আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইউরো রিভিউ- তুরস্ক ২-১ সুইজারল্যান্ড

কৃষ্ণশুভ্রারা বেঁচে থাকুক দূরে সুদূর স্বপ্নসীমান্তে

***ফারহান দাউদ লিখতে সময় নিচ্ছে দেখে নিজেই বসে পড়লাম রিভিউ লেখতে। আশা করি বিদগ্ধ পাঠকরা আমার এই স্পর্ধা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আগে খেলা দেখতাম ইমোশনালি আর এখন দেখি প্রফেশনালি। পাঠকরা হয়তো অনেকেই ভ্রু কুচকে উঠবেন যে খেলার মধ্যে প্রফেশনালের কী আছে?আসলে আমরা ফান বেটিং করি যা আসলে খেলা দেখতে উদ্বুদ্ধ করে। আর একটু ব্যাখ্যা করে বলি ছোট পরিসরে ১০ থেকে ৫০ টাকা ধরে ট্রেডিশনাল নিয়মে বেটিং করি।

এর ফলে অন্য সময় হয়তো এই খেলা এত মনযোগ দিয়ে দেখা হতো না যতটা না গতকাল হয়েছে। আগে একটা ছোট ঘটনা বলি। বিশ্বকাপ ফুটবল চলে। জার্মান আর পোল্যান্ড খেলা চলছে। বুয়েট কমন রুমে খেলা দেখছি।

আমি বিস্মিত হয়ে লক্ষ্য করলাম জার্মানের প্রতি আক্রমনে কমন রুম উচ্ছসিত হয়ে উঠছে। আমি ধান্দায় পড়লাম বাংলাদেশে এত জার্মান সাপোর্টার ! অবাক ব্যাপার। আমি সারা জীবনে এত জার্মান সমর্থক দেখিনি সেদিন ঐ কমন রুমে যা দেখলাম। জার্মান গোল দিতে আনন্দে ফেটে পড়ল। একে অপরকে জড়িয়ে।

জার্মানের এত ইমোশনাল সাপোর্টার আছে জানা ছিল না। আমি এগিয়ে গিয়ে একটি ছেলেকে জার্মান সাপোর্টের কারণ জিজ্ঞেস না করে পারলাম না। তার উত্তর আমাকে থমকে দিল। তারা কেউই জার্মান সাপোর্টার নয় ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনা। সবাই জার্মানের পক্ষে বাজি ধরেছে।

তাই এতো সাপোর্ট। যাক রিভিউ তে ফিরে যাই চেক আর পর্তুগাল খেলায় বাজি ছিল না তাই বলে আগ্রহ ছিল না এমন নয়। কিন্তু লোডশেডিং নামক এক বস্তু আমাকে খেলা দেখার সুযোগ দিল না। আমি ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু আমার বাজির ঘোড়া তুর্কির চিন্তায় ঘুম ভেংগে গেল।

টিভির সামনে বসলাম বহু আশা নিয়ে। খেলা যা হল তা নিয়ে আর কী লিখব বরং খেলোয়াড়দের নিয়ে খেলল বৃষ্টি। ঝুমঝুম বৃষ্টিতে স্বাভাবিক খেলা খেলা যাবে না ঠিক আছে কিন্তু তার সাথে পাল্লা লাগিয়ে দুই দল আরো বাজে খেলতে লাগল। কোন পরিকলপনার ছাপ কোন দলের মধ্যেই ছিল না। এর মধ্যে বরং স্বাগতিকরা দুরপাল্লার শট নিয়ে কিছুটা আতংক ছড়াল।

তুর্কি আমাকে উল্লাসে ভাসিয়ে গোল দিল বলে চেচাতে যাব দেখলাম বল বারে লেগে প্রতিহত। আর বৃষ্টিতে মাঠ খেলার কতটুকু উপযুক্ত ছিল বুঝা না গেলেও রেফারি চালিয়ে গেলেন। নিজেদের আবহাওয়া আর রেফারিং এর সুবিধা নিয়ে সুইসরা চেপে বসল। মাঝে মাঝে বল পানিতে আটকে গিয়ে কমেডি তৈরি করল। তুর্কিদের দেখে মনে হচ্ছিল তাদের খেলতে কষ্ট হচ্ছে।

এর মধ্যে সুইসরা গোল পেল। তা ও আরেকটু হলে পানিতে আটকে গিয়েছিল। গোল করলেন তুর্কি বংশোদ্ভুত হাকান ইয়াকিন যা অফসাইট বলে ইএসপিএন এর বোদ্ধারা দাবি করলেন। ২-০ হয়ে যেত যদি না তিনি ছ্য় গজ দুর থেকে সহজ আরেকটি সুযোগ অপচয় করতেন। বিরতির সময় বৃষ্টি থামল।

আর তুর্কি দুজন খেলোয়াড় বদল করল। এতে তাদের খেলা কিছুটা গোছালো হলো কিন্তু কাজের কাজ কিছু হচ্ছিল না। পরিষ্কার কোন সুযোগ আসছিল না। এমনি একটি বিক্ষিপ্ত আক্রমন থেকে তারা গোল পেল এবং গোল করলেন এক বদলি খেলোয়াড়। এর পর সুইসরা চেপে বসল তুর্কির উপর আর তুর্কি নির্ভর করল কাউন্টার এটাকে।

স হজ একটি সুযোগ নষ্ট করলেন নিহাত। সুইসরা অবশ্য একের পর এক মিসের মহড়া দিয়ে গেল। এমনকি তিন স্ট্রাইকার এক ডিফেন্ডার এমন অবস্থা থেকেও গোল হলো না। আমি যখন আমার টাকা ঘচ্চা মনে করে উঠে আসব এমন সময় ৯২ মিনিটে দারুণ গোল করে তুর্কি একসাথে তাদের আশা আর আমার টাকা দুই ই বাচিয়ে দিল। খেলা দেখে মজা পেয়েছি যেহেতু দল জিতেছে।

তবে তুর্কি কতদুর যাবে তা নিয়ে সন্দিহান। তবে তারা গতকাল যে মানসিক শক্তির পরিচয় দিল তাতে চেককে হারিয়ে কোয়াটারে যাওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্টই।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।