নেটবিশ্বের রাজকুমার ওবামার বিজয় সারা পৃথিবীতে সাড়া ফেলে দিয়েছে। শুধু কৃষ্ণাঙ্গই নয় আরো অনেক বিষয় নিয়েই সমগ্র বিশ্বের কৌতুহলের কেন্দ্রে ছিলেন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বরাক ওবামা। আর তাই সারা পৃথিবী রুদ্ধশ্বাসে অপেক্ষা করছিল টানটান উত্তেজনাময় এই নির্বাচনে।
আর ফলাফলে দেখা গেল ওবামার নিজেকে নিয়ে করা নিজের মন্তব্যই সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
My weakness is I'm just too awesome...
I was born in the planet Cripton. Sent by my father to save the world...
এগুলো যদিও অনেকবার চর্বিতচর্বণ করা হয়ে গেছে তবুও গুড ফান।
তাই ওবামার বিজয়ের সাথে সাথেই ওবামাকে সুপারম্যানের সাথে তুলনা করা শুরু হয়ে গেছে। আর আমেরিকান নির্বাচনে কোন প্রার্থীর জন্য বিশ্বব্যাপী এমন ব্যাপক সমর্থন বহুদিন ধরেই দেখা যায়নি। তবে ম্যাককেইনের সমর্থনেও মানুষ ছিল। যেমন, ভারত চাইছিল ম্যাককেইন আসুক তাহলে ভারতের আউটসোর্সিং এর বাণিজ্য আরো কিছুদিন বেঁচেবর্তে থাকবে সেদিকে ওবামা আমেরিকান কর্মসংস্থান আমেরিকাতেই রাখার পক্ষপাতী ছিল। আবার বিলেতের প্রধান দুই দলের মধ্যে বর্তমানে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি হিলারীরে হালকা সাপোর্ট করেছিল আর প্রধান বিরোদীদল তাদের জনভায় ম্যাককেইনকে গেস্ট স্পীকার রেখেছিল।
ফলে ওবামার বিজয়ে অনেকেই এট্টু বিব্রত।
আরেকটি বিষয় নিয়ে নির্বাচনের আগে বিপুল বিতর্কের ঝড় বয়ে যাচ্ছিল সেটি হল ব্র্যাডলি এফেক্ট । যারা জানেন না, সেটি হল মৌখিকভাবে কোন কৃষ্ণাঙ্গ প্রার্থীকে সমর্থন দেয়া সত্বেও ভোটকেন্দ্রে গিয়ে তাকে ভোট না দেয়া তার বর্ণের কারণে। আজকাল সবাই বলছেন যে ওবামা ব্র্যাডলি এফেক্ট কাটিয়েই বিজিত হয়েছেন। কিন্তু আমার পর্যবেক্ষণ হল, ওনামা যা অর্জন করেছেন তা সমাজবিজ্ঞানের পাতায় ওবামা এফেক্ট নামেই থাকা উচিৎ।
কারণ এই বছর গত নির্বাবাচনের তুলনায় প্রায় ত্রিশ থেকে চল্লিশ লক্ষ ভোটার বেশী অংশগ্রহণ করেছিলেন আর গতবারের নির্বাচনও ছিল চার দশকের সর্বোচ্চ অংশগ্রহণকৃত নির্বাচন। তাই এই বিশাল পরিমাণে ভোটার সংগ্রহের পরেও ওবামার ৫২% জনপ্রিয় ভোটের বিপরীতে ম্যাককেইনের ৪৬% জনপ্রিয় ভোট মানে হল একটাই। এইবছর বহু মানুষ যারা অন্যান্য বছরে মনে মনে রিপাবলিকান সমর্থন করলেও কষ্ট করে ভোট দিতোনা তারাও ভোট দিয়েছে শুধু ওবামাকে ঠেকানোর জন্য। তবুও হাড্ডাহাড্ডির এই নির্বাচনে জেতার কারণে কৃষ্ণকুমারকে অভিনন্দন।
ওবামার বিজয় পৃথিবীর জন্য কি বয়ে আনবে তা সময়ই জানিয়ে দেবে।
তবে ইনফর্মেশন টেকনলজীর সর্বোচ্চ ব্যাবহার কি হতে পারে তা দেখিয়ে দিয়েছেন ওবামার টীম। সেদিন ওবামার একজন স্ট্র্যাটেজী এডভাইজরের সাক্ষাতকার দেখছিলাম। প্রতি সমর্থকের নাম ঠিকানা তো অর্গানাইজড ডাটাবেসে ছিলই একই সাথে ভোট সংগ্রহের জন্য তারা লোকাল লাস্টনেম দিয়ে ক্যামপেইন করেছে। যেমন কোন পাড়ায় আপনে থাকেন আর আপনার নামের শেষে চৌধুরী আছে আর আপনি ওবামার কড়া সাপোর্টার, তাহলে আপনার কাছে লিস্ট চলে যাবে সেই পাড়ার আরো পাঁচজন চৌধুরীর নাম ঠিকানা আর আপনাকে দায়িত্ব দেয়া হবে আপনি তাদের ভোট জয় করার চেষ্টা করবেন।
এইরকম আরো অনেক ফিউচারিস্টিক টেকনিকের দূরদর্শী ব্যাবহার প্রাচীনপন্থী প্রতিপক্ষকে তো বটেই এমনকি বহু ঝানু রাজনীতি বিশেষজ্ঞকেও অভিভূত করে ফেলেছে।
আর জুয়ার দোকানগুলোতে এখনি জুয়াবাজী শুরু হয়ে গেছে ক্ষমতাগ্রহণের দুবছরের মাঝেই ওবামাকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়া হবে। দেখাই যাক কি হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।