টি আই রিপোর্টে বলা হয়েছে দুর্নীতিতে দশম স্থানে আছে বাংলাদেশ।
দুদকের কর্নেল হানিফ ইকবাল বলেছেন, তাদের হাতে আলাদীনের চেরাগ নেই।
চেরাগ নাই থাক, দাগী দুর্নীতিবাজ রা মুক্তি পাচ্ছে কি ভাবে? রাষ্ট্র কি দেখছে না কারা মোস্ট ওয়ান্টেড ছিল ? কারা গডফাদার ? নাকি ১/ ১১
এর চেতনা বিক্রী করে মুনাফা নিতে তৎপর কোন কোন মহল ?
রিপোর্ট টি বিডি নিউজ ২৪. ডট কম -এর .......
তিন ধাপ এগোলেও টিআইবি মনে করছে না দুর্নীতি কমেছে
======================================
ঢাকা, সেপ্টেম্বর ২৩ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম) ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতির সূচকে এবার বাংলাদেশ এবার তিন ধাপ এগিয়েছে। তবে বাংলাদেশের এই উন্নতিকে পরিসংখ্যানের দিক থেকে তাৎপর্যময় বলে মনে করছে না ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশ (টিআইবি)।
টিআইবির মতে, বাংলাদেশে এখনও যথেষ্ট দুর্নীতি রয়ে গেছে।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে টিআইবি এক সংবাদ সম্মেলনে এ বছরের টিআই এর দুর্নীতি ধারণা সূচক-২০০৮ প্রকাশ করে। টিআই এর সদর দপ্তর বার্লিনসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থান থেকে মঙ্গলবার এক যোগে এবছরের দুর্নীতির সূচক প্রকাশ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুর্নীতির সূচকে এবার বাংলাদেশের অবস্থান দশম। স্কোর ২ দশমিক ১। গতবার এ স্কোর ছিল ২ এবং অবস্থান ছিল সপ্তম।
এবারের সূচকের তালিকায় বাংলাদেশের সমান স্কোর পেয়ে সম্মিলিতভাবে দশম অবস্থানে রয়েছে কেনিয়া, রাশিয়া ও সিরিয়া।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, "পরিসংখ্যানের দিক থেকে এটা তাৎপর্যময় না। এতে কোন তাৎপর্যপূর্ন পরিবর্তন এসেছে বলে মনে হয় না। "
তিনি ব্যাখ্যা করেন, যখন তথ্যের সংখ্যা সুত্রের সংখ্যা বাড়ে তখন স্কোরের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এর আগে ৩ টি তথ্যসূত্র নিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান নির্ণয় করা হয়েছিল।
এখন ৭ টি তথ্যসূত্র নিয়ে করা হয়েছে তাই স্কোর বাড়ছে। সমানের বছরও পয়েন্ট ১ বাড়তে পারে। এতে অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে কিনা বুঝা যাবে না।
অধ্যাপক মোজাফফর বলেন, "সিপিআই প্রতিবেদন যখন বের হয় তখন এ নিয়ে বিতর্ক ছিল। একবারই জুন মাসে বের হয়েছিল।
প্রতি বছর তথ্যসূত্র পরিবর্তিত হচ্ছে। মেথডলজি উন্নয়নের চেষ্টা থাকে। গতবারের চেয়ে এবার কিছুটা পরিবর্তন করা হয়েছে। সে কারণে এক বছরের অন্য বছরের তুলনা করা ঠিক হবে না। তবে এটা দিয়ে একটা ধারনা করা যায়।
"
টিআইবি সভাপতি বলেন,"আমাদের সংসদ কাজ করছে না। সংসদীয় কমিটি কখনই কাজ করে না। বিচারবিভাগে দুর্নীতির মামলা গিয়ে আটকে যাচ্ছে। তবে গণমাধ্যম যথেষ্ট নজরদারি করেছে। আমরা দেখেছি গত ২ বছরে সুশীল সমাজ খুব একটা সক্রিয় ছিল না।
যথেষ্ট সভা সেমিনার হয়েছে, তবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে উচ্চ কন্ঠ শুনিনি। "
উন্নত দেশেও দুর্নীতি হয় জানিয়ে তিনি মন্তব্য করেন, দুর্নীতির উৎস যে কেবল দেশের অভ্যন্তরেই, তাই না। দেশের বাইরে থেকেও দুর্নীতির ধাক্কা আসে। মাল্টি ন্যশনাল কোম্পানীগুলো দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকে।
অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ বলেন, "এ সূচক নিয়ে প্রশ্ন থাকে।
