শামসুন নাহার মাহমুদের শত তম জন্মবার্ষিকী পালিত হয়ে গেল ১৯ অক্টোবর ২০০৮ইং। নারী শিক্ষা এবং নারীদের ভোটাধিকারের আন্দোলনসহ বিভিন্ন কাজের জন্যে এদেশের নারী সমাজের কাছে খুবই আপন ও প্রিয় একজন শামসুন নাহার মাহমুদ। এদেশের নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে, নারী জাগরণের প্রচার ও প্রসারে শামসুন নাহার মাহমুদ অনন্য কীর্তি ও অবদান রেখে গিয়েছেন। এই উপলক্ষ্যে ১৯ অক্টোবর বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হল জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠান এবং বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।
আজ এদেশে শিক্ষিত মহিলার সংখ্যা অনেক।
কিন্তু ষাট সত্তর বছর আগে এমনটি ছিল না। তখন মেয়েদের লেখাপড়া শেখা বা স্কুলে যাওয়াই ছিল নিষিদ্ধ। রক্ষণশীল সমাজের শাসনে মেয়েদের পর্দার অন্তরালে এক রকম বন্দী জীবন যাপন করতে হতো। এমনি অবস্থায় শামসুন নাহার রক্ষণশীল সমাজের সকল ভ্রূকুটি ও শাসন উপেক্ষা করে উচ্চশিক্ষা লাভ করেছেন, এবং নিজ সমাজের অসহায় ও দুর্গত নারীদের জাগরণের ব্রত নিয়ে অক্নান্ত পরিশ্রম করেছেন। ১৯০৮ সালের এই দিনে শামসুন নাহার মাহমুদ নোয়াখালী জেলার ফেনী মহকুমার গুতুমা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
কর্মজীবনে শামসুন নাহার মাহমুদ বেশকিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির মেম্বার ছিলেন। এছাড়াও তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষার পরীক্ষক, বেঙ্গল বোর্ড অব সেন্সর-এর সদস্য, 'ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব উইমেন'-এর সমগ্র এশিয়ার আঞ্চলিক ডিরেক্টর পদে নিয়োজিত হয়েছিলেন। সমগ্র পাকিস্তান শিশু কল্যাণ পরিষদের সভানেত্রী নির্বাচিত হন ১৯৬৩ সালে। ১৯৬২ সালে তিনি লেডিস ক্লাবের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৪৭ পরবর্তী সময়ে তিনি ঢাকায় মহিলাদের জন্য প্রতিষ্ঠা করেন 'বেগম ক্লাব'।
১৯৬১ সালে শামসুন নাহারের চেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় 'পঙ্গু শিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র'।
লেখার জগতেও ছিল তাঁর অসমান্য অবদান। তাঁর সম্পাদিত পত্রিকা 'বুলবুল'। এছাড়াও স্কুলের পাঠ্য পুস্তকের মধ্যে রয়েছে- সবুজ পাঠ, কিশোর সাথী, তাজমহল পাঠ, নতুন তাজমহল পাঠ, বিচিত্র পাঠ্য।
১৯৪৪ সালে বৃটিশ সরকার তাঁকে শিক্ষাক্ষেত্র ও সমাজসেবার ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এমবিই উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেন।
১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ সরকার শামসুন নাহার মাহমুদকে মরণোত্তর বেগম রোকেয়া পদক, ১৯৯৫ প্রদান করে। ১৯৬৪ সালে মাত্র ৫৬ বৎসর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।