বিপ্লবী চে গ্যেভারার প্রতি
আপনার অপুষ্ট গোঁফের কাছে একটি জাগ্রত মৌমাছি পূর্ণিমার রোদের ভেতর ছায়া ফেলে গেলো; সুঠাম গাল বেয়ে চারুকর্মের প্রতিধ্বনি
তুলে তখন ঝরছে পরিণত ঘাম, শ্মশ্রুর গামছায়
মুছে দেহজ দূষণ, চিকচিক করছে যেন চাঁদের গুড়ো-
এমন কিছু আশ্চর্য কবিতার মতো বিদগ্ধ ক্ষণের সম্রাট ছিলেন আপনি।
ব্যয়সাধ্য আলাপের ক্ষণে আমরা ক্রমশ নেচে উঠছি
আমাদের বিশ্বাসে দোল খাচ্ছে পৃথিবী। যেমন কাঁচের স্বচ্ছ কায়া
চোত মাসের শুকনো মাঠ, গরম চায়ের ওপর এক ইঞ্চি পুরু
সর্পিল আচরণ, টেবিলের কালচে সেলুনে রকমারি ঠাট্টা-
স্যাল্যুট স্যাল্যুট চে আর্নেস্তো গ্যেভারা
আপনাকে দিলাম সব আমাদের দিনরাত আমাদের চিন্তার ঘাম।
বসন্তের কৃষ্ণচুড়া বেগবান লাল নিয়ে ফোটে। জলের শ্যাওলা তুলে পা ফেলে কাদার গভীরে, নিঃশ্বাস নিয়েছি এই দেহে; সজীব জেগেছি আমি চে'
এই বিলের জলের কালো গহীন অন্ধকারে চিন্তার ঘ্রাণ ছেড়ে যান
কৃষ্ণচুড়ার গালে লাল মগডালে আছড়ে পড়েন যেন মাভৈঃ বিপ্লব!
স্বপ্নের গোলাঘরে উপচানো ধানের ভেতর আরেক স্বপ্ন নিয়ে কৃষকের অমার্জিত হাসি- হাসিতে বের হওয়া অপুষ্ট মাড়ির ছোড়া দূর্গন্ধের পাশে
আপনার স্বাক্ষর দেখে কবে সেই নিষিদ্ধ মানুষেরা জড়ো হবে এসে?
আপনার অপুষ্ট গোঁফের কাছে একটি জাগ্রত মৌমাছি পূর্ণিমার রোদের ভেতর ছায়া ফেলে যেতে যেতে তিল হয়ে গাঁথে গালের চামড়ায়।
চে, গতিশীল মৌমাছিটি ছিলেন আপনি ছায়াটিও আপনারই ছিল
আর সেই কালো তিলক মৌমাছির ছায়ায় ছায়ায় গতিশীল ছিল যা-
আমরা, এই আমি- এই তিনি, পৃথিবীর অন্য প্রান্তে বসে
আপনার বিশ্বাসকে ক্ষত হতে দেখে যিনি চোখের দরোজা খুলে ভিজিয়ে
ফেললেন চোখ- হাতে একটি খবরের কাগজ...
প্যারাসুট থেকে মায় অন্তর্বাস পর্যন্ত ব্যবহৃত বাণিজ্যবান্ধব চে গ্যেভারা'কে নিয়ে কবিতাটি লিখেছিলাম ১৯৯৯ সালের দিকে। টগবগে তরুণ বয়সে লেখা উচ্চকিত এ কবিতাটি পরে কবিতাপত্র নামের পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছিল। তখন লিখেছিলাম বলে সই, নয়তো এখন লিখতে বসলে কলম দিয়ে এক আঁকও বেরুতো কিনা সন্দেহ। মুক্ত জীবন ও প্রতিবাদী মানুষের চরম আদর্শ তিনি। তাকে নিয়ে লেখা হয়নি এমন সাহিত্যের ভাষা বোধকরি কম।
বাংলা ভাষায় তাকে নিয়ে অনবদ্য কবিতাটি লিখেছিলেন সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়।
ব্লগার মাহবুব মোর্শেদ একবার তার ধীরে ধীরে ব্র্যান্ড হয়ে ওঠার মর্ম নিয়ে একটি পোষ্ট দিয়েছিলেন সামহোয়ারইন ব্লগে। বাণিজ্যের বেসাতি ও কর্পোরেট বাতাবরণে সুপার হিরো হয়ে ওঠা এই বিপ্লবীকে নিয়ে বোধকরি এই দুনিয়া আরো কিছুকাল সময় কাটাবে। তারপর যখন থিতিয়ে উঠবে তখন মানুষটা বেঁচে থাকবে তার নিজের যায়গায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।