শব্দ খুঁজি, সৃষ্টির অদম্য নেশায় ব্রিটিশ বান্ধবী হেলেন অ্যাডামসের সাথে ইউনিভার্সিটি এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলাম। কার্জন হল থেকে হেঁটে টিএসসি আসার পথে নানাভাবে নিজের দেশের গুণগান করে পর্যটন কর্পোরেশনের প্রক্সি দিচ্ছিলাম। তিন নেতার মাজার পেরিয়ে সামনে এগোতেই দেখি সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের প্রাচীরে জনগণের বেপরোয়া মূত্র বিসর্জন। লাইনধরে জামাতের সহিত তিন/চারজন জল বিয়োগ করছেন। আমি হেলেনের হাত টেনে ধরে রাস্তার ওপারে নিয়ে গেলাম।
হতচকিত হেলেন বললো, 'কী হলো তোমার? হঠাৎ আমরা রাস্তা পার হলাম কেন?' আমি নিজ দেশের পশ্চাতদেশ বাঁচানোর জন্য বললাম, 'আশেপাশে কোন বাথরুম নেই। তাই লোকগুলো এরকম করছে। তুমি তো অভ্যস্ত না। তাই সরে আসলাম। ' জবাবে ভুবন ভোলানো হাসি দিয়ে হেলেন বললো, 'তুমি ভুলে যাচ্ছো আজ বাংলাদেশে আমার একমাস পূর্ণ হলো।
'
বাংলাদেশ সম্পর্কে হেলেন অনেকটাই জানে সেটা তো বুঝতে পেরেছিলাম। তবুও, নিজ দেশের অপমানে নিজেকে অনেক ছোট মনে হচ্ছিলো। এই অপমানবোধ আমার বিশ্বাস দেশের প্রতিটা মানুষের মধ্যেই আছে। নেই শুধু খালেদা জিয়া ও তার ইংরেজি প্রোপাগান্ডার লেখকমন্ডলীর। তারা নিজ দেশের সম্মান বাড়ানোর চাইতে দেশকে অপমান করে, বিদেশিদের পদলেহন করে ক্ষমতার খোয়াবে মত্ত।
দেশের মানুষের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই। মানুষের স্বপক্ষে কোন আন্দোলন নেই। মানুষের মৃত্যুতে কোন প্রতিবাদ নেই। গার্মেন্টসের শ্রমিক হত্যায় কোন ভ্রূক্ষেপ নেই। তেল-গ্যাস-কয়লাসহ প্রাকৃতিক সম্পদ লুন্ঠন নিয়ে কোন প্রতিক্রিয়া নেই।
তথাকথিত জাতীয়তাবাদের ধারক হয়েও কাজ-কর্মে কোন প্রতিফলন নেই। বরং ভারত-আমেরিকাকে নালিশ করে দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে হাসাহাসি করানোই তাদের উদ্দেশ্য। দেশের সমস্যা দেশেই সমাধান করুন। ঘরের কলহে পরকে ডাকবেন না। নইলে বিদেশি প্রভুরা নিজেদের স্বার্থসিদ্ধি শেষে ব্যবহৃত টিস্যুপেপারের মতো আপনাদের স্রেফ ছুঁড়ে ফেলে দেবে।
ইতিহাস তার সাক্ষী। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।