এ বছরও আছে। এক সময় নাইজেরিয়া দুর্নীতিতে আমাদের আশপাশেই ছিল। গত বছরও নাইজেরিয়াতে যথেষ্ট দুর্নীতি ছিল। এবছর ১২১ তম অবস্থানে চলে গেছে। কেন গেল এটার ব্যাখা আামাদের কাছে নেই।
এ জাতীয় প্রশ্ন সব সময় থাকে। "
বাংলাদেশে দুর্নীতি চিত্র তুলে ধরে তিনি বলে, "আমাদের দেশে যথেষ্ট দুর্নীতি থেকে গেছে। প্রতিষ্ঠানিক সংস্কারে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়নি। প্রশাসনিক সংস্কারে বর্তমান সরকার যথেষ্ট পদেক্ষপ নেয়নি। ছোট ছোট দুর্নীতি বেড়েছে।
প্রশাসনিক সংস্কার না নিলে জনগণ সুফল ভোগ করবে না। "
বর্তমান সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অভিযান সম্পর্কে টিআইবির সভাপতি বলেন," আমাদের ভেবে দেখতে হবে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছিল পরিণতিতে শেষ পর্যন্ত যেতে পারেনি। যেভাবে পরিচালনা করা হয়েছে তাতে তাড়াহুড়া ছিল। মানুষের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। প্রত্যাশা পূরণের জন্য বিচারিক প্রক্রিয়ায় যে গতির প্রয়োজন ছিল তা আসেনি।
তদন্ত প্রক্রিয়ায় যে দক্ষতা থাকার প্রয়োজন ছিল সেটাও আমরা দেখতে পাইনি। যে প্রত্যাশা দুর্নীতি দমনের বিষয়ে ১/১১ তৈরি করেছিল এখন এসে দেখতে পাচ্ছি মানুষ সে ব্যাপারে হতাশ। "
তার আশা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা আগামী নির্বাচিত সরকার সামনে তা এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, "রাজনীতিতেও ব্যবসাীয়দের প্রাধান্য, মনোনয়ন বাণিজ্য এ বিষয়গুলো দুর্নীতির সামনের সারিতে ছিল। সে কারণেই সরকারের দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে তাদের ওপর দিয়ে ঝড় ঝাপটা গেছে।
"
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, "আমাদের স্কোর সামান্য হলেও বেড়েছে। ২০০৮ সালের ১ জুলাই পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য থেকে এ সূচক নিরূপিত হয়েছে। এতে চলমান প্রশাসনিক দুর্নীতি, বিচার বিভাগের ওপর প্রভাব এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে চলমান অস্থিরতার প্রভাব পড়তে পারে। "
তিনি বলেন, দুর্নীতি বিশ্বজনীন সমস্যা। ১০ স্কোর কেউ করতে পারেনি।
সব দেশেই দুর্নীতি আছে। উন্নত দেশের অনেকেরই স্কোর এবার কমেছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দুর্নীতিতে এবার শীর্ষে রয়েছে সোমালিয়া। তাদের পয়েন্ট ১। দ্বিতীয় স্থানে আছে যৌথভাবে মিয়ানমার ও ইরাক।
তৃতীয় ও চতুর্থস্থানে আছে হাইতি এবং আফগানিস্তান।
অন্যদিকে সূচকে ৯ দশমিক ৩ স্কোর করে দুর্নীতি মুক্ত দেশে হিসেবে এবার শীর্ষে রয়েছে ডেনমার্ক, নিউজিল্যান্ড, সুইডেন। গত কয়েক বছর চতুর্থ স্থানে অবস্থান করা সিঙ্গাপুর এবারও চতুর্থ স্থানে রয়েছে। সিঙ্গাপুরের স্কোর ৯ দশমিক ২। এ বছর বেশ কয়েকটি দেশ উল্লেখযোগ্যভাবে ভালো অবস্থানে উঠে এসেছে।
আলবেনিয়া, সাইপ্রাস, জর্জিয়া, মরিশাস, নাইজেরিয়া, ওমান, কাতার, দক্ষিণ কোরিয়া, টোঙ্গা ও তুরস্ক উন্নতি করেছে। এছাড়া জার্মানী, নরওয়ে, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র নিচের দিকে নেমে গেছে।
টিআই প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন দেশের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরার জন্য এ সূচক প্রকাশ করে থাকে। শূন্য থেকে দশ পর্যন্ত স্কোরের ভিত্তিতে দেশ গুলোর দুর্নীতিতে অবস্থান নির্ণয় করা হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।