গভীর কিছু শেখার আছে ....
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্সের উদ্যোগে সংস্কৃতি বিনিময়ের অংশ হিসেবে এ দেশের মনিপুরী নৃত্যে উচ্চতর প্রশিক্ষণ দিতে বাংলাদেশে এসেছেন বিম্বাবতী দেবী। ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে তিনি মনিপুরী নৃত্য পরিবেশন করেন ১২ আগস্ট। বাবা-মা দুজনেই মনিপুরী নৃত্যে স্বনামধন্য শিল্পী হওয়ায় পারিবারিক আবহে ধীরে ধীরে একজন সফল মনিপুরী নৃত্যশিল্পী হিসেবে নিজের অবস্থানকে পোক্ত করেছেন। ফলে এরই মধ্যে বেশ কিছু অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছেন তিনি। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান কালচারাল সেন্টারে বিম্বাবতী দেবীর নেয়া সাক্ষাৎকার ব্লগারদের সঙ্গে শেয়ার করলাম এখানে :
মনিপুরী নাচ সাধারণত একটু ধীরগতি ও লয়ের হয়ে থাকে।
বিভিন্ন নাচের সঙ্গে মনিপুরী নাচের তফাৎ হলো দর্শকদের কাছে মনিপুরী নাচকে অন্যান্য নাচের চেয়ে সহজ মনে করলেও আসলে মনিপুরী ড্যান্সার হতে হলে প্রয়োজন দীর্ঘ সাধনা ও প্র্যাকটিসের। কলকাতার মেয়ে বিম্বাবতী দেবী এ সাধনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন জীবনের শুরু থেকেই।
বাবা গুরু বিপিন সিং ও মা কলাবতী দেবী দুজনেই ছিলেন মনিপুরী নৃত্যের সফল শিল্পী। ফলে পারিবারিক আবহে ছোট থেকেই বিম্বাবতী দেবী ধীরে ধীরে শিখে ফেলেন মনিপুরী নৃত্যের বিভিন্ন কলাকৌশল। আর এ জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ডাক পড়তো বিম্বাবতীর।
"দর্শকদের সামনে স্টেজ পারফর্মে নিজের মধ্যে অন্য রকম এক ধরনের উত্তেজনা কাজ করতো সে সময়। কারণ দর্শকরা আমার পারফরম্যান্স এনজয় করবেন কি না তার জন্য এক ধরনের উত্তেজনা ভেতরে ভেতরে কাজ করতো"- ছোট বেলার স্টেজ পারফরম্যান্সের কথা এভাবেই ব্যক্ত করলেন বিম্বাবতী দেবী।
এরপর পড়ালেখার পাশাপাশি চলে বিম্বাবতী দেবীর মনিপুরী নাচের নিয়মিত প্র্যাকটিস। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক করার পর রবীন্দ্র ভারতী ইউনিভার্সিটি থেকে মনিপুরী নৃত্যে মাস্টার্স করেছেন। বর্তমানে তিনি রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনিপুরী নাচে পিএইচডি করছেন।
বিম্বাদেবী বলেন, "আগে জনসাধারণের কাছে মনিপুরী নৃত্যের প্রসার ও প্রচার কম ছিল। মূলত বৈষ্ণব ধর্মকে কেন্দ্র করেই মনিপুরী নাচ গড়ে উঠলেও আমার বাবা গুরু বিপিন সিং মনিপুরী নৃত্যে বিভিন্ন থিম নিয়ে এসে একে জনপ্রিয় করে তোলেন। বাবার পথ ধরে চেষ্টা করে চলেছি মনিপুরী নৃত্যে ভেরিয়েশন আনতে। মনিপুরী নৃত্যের নতুন নতুন থিম নিয়ে নিয়মিত কাজ করছি আমি। "
দেশে-বিদেশে প্রচুর প্রোগ্রাম করেছেন বিম্বাবতী দেবী এবং মনিপুরী নাচে অসামান্য পারদর্শিতার জন্য পেয়েছেন বেশ কিছু পুরস্কার।
এগুলোর মধ্যে ভারত সরকার থেকে সিনিয়র ড্যান্সার স্কলারশিপ ইন মনিপুরী, জুনিয়র ড্যান্সার রিসার্চ ফেলোশিপ ইন মনিপুরী ড্যান্স, ২০০৪ সালে সংস্কৃতি পুরস্কার, ২০০৭ সালে আদিত্য বিড়লা কলাকিরণ পুরস্কার প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
বর্তমানে মনিপুরী নাচের প্রতি অন্যদের আগ্রহের প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করলে বিম্বাবতী দেবী জানান, "নাচ হচ্ছে নিয়মিত চর্চার বিষয়। যেহেতু শেখার কোনো শেষ নেই, তাই নাচেরও নিয়মিত চর্চার কোনো বিকল্প নেই। আর বর্তমানে অনেকেই মনিপুরী নাচের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছেন। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্সের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে এসেছি আমি।
এখানে মনিপুরী নাচে যাদের অলরেডি তিন বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের ক্লাস নিচ্ছি আমি। "
বাংলাদেশে মনিপুরী নাচের প্রশিক্ষক হিসেবে কারা ভালো কাজ করছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, "অনেকে রয়েছেন যারা মনিপুরী নাচের প্রশিক্ষক হিসেবে ভালো কাজ করছেন, তাদের মধ্যে তামান্না রহমান, শর্মিলা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখের নাম উল্লেখযোগ্য। "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।