আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তসলিমা নাসরীন কী এমন অপরাধী? : কয়েকটি জিজ্ঞাসা

শুদ্ধতার আগুনে যেন সতত পুড়ি

আমাদের দেশের মেয়ে প্রাণ নিয়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে। আমাদের দেশের মেয়ে জন্মভূমি ছেড়ে বাধ্য হচ্ছে পরাশ্রয়ে থাকতে। ঘুরতে হচ্ছে দেশ থেকে দেশান্তরে। অথচ তাঁকে দেশে ফিরিয়ে আনার কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বাংলাদেশে এমন কোনো অপরাধ নেই যে সংঘটিত হয় না।

এবং সেই অপরাধগুলোর কিছু কিছু জনসমক্ষে উম্মোচিত হয়। কখনো বা আড়ালেই থাকে অনেক অপরাধ। কিন্তু বিগত সময়ে ধর্মীয় উসকানীমূলক লেখা লেখার অপরাধে তসলিমার বিরুদ্ধে আমাদের ধর্মীয় পুরোহিতরা যেভাবে উঠে পড়ে লেগেছিলেন, তারউপর কতিপয় হুজুগে বাঙালী তাঁর শিরোচ্ছেদ করার বাসনায় যে ভাবে তৎপর হয়ে উঠেছিলো তা কি শুধুই ধর্ম অবমাননার জন্য? নাকি এর পেছনে ছিলো আরো কিছু স্বার্থান্বেষীর ইন্ধন? স্বাধীনতা উত্তরকাল থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশে ১৯৭১এর যুদ্ধাপরাধীরা যেভাবে আস্ফালন করে বেড়াচ্ছে তাদের অপরাধের চাইতে নিশ্চয়ই তসলিমার অপরাধ নিকৃষ্টতম নয়। নিকৃষ্টতম নয়- বাংলাদেশে যারা সন্ত্রাসকে লালন-পালন-প্রশ্রয় যোগান দেওয়ার মত গর্হিত অপরাধ করে চলেছে। তসলিমা নাসরিনের অপরাধ কি মুক্তিযোদ্ধা আলি আমানকে পদাঘাতের চাইতেও বড়? মাত্র দু’লাইন কথা লেখার জন্য তাঁকে যেভাবে প্রবাসে প্রবাসে দিন কাটাতে হচ্ছে, তার চেয়ে আরও জঘন্য অপরাধ করেও বাংলাদেশে মানুষ বাস করছে।

তাহলে তসলিমা নাসরিনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে আমাদের সরকারের বাধা কোথায়? একদেশ থেকে বিতাড়িত হয়ে আরেক দেশে গিয়ে আশ্রয় নিতে হচ্ছে, এতে কি বাংলাদেশ সরকার তথা জনগণের ভাবমূর্তি দিনদিন উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছে? বাংলাদেশ সরকার যদি বাকস্বাধীনতা আমাদের দিতে না চান, তাহলে আমাদেরও বোধ করি গণতন্ত্র চর্চা ভুলে যাওয়া উচিত। আর গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে বাক-স্বাধীনতা। একজন লেখক যদি তাঁর বক্তব্য কারো সম্মুখে তুলে ধরতেই না পারেন, তাহলে মুক্তবুদ্ধির চর্চা কী ভাবে সম্ভব? আর মুক্তবুদ্ধির চর্চা যদি ক্রমাগত বাধাগ্রস্থ হতে থাকে তাহলে দিনদিন মানুষ সেই অন্ধকার যুগেই ক্রমশ পশ্চাদ্ধাবিত হতে বাধ্য হবে না?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।