তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে।
এতো খারাপ আবহাওয়া গত ৫/৬ বছর দেখিনি। সামারের লেশমাত্র না দেখিয়ে শীতের আগমনি বার্তা। যদিও ক্যালেন্ডারের পাতায় মাত্র ফ্রুলিক্সের শুরু। শরতকালের এই করুন অবস্হা।
কোন কারন ছাড়াই টুপুর টুপুর বৃষ্টি শুরু। সাথে ঠান্ডা বাতাস। গাছের পাতাগুলো হলুদ, লাল আরও হরেক রকম রঙে রাঙায়িত। দেখতে ভালোই লাগে। হালকা রোদ দেখে যদি কেউ ভাব ধরে সামারের কাপড় নিয়ে বের হয় তাহলে ফিরতি পথে বাসায় না এসে হাসপাতালেই যেতে হবে।
ঈদ বরাবরের মতোই পানশে। ঈদের রাতে ছোটবোন এসে বলতেছে ভাইয়া তুমি কি আমার হাতে মেহেদী লাগিয়ে দিবে? যদিও কাজ থেকে এসে মাত্র ইফতার করেছি। বেশ ক্লান্ত। ভাই-ভাবীও এসেছেন। ভাবী ডাক্তার মানুষ।
সারাদিনের ঝামেলা শেষে এসেছেন সেই কথা চিন্তা করে হয়তো উনার কাছে আবদার করেনি। বল্লাম ঠিক আছে। মনে মনে চিন্তা করলাম কখনো কি নিজে মেহিদী লাগিয়েছিলাম? মন খারাপ হয়ে গেলো। ভাবী শুনে দিলো একটা ঝাড়ি। উনি কোনমতে মেহেদী লাগিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে পরেরদিন ওর ক্লাস টেষ্ট। অবশ্যই স্কুলে উপস্হিত থাকতে হবে। দেশে থাকলে কতো রঙে-ঢঙে ঈদ হতো। অথচ কাল ঈদের দিন ও স্কুলে যাবে। বাসায় ফিরে হয়তো কোথাও বেড়াতে যাবে অথবা হোমওয়ার্ক নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাবে।
দেশের ঈদের আমেজটা কখনোই হয়তো পাবে না।
শুক্রবার সরকারী ছুটি ছিল। এইদিন পুর্ব-পশ্চিম জার্মানী এক হয়েছিল। আমাদের ঈদের পার্টি তাই শুক্রবার। যারা ছাত্র ছিলাম তারা এখন সবাই মোটামুটি কামলা দেই।
প্রত্যেকের জন্য একটি/দুটি আইটেম রান্নার দায়িত্ব ছিলো। প্রায় ২৫জনের দাওয়াত। আইটেমও মাশাআল্লাহ ১০/১২টা। আমার দায়িত্বে ছিলো গরু মাংস। বছরখানেক থেকে রান্নার সাথে যু্ক্ত না।
মা-বাবার সাথে থাকি। যা রান্না হয় তাই খাই। কোন চাওয়া-পাওয়া, অভিযোগ নেই। মাকে এসে বল্লাম ৪কিলো মাংস রান্না করতে হবে। ব্যস, মা-বাবা দুজন মিলেই রান্না করে ফেল্লেন( আমার কাছে রান্না করা খুবই সহজ একটি কাজ কিন্তু পেয়াজ কাটা সবচে বড় সমস্য।
বিগত ১০/১২ বছর থেকে রান্না করি কিন্তু পেয়াজ কাটা আয়ত্বে আসে নাই)। সবাই জায়গামতো সবার নিজস্ব আইটেম নিয়ে হাজির। প্রথমেই সেমাই তৈরী করা হলো। ঈদের ৪দিন পর ঈদের সেমাই। তারপর নামায পড়ে মেইন খাবার।
এতোগুলো আইটেম খাওয়া সম্ভব না। আর সবাই যেহেতু এখন ইনকাম করে তাই আগের মতো টানতে পারে না। আমি সালাদের উপর দিয়েই স্টীম-রোলার চালালাম।
বিভিন্ন অযুহাতে স্কুলগুলো এতো বেশি বন্ধ থাকে। সামারের সময় ৬ সপ্তাহ বন্ধ, তারপর শরতের সময় ২ সপ্তাহ, ক্রিসমাস উপলক্ষে ৩ সপ্তাহ।
মার্চে মনে হয় কি উপলক্ষে আরও ২ সপ্তাহ বন্ধ। শনি-রবি তো আছেই। তারপর বিভিন্ন সরকারি ছুটি। যাদের বাসায় স্কুল পড়ুয়ারা আছে তারাই শুধুমাত্র স্কুল বন্ধের আরামটা হাড়ে হাড়ে টের পায়
কামলা জীবনেও খুব একটা শান্তিতে নাই। সবাই মোটামুটি ভয়ের উপরই আছি।
বিভিন্ন কোম্পানি কামলা ছাটাই শুরু করে দিয়েছে। দেশ থেকে বন্ধু আসতেছে। ইচ্ছে না থাকা স্বত্বেও অফিস কামাই দিতে হবে। মোটামুটি চিপার মধ্যেই দিনযাপন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।