এলেমেলো কথাবার্তা tutul@amrabondhu.com
এক.
হোক তবে এক চৈনিক রূপকথা ।
এক পথিক যাচ্ছিলেন পথ দিয়ে , আর পথের পাশে এক চড়ুই পাখি পা দুটো উঁচু করে শুয়েছিল।
পথিক বললেন - কী করো চড়ুই ?
চড়ুই জবাব দেয় - শুনেছি আজ আঁকাশ ভেঙ্গে পড়বে পৃথিবীর বুকে । আমি তাই দুই পা উঁচু করে আছি, আঁকাশ আটকাব ।
পথিক হাসে ।
বোকা চড়ুই , তুমি কি এই ছোট্ট দুই পায়ে আঁকাশকে বাধা দিতে পারবে ?
চড়ুইয়ের অন্তর্গত আত্মবিশ্বাস ধ্বনিত হয় - হয়তো পারব , হয়তো না । তবু এই শান্তনা নিয়ে যেতে চাই - আমি চেষ্টা করেছিলাম কিছু একটা করতে ।
(আরিফ জেবতিক)
দুই.
স্কুল জীবনের সবচেয়ে আনন্দের সময় ছিলো বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার দিন। সে এক দারুন আনন্দময় দিন।
আর স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় একটা দারুণ আইটেম ছিলো যেমন খুশি তেমন সাজো।
সেখানে কেউ সাজতো কৃষক, কেউ জামাই বউ, কেউ বিদেশী মেমসাহেব, কেউ গ্রামের মোড়ল... এইসব হাবিজাবি... তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিলো ভাষ্কর্য সাজা। এবং অবধারিতভাবে তা মুক্তিযুদ্ধের ভাষ্কর্য। লুঙ্গি কাছা দিয়ে খালি গায়ে, সারা গায়ে কাদামাটি মেখে হাতে রাইফেল সদৃশ কাঠ নিয়ে বিপ্লবী ভঙ্গিতে মাঠের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা। আর তিনজনে জুটতে পারলে অপরাজেয় বাংলা... ।
যেমন খুশি তেমন সাজোর যে কোনো একটা পুরষ্কার ভাষ্কর্যের জন্য বরাদ্ধই ছিলো।
আমি অন্তত কোনোবার মিস হইতে দেখি নাই (এই দেশে তো ভাষ্কর্য মানুষের অন্তরে অন্তরে বিরাজ করে, অন্তরে বিরাজ করে মুক্তিযুদ্ধ)।
আজকে বিকালে খুব করে মনে আসন গাড়তেছে সেই সব ছোটবেলার কথা... সেইসব কাদামাটি মাখা জীবন্ত ভাষ্কর্যর কথা। সেইসব অন্তরে মুক্তিযুদ্ধ ধারণ করা বালকদের কথা।
সেই বালকরা তো এখনো দেশেই আছে। তারা কি ভুলে গেছে মুক্তিযোদ্ধা সাজতে?
খুব ইচ্ছা করতেছে বিমানবন্দর চত্বরে সেই বালকবেলার মতো মূর্তি সেজে দাঁড়িয়ে থাকতে।
একতারা হাতে...
(নজরুল ইসলাম)
তিন.
জাগো বাহে... কোনঠে সবাই...
এই দেশটা আমার ... এই সংস্কৃতি আমার... যেই ভাই যুদ্ধ করেছিল এই সংস্কৃতির জন্য তার জন্য এইটুকু আমরা কি পারবোনা? বাবা, মা, ভাই, বোনের রক্তে পাওয়া এই দেশ... কোন দায়বদ্ধতা নেই আমার তাদের প্রতি? কোথায় সেই টগবগে তারুণ্য?
আজকের আহ্বান... চলেন সবাই লালনের একতারা হাতে দাড়াই সেই উলঙ্গ চত্বরে...
এইটুকু প্রতিবাদ নিশ্চয় আমরা করতে পারি। আগামী শনিবার বিকাল তিনটায় ব্লগারর্স কমিউনিটি দাড়াব এয়াপোর্টের সামনে ভাঙা মুর্তির পাদদেশে। শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ। “আমরা যদি না জাগি মা ক্যামনে সকাল হবে”... আমাদেরকেই জাগতে হবে...
আমরা কিছু বন্ধু বিমানবন্দর চত্বরে দাঁড়িয়ে আমাদের প্রতিবাদ প্রকাশ করতে চাইছি।
তারিখ: ২৫ অক্টোবর ২০০৮, শনিবার
সময়: বিকেল ৩টা
যারা যারা শামিল হতে চান, তাদেরকে স্বাগতম।
আমি আকাশ ঠেকাতে চড়ুই হবো... হয়তো পারব, হয়তো না। তবু এই শান্তনা নিয়ে যেতে চাই - আমি চেষ্টা করেছিলাম কিছু একটা করতে। তবু সান্তনা নিয়ে যাই , এই প্রিয় জন্মভূমিকে হায়েনার থাবা থেকে বাঁচাতে আমিও ক্ষুদ্র এক চড়ুই ছিলাম।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার:
১. আরিফ জেবতিক
২. নজরুল ইসলাম
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।