বা ০৫ এও একথা নিজামি এবং তার সাথে আরেকটা কে যেন জেলে গেল, সেও বলেছে।
লেখক বলেছেন: গাজাখুড়ি গপপো কোথায় পেয়েছেন? নিজামী কোথায় কবে বলছে যে বেহেশত জামায়াত শিবিরের কর্মীদের একার জন্য রিজার্ভ। এই কথা ফের বললে জামায়াত শিবিরের শত্রুরাও আপনাকে পাগল ভাবা শুরু করবে। ]]
এরপর আমি আর কথা বাড়াই নি সেদিনের মত। আসলে এসবের আবার লিংক লাগবে ব্যাপারটা মাথাতেই আসেনি! তবে আসলেই এই সব কথার লিংক খুঁজে পেতে আমাকে রীতি মত গলদঘর্ম হতে হয়েছে! ভাবতেই পারিনি তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে এত নাকানি চোবানি খেতে হবে! ছাত্রত্ব শেষ অনেক আগেই।
তাই কোন ভার্সিটির লাইব্রেরীও আমার জন্য খোলা নয়! যা হোক, শেষ পর্যন্ত ব্লগার বর্ণ ডটকে আর নিরাশ করতে হয়নি!
এখানে লক্ষণীয় শেষ মন্তব্যে বর্ণ ডটের জবাব। আমার তথ্য সূত্রের দূর্বলতা এবং ঘটনার সম্যক সম্পর্কে আমার ধারণার অপর্যাপ্ততা আঁচ করতে পেরেই তিনি আমার কথাকে গাঁজা খুরি বলতে সাহস করেছিলেন এটা পরিষ্কার। নাহলে আমি যখন বললাম লিংক দেবার চেষ্টা করছি, তখনই এভাবে আক্রমণ আর কি নির্দেশ করতে পারে? এটা এক ধরণের অভদ্রতাও বটে!
মানছি, জামাতিরা যখন নিজেদের ৭১ এর সর্বজন বিদিত অপরাধের কথাই খুব সহজে অস্বীকার করে তখন এভাবে কোন লিংক ছাড়াই আরেকটা সর্বজন বিদিত অপরাধের কথা বলাটা আমার উচিত হয় নি! আমার জানা উচিত ছিল, জামাতিরা খোলা মাঠে ভরা মজলিসে যাই বলুক না কেন, তার প্রমাণ না থাকলে তা টিপিক্যাল জামাতি ধাঁচের অস্বীকারের রিসাইকেল বিনে পড়তে বাধ্য! যা হোক, শিখলাম! এবার দেখা যাক জামাত বেহেশতের টিকিট বিক্রির লাইসেন্স রাখার দাবি কখনও করেছে কিনা!
১৪ই সেপ্টেম্বর, ২০০৩ জামাতের সংসদীয় দলের উপনেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর নির্বাচন বাতিল করেন হাইকোর্ট। তার অনেক কারণের মধ্যে একটা কারণ:
সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়, তিনি প্রচারণার সময় দলীয় সভা থেকে পিরোজপুর-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী সুধাংশু শেখর হালদারকে ‘কাফের’ উল্লেখ করে বলেন, ‘কাফের কে ভোট দেবেন না’, ‘কাফেরকে ভোট দিলে জানাজা হবে না’, ‘আওয়ামী লিগকে ভোট দিলে জান্নাতবাসী হবেন না’ এবং ‘কাফেরকে ভোট দিলে গুনা হবে’। নির্বাচনী জনসভায় তিনি আরো বলেন, ‘আমাকে ভোট দিলে বেহেশতে যেতে পারবেন’, ‘আমি বেহেশতের টিকিট দেব’।
- তথ্য সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো, সোমবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০০৩ এর হেডলাইন। ঐ দিনের অন্যান্য পত্র পত্রিকাতেও এসব ছাপা হয়েছিল। আমার মনেহয়, বর্ণ ডটদের মুখপত্র 'সংগ্রাম' খবরটা ছাপায়নি, তাই ব্যাপারটা তিনি জানতে পারেননি! (ঐ খবরের কাগজটা আমি আর বের করতে পারিনি)
মজার ব্যাপার হল, এ সব ব্যাপার নিয়ে মামলা মোকদ্দমা হয় না বললেই চলে (আসলে আমার জানা মতে এই একটাই হয়েছে)। কিন্তু সুধাংশু শেখর হালদার ছাড় দেননি বলেই তিনি মামলা দায়ের করেন, যার ফলশ্রুতিতে আমি এসব কথার তথ্য সূত্র দেখাতে পারলাম! কথা হল, হাটে মাঠে ঘাটে আমাদের জামাতিরা যে এসব কথা বলে বেড়ায় তা সবারই জানা আর তার জন্য তথ্য সূত্র দেবার দরকার হয় না। অথচ সূত্র দিতে হবে, জামাতিরা ব্যাপারটাকে এই পর্যন্ত নিয়ে যেতে সমর্থ হয়েছে দেখা যাচ্ছে! তবে তাতে আমারই ভাল হয়েছে দেখছি! তথ্যটা একে বারে পার্ফেক্টলি জানা হয়ে গেল!
ধন্যবাদ ব্লগার বর্ণ ডট!
এবার আমি দেখতে চাই, আমাকে কেউ পাগল ভাবেন কিনা আর আমার 'গপ্পোকে' কারও কাছে গাঁজাখুরি মনে হয় কি না!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।