নিজেরে হারায়ে খুজি..... bohurupi.mohajon@gmail.com
আমি জীবনে দুই-চারবার কনসার্টে গেসি। আইজকা দুপুরে এক বন্ধু ফোন দিয়া কইল গ্রামীন ফোনের কনসার্টের কিছু টিকেট পাইছে, আমারেও লগে যাইতে হইবো। ভাবলাম কাম যখন নাই....তো গিয়া দেখি কি ব্যাপার! আজইকা গেলে জীবনে তিন-পাঁচবার কনসার্টে যাওয়া হবে। গিয়া দেখি ওয়ান্ডার ল্যান্ডর সামনে থিকা সব লাইন ধরছে, লাইনে খাড়াইলাম। আস্তে আস্তে লাইন সামনে আগাইতাছে, মেইন রোড ছাইড়া এক সময় ভিতরের রাস্তায় ঢুকলাম।
ততক্ষণে গান শুরু হইয়া গেছে। রাস্তার মইধ্যে খাড়াইয়া হুনি 'একপায়ে নুপুর তোমার, অন্য পা খালি' - বুঝলাম না একপায়ে নুপুর আর অন্য পা খালি ক্যা!! পোলাপানে ততক্ষণে অস্হির, মাঠের চাইরপাশে কাপড় দিয়া ঢাকা - বাইরে উচু গ্রিল, কিন্তু কেউ কেউ দেহি বান্দরের লাহান গাছ বাইয়া গ্রিল টপকাইবার চেষ্টা করতাছে। এরমইধ্যে সিকিউরিটি আইয়া পরছে, কিন্তু পোলা গুলার নাগাল পাইতাছে না। আমি আর কয়েক জন মিল্যা ওগোরে কইলাম এতদূর যহন গেছছ তো ওই পারে যা গা। এই বইলা লাইনের লগে আবার সামনে আগাইতাছি।
মনে হইতাছিল পুরা মাঠটারে প্রদক্ষিণ কইরা ফালাইছি কিন্তু লাইনের শ্যাষ মাথা নাই!! ভাবলাম 'এক পায়ে নুপুর' শুনবো, কিন্তু একটু পরেই তা শ্যাষ হইয়া গেল। দুখ পাইলাম। তারপর শুরু হইল মেন্টাল (মেটাল)। ব্যান্ডের নাম 'পাওয়ার সার্জ'। মনে হইল অরা ইলেক্ট্রিক শক খাইছে।
ওগো গান শুনা যায় না। খালি ঝ্যাং ঝ্যাং গিটার বাজে আর চিল্লানি, ওইডি শুইন্যা ভাবলাম আস্তে ধীরে ঢুকি, তাড়াহুড়ার কিছু নাই। এক সময় সেই মেটাল শ্যাষ হইল এবং মনে হইল গেটের কাছে আইসা পড়ছি। ভদ্র মানুষের মত সামনে আউগাইতাছি, হঠাৎ দেহি সব সামনে দৌড়াইতাছে, আমার পিছনে আর কেউ নাই। কিছু না বুইঝাই সমানে দৌড়াইতে শুরু করলাম।
সামনে গিয়া দেখি গেট বলতে কিছু নাই, বাশের গেট মাটিতে শুইয়া আছে, সাথে অগুনতি জুতা-স্যান্ডেল। ভাবলাম এত বিরাট জুতা-স্যান্ডেলের মেলা, লেটেষ্ট ডিজাইনের একজোড়া বাইছা লই মাগার আফসোস.......কোনটারই জোড়া নাই - সব একটা একটা কইরা আছে ওইদিকে গেট দিয়া মানুষ হুড়হুড় কইরা বানের পানির মত ঢুকতাছে। আমিও বানের পানিতে ভাইস্যা ভিতরে ঢুইকা গেলাম। ভিতরে মোটামুটি সবারই দুই পায়ে দুই জুতা। কেউ হাই হিলের লগে স্লিপার, কেউ চামড়ার এ্যাপেক্সের লগে বাটার রাবারের স্যান্ডাক পায়ে দিয়া ঘুরতাছে এইদিকে ধূলায় মাঠ আন্ধার হইয়া আছে।
মুহূর্তে প্যাটের ভিতর ক্যাদা ক্যাদা হইয়া গেল গা রুমালে নাক-মুখ ঢাইকাও কাম হয় না। আর জ্যাগায় জ্যাগার দেহি পুলাপানে সিগারেটে গাঞ্জা ভরতাছে। সাথে বোতল ছুড়াছুড়ি, কিছু কিছু বোতলে পানি জাতীয় সন্দেহজন কিছু ছিল। দোস্তরে কইলাম চল অনেক হইছে এ্যালা যাইগা। হ্যায় কয় অর্নবের গান না হুইন্যা যাইবো না।
একসময় আন্ধার হইয়া গেল, দোস্তের অর্নব আইলো। কিন্তু আমি গ্রামীনে বিজ্ঞাপন ছাড়া আর তেমন কিছুই দেখলাম না। যা গান হইলো, যে সাউন্ড সিস্টেম তার চাইয়া ঘরেই গান হুনা ভাল। অর্নবের গান শ্যাষ হইলে এক হাটু ধূলা লইয়্যা মাঠ থন বাইর হইয়া আইলাম। অনেক কনসার্ট দেইখ্যা ফালাইছি, অ্যালা বাড়িত যাইতে হইবো।
তয় স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী-কলাকুশলী গো সম্মান জানানোর বিষয়ডা ভাল হইছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।