আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভুতের গলি, বোনের বিয়ে আর আমি

গলাবাজ আর সত্যিকারের লেখক এই ব্লগে টিকে থাকে, আমি কোনটাই না
তখন আমার বয়স ১১, ক্লাস ফাইভ এ পড়ি। অনেক ঘটক বদলিয়ে আমার সবথেকে বড় বোনটার বিয়ে ঠিক করা হলো। চেহারাটা যদিও অনেক কিউট, গায়ের রংটা কালো হওয়ার অপরাধে বিয়েটা বারবার বিলম্বিত হচ্ছিলো। অবশ্য আপা বি.সি.এস. চাকুরে হওয়ায় আগ্রহী পাত্রেরও একেবারে কমতি ছিলোনা। অবশেষে বিয়ের কর্মযজ্ঞ শুরু হলো, কাদের দাওয়াত দিতে হবে সেই লিস্ট, গায়েহলুদ, কেনাকাটা সব মিলিয়ে বাসায় একটা তুলকালাম অবস্হা।

এই আম্মার বকাবকি, আব্বার চিন্তাযুক্ত মুখ, ভাই বোনের দৌড়াদৌড়ি মাঝখানে আমি এক নিরব দর্শক। সবাই আনন্দ করছে, আমিও বুঝলাম ব্যাপারটা আনন্দের। অবশেষে সেই বিয়ের দিন উপস্হিত, ভুতের গলির এক কমিউনিটি সেন্টারে সব আয়োজন। লম্বা লম্বা মানুষগুলোর ভিড়ে এর ওর ফাঁক গলিয়ে আমি ঘুরে বেড়াচ্ছি। দুলাভাই এর এক বোন তার শাড়ীতে বোরহানী পড়ে যাওয়ায় বাকযুদ্ধ শুরু করে দিলো।

সেই ছোট্ট আমি কেমন করে যেন বুঝতে পারছিলাম এ শুধু আনন্দ নয়, অনেক জটিল একটা প্রক্রিয়া। যাইহোক সারাদিনের হৈ চৈ শেষে কনে তুলে দেয়ার ক্ষণ। সবাই ব্যস্ত অহেতুক ব্যস্ততায়। বরকনের স্টেজ থেকে আপাকে নিয়ে যাওয়া হলো বরের গাড়ীর কাছে। আমি একা দাড়িয়ে ২ তলার বারান্দায়।

হঠাৎ আমার মনে হলো আমার বোনটাকে কে যেন নিয়ে চলে যাচ্ছে, কেড়ে নিয়ে যাচ্ছে আমাদের কাছ থেকে। কি করা উচিৎ কি করবো কিছু না বুঝে অঝোরে কাঁদতে থাকলাম রেলিং টাকে আঁকড়ে ধরে। সবাই তখন ব্যস্ত ফুল দিয়ে সাজানো গাড়ী আর নববিবাহিত দের নিয়ে। আর বড় আপার জন্য একরাশ ভালোবাসা নিয়ে ছোট্ট আমি কেঁদেই চলেছি সবার অন্তরালে। (আজ আপার মেয়েটা কলেজে পড়ে, ছেলেটা স্কুলে, কি দ্রুতই না চলে যায় দিন গুলি ) ছবি কৃতজ্ঞতা
 


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।